১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

পানি থৈ থৈ মিলছে না ইলিশ!

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৬:১৭ অপরাহ্ণ, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮

গভীর সমুদ্রে থৈ থৈ করছে পানি, কিন্তু দেখা মিলছে না ইলিশের। কয়েক ঘণ্টা পর পর জাল টানলেও মাছের দেখা নেই। ভরা মৌসুম হলেও জেলেদের জালে আশানুরূপ ইলিশ মিলছে না। ফলে মনে কষ্ট নিয়েই ঘাটে ফিরছেন জেলেরা। গভীর সমুদ্র থেকে ফিরে এমন তথ্য জানিয়েছেন তারা।

উপকূলীয় উপজেলা বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলায় প্রায় ৮০ ভাগ মানুষই মৎস্য আহরণ করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। সরকারি হিসাবে এ উপজেলায় নিবন্ধিত জেলে রয়েছে প্রায় ১৪ হাজার।

এছাড়াও নিবন্ধনের বাইরের জেলে রয়েছে প্রায় ২০ হাজারেরও বেশি। ভরা মৌসুমে সাগরে আশানুরূপ মাছ না পাওয়ায় আর্থিক সংকটের মুখে পড়েছে এই উপজেলার প্রায় ৩৪ হাজার জেলে পরিবার। ইলিশ শূন্যতায় হাহাকার চলছে উপজেলার জেলে পল্লিগুলোতে। অভাব অনটন আর চরম হতাশার মধ্যে দিনাতিপাত করছে এসব জেলে পরিবার। এনজিওর লোন আর মহাজনের দাদনের টাকা পরিশোধের ভাবনায় জেলে পরিবারে নেমে এসেছে হতাশা।

ইলিশকে ঘিরেই এখানকার জেলে এবং আড়তদারদের জীবন ও জীবিকার চাকা ঘুরছে। বছরের জ্যৈষ্ঠ মাস ইলিশের ভরা মৌসুম বলেই জানান জেলেরা। এ মাস শুরু হলেই উপকুলের নদীগুলো ও বঙ্গোপসাগরে জেলেদের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ওঠার কথা। সেই হিসেবে ইলিশ মৌসুম প্রায় শেষের দিকে হলেও বিষখালী, বলেশ্বর ও পায়রা নদীসহ বঙ্গোপসাগরে আশানুরূপ দেখা মিলছে না ইলিশের।

জেলে রিপন, মনির, হানিফা, কালাম খান, বেল্লাল, সিদ্দিক মল্লিকসহ আরো অনেকে জানান, জ্যৈষ্ঠ থেকে ইলিশের ভরা মৌসুম। কিন্তু মৌসুমের তিন মাস পেরিয়ে গেলেও জালে ধরা পড়ছে না ইলিশ।

সারাদিন জাল বেয়ে খরচের টাকা উঠছে না। নদীতে জাল ফেলে ফিরতে হচ্ছে খালি হাতে। তাদের মতো অনেকেই এনজিও ও বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ইলিশ বিক্রি করে ঋণ পরিশোধ করবে ভাবছিলেন, কিন্তু ইলিশ না পাওয়ায় ঋণ শোধ করতে পারছেন না।

ঘাটে ট্রলার ভিড়লেও দেখা নেই ইলিশের। দ্বিতীয় মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র পাথরঘাটা বিএফডিসি মৎস্য ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, ঘাটে ট্রলারগুলো নোঙর করা। জেলেরা ও বিএফডিসি ঘাটের শ্রমিকরা অলস সময় কাটাচ্ছেন। যে ঘাটে প্রতি বছর এসময় শ্রমিকরা বসে থাকার সুযোগ পেতেন না। যে ঘাটে সারিবদ্ধভাবে মাছ নামানোর জন্য অপেক্ষায় থাকতো অসংখ্য ট্রলার। বর্তমানে সে ঘাটে ইলিশের দেখা নেই। এ সময়ে যে পরিমাণ ইলিশ পাওয়ার কথা তার ১০ ভাগের এক ভাগও ইলিশ কেনা-বেচা নেই। ফলে আড়তে অলস সময় পার করছেন আড়তদাররাও।

বিএফডিসি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম, শহিদ মোল্লা, শাহিন জানান, প্রতি বছর এ সময় ঘাটে ইলিশ বোঝাই ট্রলার আসত। এবছর তেমন ইলিশের দেখা নেই বললেই চলে।

পাথরঘাটা বিএফডিসি ব্যবস্থাপক লেফটেন্যান্ট এম রুহুল আমিন জানান, গত বছরের তুলনায় এবছর ইলিশসহ অনান্য মাছ খুব কম। গত এক সপ্তাহে ১৭৩ টন ইলিশ বিক্রি হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় কয়েকগুন কম।

এ ব্যাপারে পাথরঘাটা উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা এসএম আজহারুল ইসলাম বলেন, ইলিশ মিঠা পানির মাছ, এবছর বৃষ্টি কম হওয়ায় মিঠা পানি না পাওয়ায় ইলিশ কম হতে পারে।

5 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন