২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বুধবার

পুরো রমজানজুড়ে বরিশালে বৃষ্টির আভাস

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০২:১৫ অপরাহ্ণ, ১৭ মে ২০১৮

বৈশাখের চিরচেনা রূপটা প্রায় চোখেই পড়েনি। ছিল না সূর্যের তেজ। বয়ে যায়নি দাবদাহ। পুরো বৈশাখ যেন বর্ষার রূপ ধরেছিল। সকাল-দুপুর, বিকেল-সন্ধ্যা, এমনকি রাতেও বয়ে গেছে কালবৈশাখীর ঝাপটা। সঙ্গে ছিল ভারী বৃষ্টি।

এপ্রিলে বৃষ্টি হয়েছে স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে ৩৬ দশমিক ৭ শতাংশ বেশি। ২০১৭ সালের এপ্রিলে বৃষ্টি হয় স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে ১০৬ দশমিক ২ শতাংশ বেশি। এখনো চলছে ঝড়-বৃষ্টির দাপট।

কাল থেকে শুরু রমজান মাস। পুরো জ্যৈষ্ঠ মাস, খ্রিষ্টীয় বর্ষের হিসাবে, মে মাসে ১৪ দিন এবং জুন মাসের ১৫ অথবা ১৬ দিন থাকবে রমজান মাস। দিনের ব্যাপ্তি বেশি হওয়ায় ২০১৭ সালের মতো এবারও প্রতিদিন দীর্ঘ ১৫ ঘণ্টার বেশি সময় রোজা রাখতে হবে। রমজান মাসে কেমন থাকবে আবহাওয়া। প্রকৃতির আচরণইবা কেমন হবে?

এর উত্তরে আবহাওয়াবিদেরা জানান, এবারের রমজান মাসে থাকবে বৃষ্টির প্রভাব। টানা বৃষ্টি হলে তাপমাত্রা কমে আসবে। এ জন্য তাপমাত্রা কমে যেতে পারে। এতে রমজান মাসে রোজাদারদের স্বস্তি মিলতে পারে।

এবারের রমজান মাসের শুরু থেকে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, মে মাসে এখনো স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হয়েছে। ১৪ ও ১৫ মে বৃষ্টির মাত্রা কিছুটা কম ছিল। তবে দুই-তিন দিন শুষ্ক ভাব থাকলেও ১৬ মের পর থেকে আবারও বৃষ্টির মাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে।

জুন মাসের পূর্বাভাসে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, জুন মাসের প্রথমার্ধে সারা দেশে মৌসুমি বায়ুর বিস্তার ঘটতে পারে। স্বাভাবিক বৃষ্টি হলেও দু-একটি নিম্নচাপ বয়ে যেতে পারে।

যে কারণে তাপমাত্রা কমতে পারে
বাংলাদেশে বর্ষাকাল শুরু হয় জুন মাসে, শেষ হয় সেপ্টেম্বর মাসে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এই চার মাসে বাংলাদেশে বছরের মোট বৃষ্টিপাতের ৭১ শতাংশ বৃষ্টি হয়ে থাকে। এই চার মাসের মধ্যে বেশি হয় জুলাই মাসে। ৩০ বছরের গড় হিসাবে এই মাসে বৃষ্টি হয় ৫২৩ মিলিমিটার। এরপর বর্ষাকালে বেশি বৃষ্টি হয় জুনে—৪৫৯ দশমিক ৪ মিলিমিটার। এ ছাড়া আগস্টে ৪২০ দশমিক ৪ এবং সেপ্টেম্বরে গড় বৃষ্টির মাত্রা ৩১৮ দশমিক ২ মিলিমিটার। এ বছর জুন মাসে স্বাভাবিক বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। তবে এর মাত্রা ৪৩৫ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ৫৩০ মিলিমিটার হতে পারে বলে জানিয়েছে তারা। আবহাওয়া অধিদপ্তরের ৪৩টি পর্যবেক্ষণকেন্দ্রের মধ্যে ২০০১ সালের ১৪ জুন সন্দ্বীপে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছিল। ওই দিন ৫৯০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছিল।

বর্ষায় বৃষ্টির কারণ
বাংলাদেশ ও আশপাশের এলাকায় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে বর্ষাকালে বৃষ্টি হয়ে থাকে। সাধারণত জুন মাসের প্রথম দিকে মৌসুমি বায়ু এ দেশে চলে আসে। আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা জানান, মৌসুমি বায়ু বঙ্গোপসাগরের জলরাশি থেকে প্রচুর পরিমাণে জলীয় বাষ্প বয়ে নিয়ে আসে। মৌসুমি বায়ু থেকে মেঘমালার সৃষ্টি হয়। এই মেঘমালার কারণে বাংলাদেশে বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে বর্ষাকালে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দক্ষিণ, দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর থেকে সৃষ্ট মৌসুমি বায়ু উত্তর-পূর্ব দিকে গিয়ে মিয়ানমার ও বাংলাদেশের টেকনাফের পাহাড়ি অঞ্চলে বাধা পায়। বাধা পেয়ে এটি পুবালি বাতাস হয়। এরপর উত্তর দিকে এগিয়ে যায়। যেদিন এই বায়ু বাংলাদেশের ওপর আবির্ভাব হয়, সেদিন থেকেই বর্ষাকাল শুরু হয়।

গত দুই বছর জুনে বৃষ্টির মাত্রা
মৌসুমি বায়ু ২০১৬ সালের ১ জুন টেকনাফের দিকে আসে। এটি ৬ থেকে ৭ জুন টেকনাফ উপকূল পেরিয়ে যায়। ৯ থেকে ১০ জুন মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের মধ্যভাগে চলে আসে। এর বিস্তার ঘটে ১৭ জুন সারা দেশে। ২০১৭ সালেও ১৭ জুন সারা দেশে মৌসুমি বায়ুর বিস্তার ঘটেছিল। তবে মৌসুমি বায়ুর সক্রিয়তার ওপর বৃষ্টিপাত নির্ভর করে থাকে।

তাই দেখা যায়, নির্দিষ্ট সময় মৌসুমি বায়ু চলে এলেও বৃষ্টি কম হয়ে থাকে। ২০১৬ সালে স্বাভাবিকের চেয়ে ৯৬ দশমিক ৪ মিলিমিটার কম বৃষ্টি হয়েছিল। কিন্তু ২০১৭ সালের জুনে ৩ দশমিক ৭ শতাংশ বেশি বৃষ্টি হয়।

11 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন