২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার

পটুয়াখালীর জেলে পল্লীতে হতাশা, সমুদ্রে মিলছে না ইলিশ

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১২:৩৫ অপরাহ্ণ, ২৯ জুলাই ২০১৮

দেশে প্রতিবছর ইলিশের উৎপাদন বাড়লেও ঠিক কোন সময়টাতে ঝাঁকে ঝাঁকে রুপালি ইলিশ জালে ধরা পড়বে তা এখন আর নির্ধারিত থাকছে না। এরফলে জেলেরা সাগরে গেলেও অধিকাংশ সময় খালি হাতেই ফিরতে হচ্ছে তাদের।

তবে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে জেলেদের মাছ আহরণের সময় যেমন পরিবর্তিত হচ্ছে তেমনি প্রকৃতিক দুর্যোগ বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলেরা মাছ আহরণ করতে গিয়ে ঝুঁকির মুখে পড়ছেন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

পটুয়াখালী জেলা মৎস্য বিভাগের তথ্যমতে- ২০১৪-২০১৫ অর্থবছরে জেলায় ইলিশের উৎপাদন ছিল ২৮ হাজার মেট্রিক টন, ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরে ৩২ হাজার ৭৫০ মেট্রিক টন এবং ২০১৬-২০১৭ অর্থ বছরে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৪৩ হাজার ২৮৯ মেট্রিক টনে।

প্রতি বছর ইলিশের এই উৎপাদন বাড়লেও বছরের ঠিক কোন সময়ে জেলেদের জালে রুপালি ইলিশ ধড়া পড়বে তা নিয়ে শঙ্কায় জেলে ও মৎস্য গবেষকরা। বিগত বছরগুলোতে জুনের শুরু থেকেই জেলেদের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধড়া পড়লেও এ বছর জেলেরা সাগর থেকে খালি হাতে ফিরে আসছেন।

সমুদ্র সৈকত কুয়াকাটার তীর ধরে দক্ষিণে কিছুদূর এগুতেই দেখা মিললো পঞ্চাশোর্ধ আবদুস সত্তারের। কিশোর বয়স থেকেই জাল আর সাগরের সঙ্গে সখ্যতা তার। এ পেশার ওপর নির্ভর করেই চলে সংসার।

আবদুস সত্তার বলেন, ইলিশের মৌসুম চলছে। তিনটি ‘খ্যাপে’ গিয়ে খালি হাতে ফিরেছি। তবে হাল ছাড়ার সুযোগ নেই। কারণ সাগরেই তাদের জীবন-জীবিকা।

কুয়াকাটা মৎস বন্দর আলীপুরে জাল আর নৌকা নিয়ে অলস সময় পার করছেন পাচঁ জেলে। তাদের মধ্যে একজন জাকির মাঝি। তিনি জানান- গত বুধবার তার জাল ও নৌকার সঙ্গে আরো ১০ জন জেলে সাগরে ছিলেন। ঝড়ো আবহাওয়া ও মাছ না পাওয়ায় শুক্রবার চলে আসেন তারা। এ কয়েক দিনে ট্রলারের তেল, বাজার সদায়সহ বিভিন্ন খরচ দিয়ে প্রায় ৪ লাখ টাকা লোকশান হয়েছে। তবে কোথাও ভর্তুকি দিয়ে সামান্য কিছু ইলিশ পেলেও মাছের আড়তগুলো অনেকটা শূন্য। তাই শুধু জেলে নয়, মোকামে মাছ সরবরাহ না থাকায় হতাশ ব্যবসায়ীরাও।

স্থানীয় জেলেরা জানান- প্রতিবছর ইলিশ ধরার মৌসুম জ্যৈষ্ঠ মাসের শুরু থেকে কার্তিকের শেষ পর্যন্ত। তবে এরমধ্যে আষাঢ়-শ্রাবণ দুই মাস ইলিশের ভরা মৌসুম চলে। বঙ্গোপসাগর, বাউফলের চন্দ্রদীপ, রাঙ্গাবালী উপজেলার রাঙ্গাবালী, আগুনমুখা, বুড়াগৌরাঙ্গ, দারচিরা ও রামনাবাদ নদীতে জাল ফেলে আশানুরূপ ইলিশ পাচ্ছে না। অথচ এই সময়ে জেলেদের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়ার কথা।

এ ব্যাপারে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. ইকবাল হোসেন বলেন- ইলিশের উৎপাদনের সঙ্গে সঙ্গে ইলিশ ধরার সময়ের পরিবর্তন এখন দৃশ্যমান। তবে আগস্টের মাঝামাঝি কিংবা শেষ দিকে জেলেদের জালে ইলিশের দেখা মিলতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।’

6 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন