১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

পটুয়াখালীর শিক্ষক থাকেন রাজধানীতে, স্বাক্ষর করেন অন্যজন!

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০২:১১ অপরাহ্ণ, ১৭ অক্টোবর ২০১৮

পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার নতুনপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোসা. আমেনা বেগম ৬ মাস ধরে অনুপস্থিত। তবে হাজিরা খাতায় তাঁর নিয়মিত স্বাক্ষর রয়েছে।

স্থানীয়রা জানিয়েছে- আমেনা মাতৃত্বকালীন ছুটিতে ছিলেন দীর্ঘদিন। চলতি বছরের এপ্রিলে তাঁর সেই ছুটি শেষ হয়। মাতৃত্বকালীন ছুটির পর আরও প্রায় ৬ মাস তিনি বিদ্যালয়ে আসেন না। হাজিরা খাতায় স্বাক্ষরের কারণে তাঁর নিয়মিত বেতন-ভাতা তুলতে কোনো সমস্যা হয় না। গত এপ্রিল থেকে ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শিক্ষক হাজিরা খাতায় নিয়মিত উপস্থিতি তাঁর। আমেনা কখনো ঢাকায়, কখনো এলাকায় অবস্থান করলেও বিদ্যালয়ে আসেন না। গ্রামের সবাই বিষয়টি জানলেও পরিবার প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ তাঁর বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কথা বলে না।

প্রতিষ্ঠানের সহকারী শিক্ষক মো. ইব্রাহীম বলেন- ‘আমেনা বেগম ৬ মাসের মাতৃত্বকালীন ছুটি নিয়েছিলেন, তা শেষ হয়েছে আরও আগে। তিনি ক্লাস করতে আসছিলেন, কিন্তু তাঁর বাচ্চা অসুস্থ হওয়ায় এখন আসছেন না। ছুটি নিয়েছেন কি না, আমি জানি না।’

কয়েকজন শিক্ষার্থী নাম গোপন রাখার শর্তে বলে- ‘আমেনা আপা স্কুলে আসেন না। শুনেছি তিনি ঢাকায় থাকেন।’

অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক আমেনা বেগমের সঙ্গে কথা বলতে মোবাইলে কল করলে তিনি রিসিভ করে মাছুম নামের এক ব্যক্তির কাছে তুলে দেন। তাঁর স্বামী পরিচয়ে মাছুম বলেন, ‘আমার স্ত্রী শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকায় দুই-আড়াই মাস ধরে ঢাকায় অবস্থান করছেন।’ বর্তমানে ছুটিতে আছেন কি না এবং হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেন কিভাবে—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সেটা আপনার জানার বিষয় নয়।’ এরপর কোনো প্রশ্ন করার আগেই তিনি সংযোগ কেটে দেন।

প্রধান শিক্ষক বাদল কৃষ্ণ বিশ্বাস বলেন- ‘আমার কিছু জানা নেই। হাজিরা খাতায় অন্য একজন স্বাক্ষর করেন।’ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মো. আনছার উদ্দিন হাওলাদার বলেন, ‘তার ছুটি কয়েক দিন আগে শেষ হয়েছে।’

কলাপাড়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জালাল আহম্মেদ বলেন- ‘আমেনা বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত—এ বিষয়ে আমার জানা নেই।’

পটুয়াখালী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমি সরেজমিনে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।’

3 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন