২৮শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার

বাবুগঞ্জে ১০ টাকার কেজির চালেও চুরি! ডিলার জয়ন্ত আটক

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৭:০০ অপরাহ্ণ, ১৫ অক্টোবর ২০১৮

বাবুগঞ্জে ১০ টাকার কেজির চালেও চুরি! “গণবিক্ষোভের মুখে ডিলার জয়ন্ত আটক”

আরিফ আহমেদ মুন্না : বাবুগঞ্জ উপজেলার মাধবপাশায় দুঃস্থদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রকল্পের ১০ টাকা কেজি দরের চাল চুরির সময় জনতার হাতে আটক হয়েছেন ডিলার জয়ন্ত সাহা। এসময় দোকানে সরিয়ে রাখা ৫১ বস্তা চোরাই চালসহ তার দোকান ও গোডাউন সিলগালা করেছে পুলিশ। গণবিক্ষোভের মুখে প্রায় আড়াই ঘন্টা অবরুদ্ধ থাকার পরে ডিলার জয়ন্ত সাহাকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যায় বিমানবন্দর থানা পুলিশ। সোমবার দুপুরে উপজেলার মাধবপাশা ইউনিয়নের তিনমঠ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও কার্ডধারী দুঃস্থরা জানান, প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুত ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রয়ের জন্য ডিলার জয়ন্ত সাহা মাধবপাশা ইউনিয়নের ৪৯৩ জন দুঃস্থ কার্ডের বিপরীতে জনপ্রতি ৩০ কেজি করে ৪৯৩ বস্তা চাল রোববার উত্তোলন করেন। কিন্তু সেখান থেকে ৫১ বস্তা চাল তিনি রাতেই গোডাউন থেকে সরিয়ে নিজের দোকানে নিয়ে রাখেন। চুরি করা চালের ঘাটতি মেটাতে তিনি বাকি ৪৪২ বস্তার প্রতিটি বস্তা ছিদ্র করে সেখান থেকে গড়ে ৫-৭ কেজি চাল বের করে আলাদা প্যাকেট করেন।

মাধবপাশা ইউপি চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদিন হাওলাদার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, জয়ন্ত সাহা রাতেই ৩০ কেজির প্রত্যেকটি বস্তা কেটে ছিদ্র করে চাল কমিয়ে ফেলেন। সোমবার সকাল থেকে তিনি জনপ্রতি ৩০০ করে টাকা জমা নিয়ে ৫১ জনকে চাল দেওয়ার পরে এ ঘটনা ফাঁস হয়। এসময় কার্ডধারী উত্তেজিত দুঃস্থরা তাকে অবরুদ্ধ করে। পরে মেপে দেখা যায় প্রত্যেক বস্তায় ৩০ কেজি স্থলে ২৩ থেকে সর্বোচ্চ ২৫ কেজি চাল রয়েছে এবং প্রত্যেকটি বস্তা সেলাই কেটে ছিদ্র করা হয়েছে।

বিমানবন্দর থানার ওসি এইচ.এম আবদুর রহমান মুকুল জানান, চাল চুরি ঠেকাতে প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য সরকারিভাবে ৩০ কেজি আলাদা আলাদা বস্তা তৈরি করার পরেও এমন চুরির ঘটনা দুঃখজনক। জনরোষ থেকে তাকে উদ্ধার করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আপাতত আটক করা হয়েছে। পরে ইউএনওর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জয়ন্তর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হওয়া খাদ্য পরিদর্শক জেবুন্নেসা বেগম বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পরে ইউএনওর নির্দেশে গণনা করে ৫১ বস্তা চাল কম পাওয়া গেছে। ডিলার জয়ন্ত সাহার গোডাউনে পাওয়া অবশিষ্ট ৩৯১ বস্তার মধ্যে কোনো বস্তাতেই ৩০ কেজি করে চাল নেই। প্রত্যেকটি বস্তাই ছিদ্র করা এবং গড়ে ৫ থেকে ৭ কেজি করে চাল কম রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে বাবুগঞ্জের ইউএনও সুজিত হাওলাদার মুঠোফোনে এ প্রতিবেদককে জানান, প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুত এই ১০ টাকার চাল বিতরণ কর্মসূচিতে অনিয়ম সহ্য করা হবে না। প্রতি কেজি চালে সরকার অনেক টাকা ভর্তুকি দিচ্ছে। তাই অপরাধী যেই হোক তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। খাদ্য পরিদর্শককে জিডি করে আপাতত গোডাউন সিলগালা করে রাখতে বলা হয়েছে।

এদিকে মাধবপাশা ইউপি সদস্য জাকির হোসেনসহ স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, আওয়ামী লীগের নাম ভাঙিয়ে ডিলার জয়ন্ত সাহা দীর্ঘদিন ধরেই ক্ষমতার দাপটে এভাবে মাপে কম দিয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের যোগসাজসে চাল চুরি করে আসছেন। #

0 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন