২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার

বরিশাল ছাত্রলীগ নেতা সুজনের ভয়াত্বক সন্ত্রাসে ওষ্ঠাগত চরকাউয়াবাসী!

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৬:৩৩ অপরাহ্ণ, ২৫ জুলাই ২০১৮

বরিশাল সদর উপজেলার ছাত্রলীগ নেতা আশিকুর রহমান সুজনের অব্যাহত সন্ত্রাসে দলীয় ঘরনার নেতাকর্মীরাও এখন হচ্ছেন আক্রান্ত। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এই নেতা সম্প্রতি স্বেচ্ছাসেবক লীগের এক নেতাকে পিটিয়ে শোরগোল ফেলে দিয়েছেন। স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আওয়ামী লীগ দলীয় বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের মেয়র প্রার্থী সাদিক সাদিক আবদুল্লাহর পক্ষে ভোট চাইতে গিয়ে সুজনের রোষানলে পড়েন। ফলে অনেকটা ক্ষোভ নিয়ে সুজনের বিচারের আর্জি জানিয়ে বরিশাল কোতয়ালি পুলিশে অভিযোগ করেছেন হামলার শিকার চরকাউয়া ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি সুলতান হাওলাদার।

সোমবার (২৩ জুলাই) বিকেলে বরিশাল শহরের কীর্তনখোলার পশ্চিমপ্রান্ত পুরাতন ফেরিঘাট এলাকায় এই ভয়াত্বক সন্ত্রাস সৃষ্টি করলেন ছাত্রলীগ নেতা সুজন। এ ছাড়াও ত্রিশোর্দ্ধ এই ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর নাম ভাঙিয়ে বেপরোয়া চাঁদাবাজির পাশাপাশি দখল সন্ত্রাসেরও গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু বরিশাল মহানগরের শীর্ষ নেতার আর্শিবাদ থাকায় অনেকটা ভিতিগ্রস্থ হওয়ায় ভুক্তভোগী কেউ তার বিরুদ্ধে মুখ খোলার সাহস দেখাচ্ছেন না। তবে সর্বশেষ তাদের নেতা সাদিকের পক্ষে নৌকা প্রতীকে ভোট চাইতে গিয়ে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি বেশি মাত্রায় আলোচনায় এসেছে। বিশেষ করে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা সুলতান হাওলাদার সুজনের এই সন্ত্রাসের নালিশটি নেতা সাদিকের কাছেও পৌছে দিয়েছেন। ফলে এই ছাত্রলীগ নেতা অনেকটা চাপে থাকার বিষয়টি অপরাপর নেতাকর্মীদের সাথে আলাপচারিতায় অনুমান করা গেছে।

কিন্তু নেতা সাদিক নির্বাচন পূর্ব দলে অসন্তোষের বিষয়টি মাথায় রেখে স্নেহভাজন সুজনকে বিষাদগার বা শাস্তি দেওয়ার কোন আলামত নেই। যদিও এই বিষয়টি নিয়েও হামলার শিকার ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগ বা সুজন বিরোধীদের মাঝে ক্ষোভ সঞ্চার হয়েছে। তবে নেতার নির্বাচন পূর্ব ক্ষতিকারক কোন ঘটনা সূত্রপাত হোক তা ভুক্তোভোগীরাও চচ্ছেন না। ফলে তারাও নিরব। কিন্তু রয়েছেন অপেক্ষায় সিটি নির্বাচনের পরে কি পদক্ষেপ আসে। ফেরিঘাটে ওই হামলার শিকার সুলতান হাওলাদার কোতয়ালি থানায় দেয়া অভিযোগে উল্লেখ করেছেন, গত সোমবার তিনিসহ অন্তত ২০ থেকে ২৫ নেতাকর্মী আওয়ামী লীগের প্রার্থী তাদের নেতা সেরনিয়াবাত নৌকা প্রতীকের অনুকুলে প্রচারণা চালাচ্ছিলেন।

ওই সময় উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান সুজন ও বরিশাল জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক কেএম শুভসহ ২০ থেকে ২৫ জনের বাহিনী নিয়ে অতর্কিত হামলা করে। একপর্যায়ে সুলতান হাওলাদারকে এলাপাতারি পিটুনি দেয়। খোঁজখবর নিয়ে নিশ্চি হওয়া গেছে- ঠিকাদারি কাজ নিয়ে সুজনের সাথে সুলতান হাওলাদারের বিভাদ শুরু হয়। মূলত সুজন চেয়েছিল একটি ঠিকাদারি কাজে সুলতানের পাশে থেকে ভাগা নিতে। কিন্তু সেখান থেকে কোন ধরনের সুযোগ না পাওয়ার কারণেই ক্ষিপ্ত সুজন বাহিনী নিয়ে হামলার মত ঘটনা সৃষ্টি করলেন।

অবশ্য এই হমলার ষিয়টি সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশও অবগত রয়েছে। পাশাপাশি অভিযোগের কপিও হাতে পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোতয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) আসাদুজ্জামান। কিন্তু ঘটনার কয়েকদিন অতিবাহিত হলেও পুলিশ হামলাকারীদের বিরুদ্ধে কোন ধরনের পদক্ষেপ রাখছে না। ফলে সুজনের প্রতি যে আওয়ামী লীগ নেতার সুদৃষ্টি রয়েছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

তবে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আতঙ্কিত সময় পাড় করার বিষয়টি নিশ্চিত করে সুলতান হাওলাদার বরিশাল পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের আশুহস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

অবশ্য ছাত্রলীগ নেতা আশিকুর রহমান সুজন পুরো অভিযোগটি অস্বীকার এ প্রতিবেদককে বলছেন- তাকে বিতর্কিত করতে সুলতানসহ আরও অনেকে দুর্নাম ছড়াচ্ছেন। তবে তিনি ঠিকদারি সংক্রান্ত ব্যবসাকে কেন্দ্র করে বিবাদ নিয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকে মারধরের বিষয়টি স্বীকার করেছেন।

7 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন