১৮ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার

পিরোজপুরের টগড়া ফেরিঘাটে গ্যাংওয়ে ডুবে ভোগান্তি

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০১:৪৯ অপরাহ্ণ, ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৮

পিরোজপুরের ইন্দুরকানীতে কঁচা নদীর ভরা জোয়ারের পানিতে টগড়া ফেরিঘাটের গ্যাংওয়ে ডুবে যাওয়ায় গাড়ি ওঠানামাসহ যাত্রী সাধারণ চলাচলে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, বাগেরহাট, যশোর, রাজশাহী, বেনাপোল, বরগুনা, বরিশালসহ দক্ষিণ অঞ্চলের বিভিন্ন রুটে প্রতিদিন শত শত গাড়ি টগড়া ফেরি পার হয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকায় চলাচল করে।

এ ছাড়া পিরোজপুর জেলা শহরের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য ভান্ডারিয়া, মঠবাড়িয়া, কাঠালিয়া ও পাথরঘাটা উপজেলার বাসিন্দাদের জোগাযোগের একমাত্র পথ এটি। এই ঘাট থেকে দৈনিক হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রীসহ সাধারণ যাত্রী চলাচল করে। বঙ্গোপসাগর থেকে জেলেদের আহরিত ইলিশসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম পাথরঘাটা মৎস্য বন্দর থেকে নিয়মিত শত শত মাছের ট্রাক খুলনা, যশোর, বেনাপোল, ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে যাওয়া-আসা করে এই ফেরি ঘাটটি পার হয়ে। শুকনো মৌসুমে তেমন কোনো ভোগান্তি দেখা না দিলেও বর্ষার ক’মাস নদীতে পানির চাপ বেশি থাকায় ভরা জোয়ারের সময় ঘাটটির গ্যাংওয়ে তলিয়ে যায়। আর এ কারণে ঝুঁকি নিয়ে ফেরিতে উঠানামা করতে হয় যানবাহনগুলোকে। এতে প্রায়ই ছোট খাটো দুর্ঘটনা ঘটছে।

এ ছাড়া ফেরিঘাটের পল্টুনের গ্যাংওয়ে পানির চাপে বেশি তলিয়ে গেলে অনেক সময় মালবাহী এবং যাত্রীবাহী বাসগুলোকে যাত্রী নামিয়ে দঁড়ি দিয়ে টেনে তুলতে হয়। এ সময়ে গাড়ি গর্তে আটকে গেলে যাত্রীদের ভোগান্তির পাশাপাশি মূল্যবান সময় নষ্ট হয়। শুধু তাই নয়, ফেরি পার হওয়া সাধারণ যাত্রীদের রাস্তায় উঠতে গেলে বাধ্য হয়ে পানিতে ভিজে যাওয়ার কারণে পড়নের কাপড়-চোপড় নষ্ট করতে হয়।

ঘাটটি সংস্কারের অভাব, জোয়ারের স্রোত এবং নদী ভাঙনের টেকসই প্রতিরোধ ব্যবস্থা না থাকার কারনে এই দুর্ভোগ সৃষ্টি বলে মনে করেন ভুক্তভোগীরা।

সরেজমিনে গেলে অভ্যন্তরীণ রুটের বাস ড্রাইভার মনির হোসেন জানান- যাত্রীদের ঘাট থেকে রিকশা নিয়ে রাস্তায় উঠতে হয়। কোনো রকম অশতর্কতা দেখা দিলেই দুর্ঘটনার শিকার হতে হয়। অনেক সময় জোয়ারের পানি বেশি থাকায় ইঞ্জিনে পানি ঢুকে বড় ধরনের যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। এ ছাড়া বাসের ভেতর অনেক সময় পানি ঢুকে পড়ে।

পাথরঘাটা থেকে মাছ নিয়ে আসা পিকআপ ড্রাইভার আলম জানান- জোয়ারের সময় আমরা পিক আপ পারাপার করতে পারি না। পানি না কমা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। কারণ জোয়ারের পানিতে গাড়ি প্রায় অর্ধেক ডুবে যাওয়ার মতো অবস্থা হয়।

পথচারী মাদরাসা ছাত্র আরিফ ও তরিকুল ইসলাম জানান- আমরা চরখালী থেকে টগড়া মাদরাসায় আসলে ফেরিঘাটের গ্যাংওয়ে পানিতে তলিয়ে থাকায় অনেক সময় নৌকা অথবা রেলিংয়ের ওপর দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে ভিজে আসতে হয়।

এখানে প্রায়ই দুর্ঘটনা হয় আর এটা একটি চলমান সমস্যা। সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়ে স্কুল-মাদরাসার ছাত্র-ছাত্রী ও পথযাত্রী নারীরা।

এ বিষয় ইন্দুরকানী উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাজীব আহমেদ জানান, এই ঘাটটি দক্ষিণ অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগের মাধ্যম। জোয়ারের পানি ওঠায় ঘাটটি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। যাত্রী সাধারণ ও গাড়ি ওঠানামার জন্য ঘাটটি দ্রুত সংস্কার প্রয়োজন।

পিরোজপুর সড়ক ও জনপদ বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী ফকরুল ইসলাম এ বিষয়ে বলেন- টগড়া ফেরিঘাটের গ্যাংওয়ে নিচু হওয়ায় ভরা জোয়ারের সময় নদীতে পানির চাপ বেড়ে যাওয়ায় এ দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়। মাঝে মধ্যে ইটের খোয়া ফেলে নিচু জায়গা উচু করা হচ্ছে। তবে এ সমস্যা উত্তরণের জন্য আমাদের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।’

3 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন