২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

পিকআপ আটকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ফাঁড়ি পুলিশের চাঁদাবাজি!

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৩:৩০ অপরাহ্ণ, ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৮

যানবাহনে অভিযান করে বরিশাল বিশ^বিদ্যালয় ফাঁড়ি পুলিশের ইনচার্জ আসাদুল হক কত টাকা হাতিয়েছেন এ নিয়ে প্রায়শই কানাঘুষা শোনা যায়। কিন্তু ঘটনাচক্রে বিষয়টি ফাঁস হয়ে যাওয়ায় একজন পুলিশ কর্মকর্তা কতটা নীতি নৈতিকতা বিরোধী অবস্থান রাখতে পারেন তারও একটি জ¦লন্ত উদাহরণ সৃষ্টি করলেন তিনি। এবার একটি পত্রিকার বৈধতা নিয়ে চ্যলেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে সৃষ্টি করলেন নতুন একটি বিতর্ক। এমনকি সাংবাদিকদের নিয়েও ‘খিস্তিখেউর’ করার দুসাহস দেখিয়েছেন।

সাম্প্রতিকালে যানবাহনে অভিযানের নামে চাঁদা তোলার একটি ঘটনা প্রকাশ পেলে বিষয়টির সত্যতা জানতে গিয়ে উপ-পরিদর্শক (এসআই) আসাদুলের এমন অসাদাচরণ প্রত্যক্ষ হয়েছে। এক্ষেত্রে আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে- সাংবাদকর্মীর নানামুখী প্রশ্নে এই পুলিশ কর্মকর্তা তালগোল পাকিয়ে ফেলে সংশ্লিষ্ট বরিশাল মেট্রোপলিটন বন্দর থানার ওসি ও বকশির সাথে সু-সম্পর্ক থাকার বিষয়টিও প্রকাশ করেন। মুঠোফোন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার পর অপরাপর পুলিশ সদস্যদের মধ্যে হাসি ঠাট্টায় নিজের অবস্থান জানান দিয়ে দম্ভোক্তি করে বলেন- পুরো বিষয়টি ওসি স্যার ও বকশি অবগত।

সুতরাং কাউকে থোরাও কেয়ার করার সময় নেই। কারণ আমি ওসির খাস লোক! এই তথ্য ফাঁড়ি পুলিশের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত করেছে।

সূত্রমতে সাম্প্রতিকালে শিক্ষার্থী আন্দোলনের পর সারাদেশে যানবাহনে সাড়াশি অভিযান শুরু হলে বরিশাল বিশ^বিদ্যালয় ফাঁড়ি পুলিশকেও এই অভিযানে অংশ নেয়ার দায়িত্ব দেয়া হয়। কিন্তু ফাঁড়ি ইনচার্জ আসাদুল যানবাহনে অভিযানের নামে শুরু করেন বোপরোয়া চাঁদাবাজি। সর্বশেষ গত শুক্রবার সন্ধ্যারাতে তিনি বিশ^বিদ্যালয় সম্মুখ থেকে গ্যাসভর্তি একটি পিকআপ আটক করেন। ওই সময় পিকআপ চালক শাওন গাড়িটির বৈধ কাগজ প্রদর্শনে ব্যর্থ হন। কিন্তু ফাঁড়ি পুলিশ গাড়িটির বিরুদ্ধে আইনানুগ কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করে আটকে রাখে।

অথচ ওই সময় পিকআপ মালিক নুর হোসাইনের অনুরোধ ছিল যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নিয়ে গাড়িটি যেন ছেড়ে দেয়া হয়। কিন্তু কে শোনে কার কথা। এসআই আসাদুল কোন শর্তেই গাড়িটি ছাড়ছিলেন না। গভীর রাত পর্যন্ত গাড়িটি আটকে রেখে একপর্যায়ে সমঝোতার প্রস্তাব দিয়ে শুরু করেন রফাদফা। অবশ্য সেই রাতেই সন্ধিচুক্তি করে মালিক নুর হোসেনের কাছ থেকে আড়াই হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়ে পিকআপটি ছেড়ে দেন এসআই আসাদুল। এই পুরো রফাদফার একটি ফোনআলাপ এ প্রতিবেদকরে হাতে এসেছে। মূলত সেই সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য নিতে গেলেই সংবাদকর্মীর ওপর চড়াও হন এসআই আসাদুল। একপর্যায়ে রেগে গিয়ে তিনি পত্রিকার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করলেন।

অভিযোগ রয়েছে- এই আসাদুল প্রতিদিন অর্ধশত যানবাহনের কাগজপত্র জাচাই বাচাই করেন। কিন্তু অধিকাংশ গড়ির বৈধ কাগজপত্র না থাকলেও অর্থ সমঝোতার ভিত্তিতে ছেড়ে দেন তিনি। এই বিষয়টি নিয়ে খোদ ফাড়ি পুলিশের অপরাপর সদস্যদের মধ্যেও রয়েছে বিরোধ। কিন্তু পদমর্যাদায় আসাদুল বড় কর্মকর্তা হওয়ায় কেউ মুখ খোলার সাহস নেয়নি বা নিচ্ছে না। অনেকে আবার অনৈতিক সুবিধা নিতে তার তোয়াজে ব্যস্ত থাকেন। ফলে বিষয়টি ফাঁড়ি বা থানা পুলিশেই সীমাবদ্ধ থাকছে।

এমতাবস্থায় ফাঁড়ি পুলিশের যানবাহনে অভিযান কার্যক্রম নিয়ে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে যানবাহন মালিকরা।

এই বিষয়টি সম্পর্কে জানতে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফা হায়দারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি থানায় গিয়ে আলাপের পরামর্শ দেন।

তবে বকশি ফাইজুল জানিয়েছেন- ওসির নির্দেশে ফাঁড়ি ইনচার্জকে সরিয়ে আনার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।’

1 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন