১৮ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার

বরিশাল মহানগর আ’লীগের ইউনিট কমিটিতে স্থান পেল মাদক বিক্রেতা!

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৫:০৯ অপরাহ্ণ, ০৪ মে ২০১৮

বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগ ইউনিট কমিটি গঠন নিয়ে শুরুতেই জটিলতা দেখা দিয়েছে। কমিটিতে ওয়ার্ড নেতাদের বিরুদ্ধে বিএনপি থেকে অনুপ্রবেশকারী, ছাত্রলীগ-যুবলীগ নেতাদের বাদ দেয়া এবং স্বজনপ্রীতির অভিযোগ উঠেছে। এমনকি কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে সবার মতামত নেয়া হচ্ছে না। এসব অভিযোগে গত রোববার একটি ওয়ার্ডের ইউনিট কমিটি স্থগিত করা হয়েছে। ইউনিট কমিটি গঠনে মতামত না নেয়ার অভিযোগে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে বিভিন্ন ওয়ার্ড নেতাদের মাঝে। নগরীর ৩০টি ওয়ার্ডে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইউনিট কমটি গঠনের উদ্যোগ নেয় মহানগর আওয়ামী লীগ।

খোঁজখবর নিয়ে জানা গেছে- গত রোববার সন্ধ্যায় নগরীর ১০ নম্বর ওয়ার্ডে ইউনিট কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেয়া হয়। সে অনুযায়ী সভাস্থল নগরীর অভিজাত রেস্তোরাঁ সাউথ কিংয়ের নিচে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকট গোলাম আব্বাস চৌধুরী দুলাল, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট একেএম জাহাঙ্গীর ও যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ সভায় অংশগ্রহণ করেন। সভা শুরুর পরপরই ১০নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের শতাধিক নেতাকর্মী কমিটি গঠনে অনিয়মের অভিযোগ তোলেন।

তাদের ভাষ্যমতে, ইউনিট কমিটিতে অনেক ত্যাগী নেতা বাদ পড়েছেন। স্ত্রী সিটি নির্বাচনে কাউন্সিলর প্রার্থী হবেন বলে একক সিদ্ধান্তে কমিটি করছেন ওয়ার্ড সাধারণ সম্পাদক। এ ক্ষেত্রে বিএনপি নেতার ভাই ও মাদক বিক্রেতাও স্থান পেয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে মহানগর নেতারা সভা স্থগিত করেন।

নগরীর ১০ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সরকারি বরিশাল কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি আল মামুন সাংবাদিকদের বলেন, ইউনিট কমিটিতে ১০ নম্বর ওয়ার্ডের বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের ভাই শাহাদাতকে রাখা হয়েছে। এই কমিটিতে ৩ মাদক বিক্রেতাকেও স্থান দেয়া হয়েছে। অথচ তার নামসহ যুবলীগ, আওয়ামী লীগের অনেকের নাম নেই। মহানগর নেতারা এর প্রতিবাদ জানালে কমিটি গঠন স্থগিত হয়ে গেছে।

১০ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট হুমায়ুন চৌধুরী প্রিন্স সাংবাদিকদের বলেন, তার ওয়ার্ডে সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ইউনিট কমিটির যে তালিকা করেছেন তা আলোচনা করে করা হয়নি। তাকে তালিকা দেখানোও হয়নি। মূলত ওয়ার্ড সম্পাদকের স্ত্রী ১০ নম্বর মহিলা লীগের সভাপতি নাজমুন নাহার লাকি ওই ওয়ার্ড থেকে কাউন্সিলর নির্বাচন করবেন। সে লক্ষে এককভাবে মাঠ গোছাতে চেয়েছেন তিনি। কিন্তু নগরের নেতারা ঘটনাস্থলে গেলে তাৎক্ষণিক বিদ্রোহ করে কর্মীরা।

তবে ১০ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ইউনিট কমিটি গঠনকালে বাইরের লোকজন এসেছিল। তালিকা ছাড়া লোকজন এসে যাওয়ায় সভাটির গোপনীয়তা ছিল না। এ কারণে মহানগর নেতারা পরে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

তিনি বলেন, যারা নিস্ত্রি“য় তাদের নাম কেন ইউনিট কমিটিতে থাকবে। বিএনপি নেতার ভাইকে কমিটিতে রাখা প্রসঙ্গে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ওই নাম তিনি রাখেননি- অন্য একজন প্রস্তাব করেছেন। ছাত্রলীগ নেতা মামুন ও রাজিব সম্পর্কে তিনি বলেন, তারা নিষ্ক্রিয়। ওয়ার্ড সভাপতি নিজেও নিষ্ক্রিয় বলে দাবি করেন আওয়ামী লীগ নেতা সাইফুল।’

এ ব্যাপারে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট গোলাম আব্বাস চৌধুরী দুলাল সাংবাদিকদের বলেন, ১০ নম্বর ওয়ার্ডের সব লোকজন যুক্ত করা হয়নি। যেহেতু ইউনিট কমিটি এলোমেলো হয়েছে, সেহেতু পরে এটি গুছিয়ে করা হবে। তিনি বলেন, কমিটিতে জামায়াত-শিবির অনুপ্রবেশের চেষ্টা করবেই। তবে তারা এ বিষয়ে অত্যন্ত সচেতন। সবার মতামতে কমিটি গঠন করা হবে।’’

2 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন