১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

কর্মসংস্থানে পিছিয়ে বরিশালের নারীরা

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১০:৩৭ অপরাহ্ণ, ০৬ ডিসেম্বর ২০১৭

কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে বরিশালের নারীরা পিছিয়ে রয়েছে। দেশের অন্যান্য অঞ্চলের নারীদের তুলনায় এই বিভাগের নারীদের শ্রমবাজারে প্রবেশের সম্ভাবনা কম। বয়স, শিক্ষা এবং বৈবাহিক অবস্থা শ্রম বাজারে প্রবেশের ক্ষেত্রে নারীর সিদ্ধান্ত গ্রহণকে প্রভাবিত করে।

গ্রাম ও শহর উভয় ক্ষেত্রেই এই বিষয়গুলো সমান ভাবে প্রভাবিত করে। তবে গ্রামের তুলনায় শহরের নারীদের শ্রমবাজারে প্রবেশের সুযোগ বেশি। এছাড়া আত্মকর্মসংস্থানের চেয়ে নির্ধারিত বেতনের চাকুরির প্রতি তরুণ প্রজন্মের আগ্রহ বেশি।

সম্প্রতি বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) গবেষণায় এমন তথ্য উঠে এসেছে। বুধবার রাজধানীর লেকশোর হোটেলে আয়োজিত দুই দিনব্যাপী বিআইডিএস বার্ষিক গবেষণা সম্মেলনে ‘লেবার সাপ্লাই এন্ড ইটস চেঞ্জেস ডিউরিং ২০০৬ টু ২০১৬: ফোকাস অন জেন্ডার এন্ড রিজিওনাল ডিফারেন্স’ নামের এ গবেষণা পত্রটি প্রকাশ করা হয়। বিআইডিএসের রিসার্চ এসোসিয়েটস মো. ইকবাল হোসাইন এটির সারসংক্ষেপ তুলে ধরেন।

ওই গবেষণা পত্রটিতে বলা হয়েছে- ২০০৬ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত সময়ে কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ বেড়েছে। শ্রমবাজারে নারীর অংশগ্রহণ এখন ৩৬ শতাংশ। ২০০৬ সালে ছিল ২৯ শতাংশ। তবে শ্রমবাজারে প্রবেশের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে নারীরা এখনও স্বাধীন নন। এক্ষেত্রে তাদের বয়স, শিক্ষাগত যোগ্যতা, ভৌগোলিক অবস্থান (গ্রাম ও শহর), বৈবাহিক অবস্থা, পরিবারে নারী সদস্যের মোট সংখ্যা, বয়স্ক সদস্যের সংখ্যা ইত্যাদি বিষয় নিয়ামক হিসাবে কাজ করে।

সংস্থাটির অনুসন্ধানে দেখা গেছে- শহরে যেসব পরিবারে নারী সদস্য ও বয়স্ক সদস্যের সংখ্যা বেশি, সেসব পরিবারে নারীর কর্মসংস্থানও তুলনামূলক বেশি। শহরের মুসলিম নারীদের শ্রমবাজারে প্রবেশের সুযোগ ও সম্ভাবনা গ্রামের মুসলিম নারীদের তুলনায় বেশি। তবে গ্রাম-শহর নির্বিশেষে নারীদের কর্মসংস্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে প্রশিক্ষণ ও উচ্চশিক্ষা। গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব নারী পরিবারের প্রধান এবং তালাকপ্রাপ্ত, শ্রমবাজারে তাদের অংশগ্রহণের সম্ভাবনা অন্যদের তুলনায় অনেক বেশি।

এছাড়া প্রথম দিনে তিনটি অধিবেশনে কৃষি, শ্রমবজার এবং আর্থিক অন্তর্ভূক্তি বিষয়ে মোট ১১টি গবেষণা প্রতিবদন উপস্থাপন করেন গবেষকরা। অধিবেশনগুলোতে সভাপতিত্ব করেন ইকনোমিক রিসার্স গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক ড. সাজ্জাদ জহির, আইএলও’র সাবেক স্পেশাল অ্যাডভাইজার ড. রিজওয়ানুল ইসলাম এবং ইনস্টিটিউট অব মাইক্রোফিনান্স’র সাবেক নির্বহিী পরিচালক প্রফেসর এম. এ বাকি খলিলি।

আর্থিক অন্তর্ভূক্তি বিষয়ক গবেষণায় দেখা গেছে, আনুষ্ঠানিক ব্যাংকিং সেবা ও দারিদ্র্য বিমোচনের মধ্যে ইতিবাচক সম্পর্ক রয়েছে। ব্যাংকিং সুবিধার আওতায় আসা দারিদ্র্য বিমোচনের দ্বার খুলে দেয়।

জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ব্যাংকিং সেবা বিশ্লেষন করে বলা হয়েছে- একটি ব্যাংক এ্যাকাউন্ট থাকা মানে আয় ও সঞ্চয়কে উৎসাহীত করা। কার্যকর দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য এ সংক্রান্ত যেকোন কর্মসূচীতে ব্যাংকিং তথা আর্থিক সেবা অর্ন্তর্ভূতি নিশ্চিত করার তাগিদ দেয়া হয়েছে।

মোবাইল ফোনের ব্যবহার ও নারীরর ক্ষমতায়ন বিষয়ক এক গবেষণায় দেখা গেছে, দেশের যেসব এলাকায় এখনো বিদ্যুৎ পৌঁছেনি ও সোলার প্যানেল যাদের অবলম্বন, ওই এলাকায় মোবাইল ফোন ব্যবহার করার কারণে একটি পরিবারের ব্যবসা বেড়েছে ১০ শতাংশের মতো।

কৃষির বাইরে অকৃষি খাতে যারা ব্যবসা করছে- তাদের ব্যবসা বেশি হচ্ছে মোবাইল ফোন ব্যবহারের কল্যাণে। এ ছাড়া মোবাইল ফোন ব্যবহারের কারণে মৎস্য খাতের সঙ্গে সম্পৃক্তদের আয় বেড়েছে ৭ থেকে ১০ শতাংশ।

মোবাইল ফোন ব্যবহারের কারণে তৃণমূলে নারীর ক্ষমতায়নও বেড়েছে। গবেষণাটি চর, উপকূলীয় এলাকা, সাগর পারের মানুষ এবং নদীর পারের মানুষ এমন প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের মধ্যে দৈবচয়নের ভিত্তিতে ৫৪০ পরিবারের ওপর জরিপ পরিচালনা করে প্রতিবেদনটি করা হয়েছে।’

4 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন