১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

উজিরপুরে কার্গোভর্তি কোটি টাকার সারসহ আটক ৬

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৬:২৬ অপরাহ্ণ, ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

উজিরপুরে অবৈধ পন্থায় আসা প্রায় কোটি টাকার ইউরিয়া সার আটক করা হয়েছে। একই সাথে সিন্ডিকেট চক্রের মূলহোতাসহ ৬ জনকেও পুলিশ হেফাজতে নিয়েছে। রোববার সকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঝুমুর বালা ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম সরোয়ারসহ সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে শিকারপুর বন্দরের খানসন্স গ্র“পের রাস্তার মাথায় সন্ধ্যা নদীতে নোঙ্গর করা অবস্থায় তমাল ও তমাল-১ নামে কার্গো জাহাজ দুটি আটক করে।

আটকরা হলেন- সিন্ডিকেট চক্রের মূলহোতা শিকারপুর বন্দর ব্যবসায়ী মিন্টু খান ও কার্গো জাহাজের মাস্টার মজিবুর রহমান।

অন্যরা হলেন- শুকানী আর্শেদ আলম,  ট্রাক ড্রাইভার জসিম উদ্দিন, রানা মাহমুদ এবং দেলোয়ার হোসেন।

পুলিশ আটদের বরাত দিয়ে জানায়- মেসার্স পোটন এন্টারপ্রাইজের ইউরিয়া সার চট্টগ্রাম থেকে শিকারপুর বাফার গোডাউনে মজুদ করার জন্য পাঠানো হয়েছিল।

ট্রেড লাইসেন্স না থাকার অভিযোগে মিন্টু খানকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা প্রদান করেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ঝুমুর বালা।’

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে- মিন্টু খান, এনায়েত হোসেন খান, মন্টু সেপাই, লুৎফুর রহমান জুয়েলসহ কতিপয় ব্যক্তি বহু বছর ধরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জায়গায় অবৈধ ঘাট ও ইউনিয়ন পরিষদের রাস্তা ব্যবহার করে প্রতি বছর প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।

অবৈধ ট্রান্সপোর্টের নাম ব্যবহার করে ট্রাক প্রতি ২শত টাকা, বস্তাপ্রতি ২ টাকা হারে চাঁদা আদায় করে নিচ্ছে।
রুহুল আমিন সিকদারসহ একাধিক এলাকাবাসি জানায়- ওই স্থানে ১৯৮৩ সালে মাদারীপুর জুটমিল কর্পোরেশনের নামে শিকারপুর এলাকার গফুর সিকদার, করিম সিকদার, মজিবুর রহমান, আজিজ খানের কাছ
থেকে এ.আর হাওলাদার ৬৫ শতাংশ জমি ক্রয় করে যা সরকারের জুটমিলের নামে রেকর্ড হয়েছিল।

পরে কোম্পানির এমডি লুৎফুর রহমান ভোগ দখল করে ১৯৮৮ সালে ব্যবসা গুটিয়ে নিয়ে তাঁর শ্যালক আমিন হাওলাদারকে পাওয়ার দেন। তিনি কিছুদিন ভোগ দখল করার পরে ২০০২ সালে অবৈধ ভাবে ওই ৬৫ শতাংশ জমি মিন্টু খান, এনায়েত খান ও আশরাফ আলী খানের কাছে বিক্রি করেন।

ওই জমির ৫১ শতাংশ মূল মালিক ১৪ জন থাকা সত্ত্বেও গফুর সিকদার, করিম সিকদার, মুজিবুর রহমান তিনজনে অবৈধভাবে বিক্রি করেন। তখন থেকেই একটি সিন্ডিকেট চক্র সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে অবৈধভাবে গড়ে তোলেন বিশাল মালামাল লোড-আনলোডের ঘাঁটি।

ওই বন্দর থেকে অবৈধ পন্থায় সার, কীটনাশক, ধান, চাল, গম, কয়লা, সিমেন্ট, ইট, বালি ও পাথর পর্যন্তকোটি কোটি টাকার মালামাল সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে চলে যায়। মিন্টু খান গড়ে তোলেন বিশাল বাণিজ্যের সিন্ডিকেট। তাঁর অফিসে বিভিন্ন ডিলারের ও ট্রান্সপোর্টের ব্লাক রশিদ ব্যবহার করে মালামাল খালাস করতেন।

এ বিষয়ে উজিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম সরোয়ার জানিয়েছেন- গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ওই স্থানে গিয়ে ২টি কার্গো জাহাজ ও ২টি ট্রাক ভর্তি ইউরিয়া সারসহ ৬ জনকে আটক করি।  মাল যে গোডাউনে খালাস করার চালান দেখানো হয়েছে মূলত ওই ধরণের গোডাইন শিকারপুরে নেই। যে কারণে এই ঘটনায় একটি মামলা করার প্রস্তুতি চলছে।’’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ঝুমুর বালা জানান- ট্রেড লাইসেন্স হালনাগাদ না থাকায় মিন্টু খানকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

4 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন