২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বুধবার

কুয়াকাটায় স্ত্রীসহ শিক্ষকের ওপর হামলা, বাসায় ভাঙচুর লুটপাট

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১১:০৫ অপরাহ্ণ, ০৬ অক্টোবর ২০১৮

কুয়াকাটা খানাবাদ ডিগ্রি কলেজ প্রভাষক ও সাংস্কৃতিককর্মী শহিদুল ইসলাম শাহিনের উপর হামলা, বাড়িঘরে ভাঙচুর ও লুটপাটের প্রতিবাদে কুয়াকাটার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। শনিবার বেলা ১১টায় কুয়াকাটা খানাবাদ ডিগ্রি কলেজ সংলগ্ন সড়কে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা কলেজ তেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল রেব করেন। মিছিল শেষে কলেজের সম্মুখে সড়কে এসে ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় ছাত্র ছাত্রীরা বলেন, আমাদের শিক্ষকের ওপর ও তার বসতবাড়িতে হামলা হয়েছে, মালামাল লুট করা হয়েছে আমরা সন্ত্রাসীদের দৃষ্টান্তমূল শাস্তি চাই। দ্রুত সময়ের মধ্যে সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় না আনলে আমরা কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো। কন্নাভেজা কন্ঠে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সি.এম. সাইফুর রহমান খান বলেন, আমরা জাতীয় গড়ার কারিগররা যদি নিরাপদ বসবাস করতে না পারি তাহলে কিভাবে জাতি গঠন করবো। আমরা শিক্ষক সমাজ এই বর্বরোচিত হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। অবিলম্বে সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করার জন্য প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানাই।

তিনি আরও বলেন- আমরা শিক্ষক সমাজ আজ (শনিবার) বিকেলে কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট স্মারকলিপি পেশ করবো এবং আজ রোববার উপজেলার সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান একঘন্টার কর্মবিরতি পালন করবে। এসময় আরও বক্তব্য রাখেন, কলেজের প্রভাষক এম. জাকির হোসাইন, ফিরোজ আলম, সোহরাফ হোসাইন এবং ফরিদুর রহমান খান প্রমুখ। একই সময় লতাচাপলী ইউনিয়নের কুয়াকাটা বঙ্গবন্ধু মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ফাতেমা হাই মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মুসুল্লীয়াবাদ এ.কে মাধ্যমিক বিদ্যালয় মানববন্ধন করেছেন। মানববন্ধনে কুয়াকাটা বঙ্গবন্ধু মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খলিলুর রহমান, সহকারী শিক্ষক মাওলানা মাঈনুল ইসলাম মান্নান, নিজাম উদ্দিন, ফাতেমা হাই মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম মোস্তফা, মুসুল্লীয়াবাদ এ.কে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনোরঞ্জন গাইন বক্তব্য রাখেন।

এর আগে গত শুক্রবার বিকালে কুয়াকাটা খানাবাদ কলেজের প্রভাষক শহিদুল ইসলাম শাহিন ও তার স্ত্রী শিক্ষিকা শাহিনুর বেগমের ওপর দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা করেছে সন্ত্রাসীরা। বাড়িঘর দখলের চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট চালিয়ে নগদ ১২ লক্ষ টাকাসহ জমির দলিলপত্র লুট করে নিয়ে যায় হামলাকারীরা। মুকুলের নেতৃত্বে নাছির, নুর আলম, জাকারিয়া জাহিদসহ অর্ধশতাধিক সন্ত্রীরা দেশীয় অস্ত্র সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে হামলা চালায়। এসময় ৩টি সিসি টিভি ক্যামেরা, মনিটরসহ বসতঘরের আসবাবপত্রে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়। সন্ত্রাসীদের হামলায় গুরুতর আহত শহিদুল ইসলাম শাহীন, তার স্ত্রী শাহিনুর বেগম, বড় ভাই মিলন, বাড়ির কেয়ারটেকার ও ভাড়াটিয়াসহ ৫জন আহত হন। আহতদের মধ্যে গুরুতর অবস্থায় প্রভাষক শহিদুল ইসলাম শাহীনকে কুয়াকাটা হাসপাতালে নেয়া হয়। হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক মনিরুজ্জামান তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে প্রেরণ করেছেন। বর্তমানে তিনি বরিশাল সেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। এদিকে ঘটনার দিন রাত ৩টার দিকে প্রভাষক শহিদুল ইসলাম শাহিনের স্ত্রী শাহিনুর বেগম বাদী হয়ে মহিপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় আব্দুর রহিম মুকুলকে প্রধান আসামী করে মো. নাসির, মো. জাকারিয়া, মো. নুর আলমসহ অজ্ঞাত ৫/৬জনকে আসামী করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ এখনও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি।”

4 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন