২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার

বিসিসির ২২ নম্বর ওয়ার্ডে আশাবাদী কাউন্সিলর প্রার্থী আজিম

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৯:৪৮ অপরাহ্ণ, ০৬ জুলাই ২০১৮

বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের ৩০ টি ওয়ার্ড এর মধ্যে সব থেকে ছোট ওয়ার্ডগুলোর একটি ২২ নম্বর ওয়ার্ড। গুরুত্বপূর্ণ এই ওয়ার্ড কাউন্সিলর হতে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমেছেন তিন প্রার্থী। যাদের তিনজনের মনোনয়নপত্র যাচাই বাছাই কার্যক্রমে প্রার্থী হিসেবে বহাল রয়েছেন। আনিছুর রহমান দুলাল, সাবেক কাউন্সিলর আ.ন.ম সাইফুল আহসান আজিম ও তানভীর হোসেন রানা এই ওয়ার্ডটিতে প্রতিদ্বন্দ্বি। তাদের মধ্যে দুলাল এবং আজিম পৃথক দুই রাজনৈতিক দলের সমর্থন নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও রানা স্বতন্ত্র প্রার্থী। তবে নির্বাচনে আওয়ামী লীগের আনিছুর রহমান দুলাল এবং বিএনপি’র আ.ন.ম সাইফুল আহসান আজিম’র মধ্যেই লড়াই হবে বলে মত দিয়েছেন সাধারণ ভোটাররা।

এখানে বর্তমানে স্থায়ী ও অস্থায়ী জনসাধারণের বসবাস বেড়েছে। কিন্তু জনসাধারণের বসবাসের সাথে সাথে সমস্যারও অন্ত নেই। যার মধ্যে সীমাহীন জলাবদ্ধতা আর মাদকের ভয়াবহতা প্রকাশ পাচ্ছে সর্বক্ষেত্রে। তাই এবারের নির্বাচনে এই দুটি সমস্যাকে চিহ্নিত করেই কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমেছেন সাবেক কাউন্সিলর ও এবারের বিএনপি মনোনীত কাউন্সিলর প্রার্থী আ.ন.ম সাইফুল আহসান আজিম। অন্যদিকে রয়েছেন মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা মো. আনিছুর রহমান দুলাল। একমাত্র প্রার্থী হিসেবে তাকেই নির্বাচনে দলীয় সমর্থন দিয়েছে আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড। তাই এবারের নির্বাচনে ২২নম্বর ওয়ার্ডটি আওয়ামী লীগের ঘরেই থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী এবং সমর্থকরা। এমনকি তার বিষয়ে আশাবাদী স্থানীয় ভোটাররাও।

যদিও ২০০৮ সালের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে মাত্র ৬০৭ ভোট পেয়ে চতুর্থ স্থানে ছিলেন আনিছুর রহমান দুলাল। ওয়ার্ড নির্বাচনের দিকে ঘুরে তাকালে দেখা যায়- বর্তমানে ২২নম্বর ওয়ার্ড থেকে আওয়ামী লীগ-বিএনপি ও স্বতন্ত্র প্রার্থী। এরাই সবাই উন্নয়নের মাধ্যমে মডেল ওয়ার্ড গড়ার শ্লোগান দিয়ে করছেন প্রচার প্রচারনা। আবার কেউ কেউ অভিযোগ করছেন সরকার দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে। অন্যদিকে তার মধ্যেই সুষ্ঠু ভোট হলে বিজয়ের ক্ষেত্রে শতভাগ আশাবাদী বিএনপি প্রার্থী আজিম। সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে- ২০১৩ সালের নির্বাচনে বিএনপি সমর্থীত প্রার্থী আ.ন.ম সাইফুল আহসান আজিমকে পরাজিত করে কাউন্সিলর নির্বাচিত হন মো. শহীদুল ইসলাম। তবে এবারের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন না বর্তমান কাউন্সিলর শহীদ তালুকদার। যে কারণে ওয়ার্ডটিতে প্রার্থীদের জন্য নির্বাচনী মাঠ অনেকটাই ফাঁকা।

সেই সুযোগটাই নেয়ার চেষ্টা করছেন গতবারের নির্বাচনে দ্বিতীয় স্থানে থাকা সাবেক কাউন্সিলর আ.ন.ম সাইফুল আহসান আজিম। সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদককে তিনি জানান, ২০০৩ সালে প্রথম ২২নম্বর ওয়ার্ড থেকে কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা প্রায় দুই হাজার ভোট পেয়ে প্রথম হন তিনি। তবে ২০১৩ সালের নির্বাচনে শহীদুল ইসলাম তালুকদারের কাছে পরাজিত হতে হয় তাকে। নগরীর উত্তর জিয়া সড়কের বাসিন্দা ও মহানগর ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এবং সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজের সাবেক এজিএস আ.ন.ম সাইফুল আহসান আজিম বলেন, বিগত নির্বাচনে আমি পরাজিত হলেও ওয়ার্ডের জনগণের সাথে আমার সম্পর্কের দূরত্ব হয়নি। বরং মানুষের মৌলিক অধিকার শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাসস্থানসহ সার্বিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করেছি। যে কারনে ওয়ার্ডের মানুষও আমাকে তাদের কাছের মানুষ হিসেবে বেছে নিয়েছে। তারা আমাকে পুণরায় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য বলেছে।

এজন্যই আসন্ন সিটি নির্বাচনে আমি ২২নম্বর ওয়ার্ড থেকে পূণরায় প্রার্থী হয়েছি। তিনি বলেন, আমি চাই প্রান্তিক ভোট, গণমানুষের অধিকার। সাধারণ মানুষের এই অধিকার বাস্তবায়ন হলে আমি বিজয়ের বিষয়ে শতভাগ আশাবাদী। আর আমি নির্বাচন নিয়ে অন্যন্যদের মত ইস্তেহার দিতে চাই না। জনগণের চাওয়া পাওয়া এবং দাবিই হবে আমার ইস্তেহার। এদিকে ওয়ার্ডটিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তানভীর হোসেন রানা। তিনি বিগত বারের মত নির্বাচনে অংশ নিলেও তার বাবা মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী বরিশাল জেলা ছাত্রলীগের প্রথম সভাপতি জামাল হোসেন সিকদার ছিলেন সাবেক বরিশাল পৌরসভার কমিশনার। এমনকি তিনি বাকসু’র জিএসও ছিলেন বলে জানিয়েছেন তার ছেলে তানভীর হোসেন রানা। নবগ্রাম রোড সিরাজী ভবনের বাসিন্দা রানা বলেন, আমি কোন দল চিনিনা। একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি। নির্বাচিত হতে পারলে ওয়ার্ডটিকে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে গড়ে তোলার কথা বলেন এই প্রার্থী।

বর্তমান কাউন্সিলর শহিদুল ইসলাম এবারের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন না। গতবারের নির্বাচনে ৫২ ভোট বেশি পেয়ে নির্বাচিত এ কাউন্সিলর এলাকায় জলাবদ্ধতাসহ নানা উন্নয়নে প্রায় ২৫ কোটি টাকার কাজ করেছেন বলে জানিয়েছে। পাশাপাশি আরও এক কোটি ১৫ লাখ টাকার কাজ চলমান রয়েছে বলে জানান। এরপরেও এলাকায় কেন এতো জলাবদ্ধতা রয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, বাকী কাজ সম্পন্ন হলে এটা থাকবে না। এছাড়া ঠিকাদারগণ ঠিকমতো কাজ করছে না বলেও দাবি করছেন তিনি। এলাকায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত রয়েছেন তিনি। পাশাপাশি তিনি শিক্ষার আলো পৌঁছে দিতে নিজ অর্থায়নে রুস্তুম আলী তালুকদার শিশু কল্যান প্রাথমিক বিদ্যালয় নামে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেছেন। তবে এবারের নির্বাচনে কেন অংশ নিচ্ছে না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হয় নি।’

6 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন