২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

পটুয়াখালীর পায়রা বন্দরে নিরাপত্তা নিশ্চিতে মহাপরিকল্পনা

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৮:২৩ অপরাহ্ণ, ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৮

নিরাপত্তা বাড়ানো হচ্ছে পটুয়াখালীর পায়রা বন্দরের। এজন্য পরিবর্তন করা হচ্ছে পটুয়াখালী জেলা পুলিশের সাংগঠনিক কাঠামো। এরই মধ্যে জনপ্রশাসন ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের পর গত ৯ সেপ্টেম্বর অতিরিক্ত ১৯৬ জনবলসহ ১৪টি যানবাহন বাড়ানোর অনুমোদন দিয়েছে প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটি।

এমতাবস্থায় নিশ্চিত হওয়া গেছে- শিগগিরই পটুয়াখালী জেলা পুলিশে নতুন করে জনবল পদায়ন শুরু করা হবে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে- পায়রা বন্দর এলাকার নিরাপত্তার লক্ষে পটুয়াখালী জেলা পুলিশের সাংগঠনিক কাঠামোতে বিভিন্ন পদবীর ৪০০ পদ সৃষ্টি ও ২০টি যানবাহন দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়ে পুলিশ সদর দফতর থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়। এরপর ৩৫০টি পদ সৃষ্টি ও ২০টি যানবাহন দিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানিয়ে চিঠি পাঠায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এরপর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে ২০০ পদ সৃষ্টি ও ১৪টি যানবাহন দেওয়ার সম্মতি দেওয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় অর্থ বিভাগের ব্যয় নিয়ন্ত্রণ অনুবিভাগ ১৯৬টি পদ সৃষ্টি ও ১৪টি যানবাহন টিওএন্ডইভুক্তকরণে সম্মতি দেয়।

জনবলের অর্গানোগ্রাম হচ্ছে- সহকারী পুলিশ সুপার একজন, ইন্সপেক্টর চার জন, সাব ইন্সপেক্টর (এসআই) আট জন, সার্জেন্ট চার জন, এএসআই (নিরস্ত্র) ১০ জন, এএসআই (সশস্ত্র) ১৫ জন, কনস্টেবল ১৪৭ জন, সাঁট মুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটর একজন, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক দুই জন, বাবুর্চি দুই জন (আউটসোর্সিং) এবং পরিচ্ছন্নতাকর্মী দুই জন (আউটসোর্সিং)। আর যানবাহনের মধ্যে রয়েছে একটি জিপ, ডাবল কেবিন পিকআপ দুইটি, মাইক্রোবাস একটি ও মোটরসাইকেল ১০টি।

পুলিশ সদর দফতর সূত্রে জানা গেছে- পায়রা বন্দরের নিরাপত্তার জন্য পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া থানার পায়রা বন্দর এলাকার নিরাপত্তা বাড়াতে পটুয়াখালী জেলার পুলিশের সাংগঠনিক কাঠামো পরিবর্তন ও পরিবর্ধনের জন্য ২০১৬ সালের জুলাইতে একটি চিঠি পাঠানো হয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। ওই চিঠিতে বলা হয়- পায়রা বন্দরের নিজস্ব বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণসহ অন্যান্য বৈদ্যুতিক চাহিদা মেটানোর লক্ষে কয়লা ভিত্তিক একাধিক পাওয়ার প্ল্যান্ট তৈরির কাজ চলমান রয়েছে। এরমধ্যে চীন-বাংলাদেশ যৌথ উদ্যোগে একটি এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন প্ল্যান্ট, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে ৫ হাজার মেগাওয়াট ও বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর তত্ত্বাবধানে এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন প্ল্যান্ট রয়েছে। এছাড়াও এলাকাটিকে ‘এক্সক্লুসিভ ইকোনমিক জোন’ হিসেবে প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ন্যূনতম পরিবহন ব্যয়ে আমদানি-রফতানির সুবিধা গ্রহণের লক্ষে দুই হাজার একর জমিও নির্ধারণ করা আছে।

ওই চিঠিতে আরও বলা হয়েছে- পায়রা বন্দরের সন্নিকটে পরিবেশ বান্ধব জাহাজ নির্মাণ ও মেরামত শিল্প, কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প স্থাপন, প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল নির্মাণ, নেভাল একাডেমি এবং বিমানবন্দর স্থাপন করার পরিকল্পনা রয়েছে। ওয়েল রিফাইনারি শিল্প, তৈরি পোশাক শিল্প ছাড়াও এক্সক্লুসিভ ইকোনমিক জোন স্থাপন, পায়রা বন্দর থেকে ঢাকা পর্যন্ত রেলওয়ে যোগাযোগ স্থাপন, পোর্ট সিটি স্থাপন এবং পর্যটন শিল্প উন্নয়নসহ বন্দর নগরী করার লক্ষ্যে বিভিন্ন বিভাগের জন্য জায়গা অধিগ্রহণ করে পায়রা বন্দরকে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক কেন্দ্রে পরিণত করার পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়া ট্রানজিট সুবিধার আওতায় নেপাল, ভুটান ও ভারত এই বন্দর ব্যবহার করতে পারে। পায়রা বন্দর ঘিরে প্রস্তাবিত এই বিশাল কর্মযজ্ঞ শুরু হলে পটুয়াখালী জেলার বিদ্যমান পুলিশের পক্ষে এর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা খুবই কষ্টকর হবে। সেজন্যই পটুয়াখালী জেলা পুলিশের সাংগঠনিক কাঠামোতে পরিবর্ধন করা জরুরি।

পায়রা বন্দরের নিরাপত্তা বাড়াতে পটুয়াখালী জেলা পুলিশের সাংগঠনিক কাঠামোতে কী ধরনের পরিবর্তন আনা হচ্ছে জানতে চাইলে পুলিশ সদর দফতরের জনসংযোগ শাখার এআইজি মো. সোহেল রানা সাংবাদিকদের বলেন, ‘আলাদা কোনও ইউনিট কিংবা থানা হচ্ছে না। তবে পায়রা বন্দরকেন্দ্রিক যে কর্মযজ্ঞ শুরু হচ্ছে, সেজন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে পুলিশের একটি বিশেষ আয়োজন থাকবে। তাই আগে থেকে প্রস্তুতি নিয়ে রাখছে পুলিশ।’

1 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন