২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার

নতুন সাইবার আতঙ্ক, সুইসাইড গেম ‘মোমো’

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৬:৪১ অপরাহ্ণ, ০৬ আগস্ট ২০১৮

ব্লু হোয়েলের আতঙ্ক কাটতে না-কাটতেই হাজির হলো সতুন আতঙ্ক। ব্লু হোয়েলের মতোই এটি একটি সুইসাইড গেম, নাম ‘মোমো’। মূলত হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে গেমটি ছড়াচ্ছে।

আর্জেন্টিনায় এক কিশোরীর আত্মহত্যার পরে বিষয়টি নিয়ে আতঙ্ক ছড়ায়। কিশোরীর মৃত্যু এই গেমের কারণেই হয়েছে, এখনও চূড়ান্তভাবে তা বলা হয়নি। কিন্তু ধরন দেখে তদন্তকারীদের সন্দেহ রীতিমতো জোরালো।

তবে, গেমটি ভারত উপমহাদেশে ঢুকেছে কি-না, সে প্রশ্নের উত্তর দেওয়া কঠিন বলে জানিয়েছেন সাইবার বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের বক্তব্য, কিছু একটা না-ঘটলে এর সন্ধান পাওয়া মুশকিল। সতর্ক থাকা উচিত। সন্দেহজনক কিছু চোখে পড়লে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশে জানানো প্রয়োজন।

বুয়েনস আয়ার্স টাইমসে প্রকাশিত রিপোর্ট বলছে, কিশোরীটি মারা যাওয়ার আগে একটি ভিডিাওয় মা-বাবাকে ‘মোমো’র থেকে সাবধানে থাকতে বলে গিয়েছে। ১৮ বছরের একটি ছেলের সঙ্গে ওই কিশোরী হোয়াটসঅ্যাপে লিঙ্ক দেওয়া-নেওয়া করেছিল বলে পুলিশ জেনেছে।
পুলিশের ধারণা, চ্যালেঞ্জের অংশ হিসেবে ওই কিশোরীকে আত্মহত্যা করতে বলা হয়েছিল। হয়তো ভিডিও করে মা-বাবাকে বার্তা দেওয়ার কথাও বলা হয়। আর্জেন্টিনার কিশোরীটি সোশাল মিডিয়ায় আপলোড করার জন্যই অন্তিম ভিডিওটি বানিয়েছিল বলে তদন্তকারীদের অনুমান।
কেননা, ভিডিওয় তাকে আত্মহত্যার জন্য ‘কৃতিত্ব’ দিতে দেখা গিয়েছে ‘মোমো’কে।

শুধু দক্ষিণ আমেরিকায় গেমটি সীমাবদ্ধ নেই। ‘মোমো’র দেখা পাওয়া গেছে মেক্সিকো, আমেরিকা, ফ্রান্স, জার্মানির মতো দেশে। দেখা গিয়েছে, স্প্যানিশ বলা দেশগুলোতে ‘মোমো’ ছড়াচ্ছে দ্রুত। এ পর্যন্ত যেটুকু জানা গিয়েছে, গেমটি ছড়াতে শুরু করে ফেসবুকের মাধ্যমে। তবে এখন ছড়ানোর প্রধান মাধ্যম হোয়াটসঅ্যাপ।

‘মোমো’র লিঙ্ক খুললেই ভেসে ওঠে ভয়ংকর একটি মুখ। যাবতীয় কথাবার্তা সে-ই বলে। এই মুখ দেখে শিশুরা ভয়ে কাঁপবে, সেটা স্বাভাবিক। জানা গিয়েছে, শুরুতেই বলা হয়, হয় চ্যালেঞ্জ গ্রহণ কর, নইলে সশরীরে বাড়ি এসে অভিশাপ দেওয়া হবে। করা হবে খুনও। হাজির হবে ভয়াল চেহারার কেউ।

প্রথমে বলা হয়, যে ভয়াল চেহারাটি ভেসে উঠছে, তা জাপানি শিল্পী মিদোরি হায়াশির একটি শিল্পকর্ম থেকে নেওয়া।

যদিও ওই শিল্পী তাঁর ফেসবুক পেজে লিখেছেন, ‘মোমো পাখি’ তাঁর শিল্পকর্ম নয়।

একটি সূত্রের বক্তব্য, লিঙ্ক ফ্যাক্টরি নামে জাপানের একটি স্পেশাল ইফেক্ট সংস্থা ‘মোমো’ নামে একটি পাখি তৈরি করে। সেই পাখির ভয়াল চেহারাটিই নেওয়া হয়েছে। যদিও সেই সংস্থার সঙ্গে ‘মোমো’ গেমের কোনো যোগসূত্র নেই।

তদন্তকারীরা জেনেছেন, একাধিক নম্বর থেকে লিঙ্ক পাঠানো হচ্ছে। আর্জেন্টিনার এক বাবা পুলিশকে জানিয়েছেন, তাঁর মেয়েকে ক্ষতবিক্ষত একটি শিশুর মৃতদেহের ছবি পাঠিয়ে বলা হয়েছে, চ্যালেঞ্জ গ্রহণ না-করলে তাঁর পরিবারের সকলের এই হাল হবে।

পুলিশের বক্তব্য, এই মুহূর্তে সতর্কতাই একমাত্র রাস্তা। অভিভাবকদের মোবাইল নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে। দেখতে হবে, সন্তানরা কী গেম খেলছে। ‘মোমো’র ধরন এমন যে, শিশু ভয় পেয়ে যাবে। অস্বাভাবিক আচরণ দেখলেই সতর্ক হতে হবে, কথা বলতে হবে সন্তানের সঙ্গে। সে রকম কিছু পেলে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে জানাতে হবে।

9 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন