১৬ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, মঙ্গলবার

বরিশালে ‍এমপির পিএস’র যোগসূত্রেই চেয়ারম্যান নান্টু খুন!

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৯:০৩ অপরাহ্ণ, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮

দুর্বৃত্তদের গুলিতে জল্লা ইউপি চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ হালদার নান্টু নিহত হওয়ার পর নানা তথ্য বেরিয়ে আসছে। মাদক বিশেষ করে মরণ-নেশা ইয়াবার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ায় তাকে প্রাণ দিতে হয়েছে। মাদকের বিরোধিতাই তার জন্য কাল হয়েছে। কারণ মাদকের বিরোধিতা করায় অনেকের সঙ্গে তার শত্রুতার সৃষ্টি হয়েছিল। এছাড়া বরিশাল-২ আসনের সংসদ সদস্য তালুকদার মো. ইউনুসের পিএস আবু সাঈদের সঙ্গে নান্টুর বিভিন্ন বিষয়ে ঝামেলা চলছি। এলাকাবাসীর অভিযোগ করেছে- এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আবু সাঈদ জড়িত এবং তিনিই এ ঘটনা ঘটিয়েছেন।

সোমবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সরেজমিন উজিরপুরের জল্লা ইউনিয়নে গিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ দেখা গেছে। এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এদিনও জল্লা ইউনিয়নসহ উজিরপুর উপজেলা শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে এলাকাবাসী ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। সেখান থেকে এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার ও দোষীদের ফাঁসির দাবি জানানো হয়।

নান্টু হত্যার সঙ্গে দলীয় কোন্দলের পাশাপাশি মাদকের বিরোধিতার বিষয়টি উল্লেখ করেন ইউপি সদস্যরা, স্থানীয় লোকজন ও পরিবারের সদস্যরা। ইউপি সদস্য বাদল বিশ্বাস বরিশালটাইমসকে জানিয়েছেন- ইয়াবাসহ নানা মাদক ব্যবসা এবং এলাকায় অপকর্মকারীদের প্রশ্রয় না দেয়া এই হত্যাকাণ্ডের অন্যতম কারণ হতে পারে। এছাড়া দীর্ঘদিনের দলীয় কোন্দলও এ ঘটনার জন্য দায়ী। তিনি বলেন- ১২ জন ইউপি সদস্যদের মধ্যে ১০ সদস্য সবসময় চেয়ারম্যানের কাজকে সমর্থন জানাতেন। স্থানীয় সংসদ সদস্যের লোকজন মাদকসহ বিভিন্ন অপকর্মে জড়িয়ে পড়লে চেয়ারম্যানের সঙ্গে তাদের বিরোধের সৃষ্টি হয়। এ কারণে তালুকদার মো. ইউনুসের সমর্থকরা নান্টুর ওপর ক্ষিপ্ত ছিল। এ নিয়ে আগেও আতঙ্ক ছিল। এখন আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। স্থানীয়রা জানান, এই এলাকার মাদক ব্যবসায়ীরা চেয়ারম্যান নান্টুকে ভালোভাবে দেখত না।

উজিরপুর উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাফিজুর রহমান ইকবাল বরিশালটাইমসকে বলেন, এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে স্থানীয় সংসদ সদস্যের পিএস সরাসরি জড়িত। না হলে এমন সাহস কারও হওয়ার কথা নয়। এ ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত ও বিচার দাবি করেন ইকবাল।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে সংসদ সদস্য ও বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তালুকদার মো. ইউনুস বরিশালটাইমসকে বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে একটি মহল ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। নান্টুর সঙ্গে আমার খুব ভালো ও নিবিড় সম্পর্ক ছিল। এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।

নান্টুর বাবা শুকলাল হালদারের করা মামলায় সাবেক ইউপি সদস্য তাইজুর রহমান পান্নু, শাকিল আহম্মেদ, বরিশাল-২ আসনের সংসদ সদস্যের পিএস আবু সাঈদ ও কাজী মো. হুমায়ন কবিরসহ ৩২ জনকে আসামি করা হয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. হুমায়ন কবির সাংবাদিকদের বলেন, এ ঘটনায় পাঁচজন আটক রয়েছেন। এছাড়া দুই পুলিশ সদস্যকেও ক্লোজড করা হয়েছে।

গত শুক্রবার রাতে কারফা বাজারে মোটরসাইকেলে করে আসা দুর্বৃত্তদের গুলিতে চেয়ারম্যান নান্টু নিহত হন। এর আগে ২০০৩ সালে জল্লা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অবনি বাড়ৈকে নিজ বাড়ির সামনে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। অবনি হত্যার বিচার আজও হয়নি।’

6 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন