হত্যা মামলার আসামিকে নিয়ে নিজ গাড়িতে চড়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ আয়োজিত ইফতার পার্টিতে যোগ দিলেন বরগুনা ২ আসনের এমপি শওকত হাচানুর রহমান রিমন। শনিবার (১০ জুন) সন্ধ্যায় বামনা উপজেলার আসমাতুন্নেসা পাইলট বালিকা বিদ্যালয় মিলনায়তনে এ ইফতার পার্টি অনুষ্ঠিত হয়। ওই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাংসদ রিমন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মাঝে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে- ২০১৪ সালের ৮ অক্টোবর বরগুনার বামনায় দুর্বৃত্তদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে নৃশংসভাবে খুন হন বরগুনার জেলা প্রশাসকের স্পিডবোট চালক আব্দুল জব্বার খান। এ ঘটনায় নিহতের ছেলে নেছার উদ্দিন খান বাদী হয়ে বামনা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

ওই মামলার ৮ নম্বর আসামি হিসেবে নাম রয়েছে বামনার শফিপুর গ্রামের মৃত কালাই মোল্লার ছেলে হেমায়েত মোল্লার। তদন্তপরবর্তী পুলিশ প্রতিবেদনেও অভিযুক্ত হন তিনি। সেই থেকে পলাতক ছিলেন হেমায়েত।

হত্যা মামলার আসামি সেই হেমায়েত মোল্লাকে সাথে নিয়ে নিজ গাড়িতে চড়ে গত শুক্রবার (০৯ জুন) পাথরঘাটা উপজেলা আওয়ামী লীগের ইফতার পার্টিতে এবং গত শনিবার বামনা উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত ইফতার পার্টিতে যোগ দেন বরগুনা ২ আসন (বামনা-পাথরঘাটা ও বেতাগী) আসনের সংসদ সদস্য শওকত হাচানুর রহমান রিমন।

বাংলাদেশের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও বামনা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট হারুন অর রশীদের সভাপতিত্বে এ ইফতার পার্টিতে আরও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগ সহসভাপতি মোশাররফ হোসাইন জমাদ্দার, বরগুনা জেলা পরিষদের সংরক্ষিত ওয়ার্ডের সদস্য মোসা. ফৌজিয়া খানম এবং বামনা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান গোলাম সাব্বির ফেরদৌস তালুকদার প্রমুখ।

একজন সংসদ সদস্য হয়েও হত্যা মামলার চিহ্নিত আসামিকে সাথে নিয়ে ইফতার পার্টিতে যোগদানের কারণে বামনা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যানসহ অনেক নেতাকর্মী ওই ইফতার মাহফিলে অংশগ্রহণ করেননি বলে জানা গেছে। এ ছাড়া এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।

বামনা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বামনা উপজেলা চেয়ারম্যান সাইতুল ইসলাম লিটু সাংবাদিকদের বলেন, একজন সংসদ সদস্য যখন হত্যা মামলার আসামিকে প্রশ্রয় দেন তখন রাজনীতিবিদদের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলে জনগণ। কাজটি অত্যন্ত নিন্দনীয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটা এমপি সাহেবের করা উচিত হয়নি।

এ বিষয়ে কথা বলতে শওকত হাচানুর রহমান রিমনের মুঠোফোনে বারবার যোগাযোগ করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।”