আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নবীন প্রবীণের সমন্বয়ে একটি শক্তিশালী মন্ত্রীসভা গঠনের চিন্তা ভাবনা করছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। চলতি মাসেই মন্ত্রিসভায় এই যোগ বিয়োগ হতে পারে। যোগ বিয়োগের তালিকায় বরিশালের সন্তান প্রধানমন্ত্রীর ভাই আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ রয়েছে।

ফলে তাকে এখন ঢের আলোচনা চলছে। কারণ মন্ত্রিসভায় রদবদল হলে তিনি স্থান পাওয়াটা অবিশ্বাস্য কিছু নয় বলে মনে করছে বরিশালবাসী। অবশ্য বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাসানাত মন্ত্রিসভায় স্থান পাচ্ছেন এমন একটি গুঞ্জন অনেক আগে থেকেই কথিত রয়েছে। তবে তার নামটি এবার একটু জোরালোভাবেই শোনা যাচ্ছে।

কেন্দ্রীয় সূত্র জানিয়েছে- সরকারকে আরও সক্রিয় রাখতেই মন্ত্রিসভা গঠনের জন্য প্রধানমন্ত্রী ফাইল ওয়ার্ক করছেন। নিজস্ব উইং দিয়ে সম্ভাব্য মন্ত্রীদের খোঁজ খবর নিচ্ছেন। এমনকি একটি খসড়া তালিকাও তৈরি করা হয়েছে। বেশ কয়েকজন প্রবীন নেতা ও অপেক্ষাকৃত উদ্যমী তরুণ নেতাকে এবারের মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্তকরণের বিষয়টিও একরকম চূড়ান্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী। এ যোগ বিয়োগের প্রক্রিয়ায় বাদ পড়তে যাচ্ছেন কমপক্ষে এক ডজন মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী। দলীয় হাইকমান্ডের বরাত দিয়ে শনিবার (০৮ জুলাই) রাতে একাধিক সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।”

নতুন করে এবারের মন্ত্রী সভায় যোগ দিতে পারেন, সদলের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, সাবেক মন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন, সাবেক চিফ হুইপ আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ, সাবেক ডেপুটি স্পীকার অধ্যাপক আলী আশরাফ, সাবেক মন্ত্রী কর্নেল (অবসরপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ ফারুক খান, সাবেক মন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, সাবেক মন্ত্রী ড. দীপু মনি, সাবেক মন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ, আখম জাহাঙ্গীর হোসাইন, সাবেক মন্ত্রী তালুকদার আব্দুল খালেক, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক এপিএস আফম বাহাউদ্দীন নাসিম এমপি, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এবং ইসরাফিল আলম, সিলেটের নেতা, মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী। পদ্মাসেতু থেকে বিশ্ব ব্যাংকের অভিযোগ প্রত্যাহার হওয়ায় সৈয়দ আবুল হোসেনের ভাগ্য আবারও খুলছে। ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ভালো ভুমিকা রাখার জন্য ফারুক খান, ডক্টর আব্দুর রাজ্জাক, বিশ্বস্ততার পরিক্ষায় উত্তীর্ণ হবার জন্য শেখ সেলিম, আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ, দিপু মনি, বি এম মোজাম্মেল ও খালিদ মাহমুদের ভাগ্য খুলছে।’

সিলেট থেকে মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীকে নতুন মন্ত্রীসভায় দেখা যাবার কথা শোনা যাচ্ছে। অন্যদিকে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বিদায় নিলে রাজশাহী বিভাগে ব্যালান্সের জন্য মন্ত্রীসভায় ইসরাফিল আলমকে দেখা যাবে, এমনটি আভাস দিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র। নতুন মুখ হিসাবে টেকনোক্রেট কোটায় মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন, আওয়ামী লীগের উপদেস্টা পরিষদ সদস্য প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান ও মোজাফফর হোসেন পল্টু।

ড. মশিউর রহমানকে অর্থমন্ত্রী এবং মোজাফফর হোসেন পল্টু যুব ক্রীড়ামন্ত্রী, এমপি ইসরাফিল আলম স্বরাষ্ট্র কিংবা শ্রম প্রতিমন্ত্রী হিসাবে বিবেচনায় রয়েছেন বলে জানা গেছে। ৯৬ এর সাবেক প্রতিমন্ত্রী তালুকদার আব্দুল খালেকের মন্ত্রিসভায় আসার উজ্জ্বল সম্ভবনা রয়েছে। বাগেরহাটের রামপালে তাপ বিদ্যুৎ প্রকল্পের কারনে নানা দিক বিবেচনা করে খালেককে এবারও মন্ত্রী করা হবে বলে জানা গেছে।

এর বাইরেও কুমিল্লা থেকে নির্বাচিত এমপি এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুন’র নাম শোনা যাচ্ছে । মন্ত্রী ছিলেন এমন একজন যুগ্ম সম্পাদক এবং বর্তমানে সাংগঠনিক সম্পাদকের পদে রয়েছেন এমন একজন প্রভাবশালী এমপি মন্ত্রীসভায় আসার জন্য চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। এই বিষয়ে জানতে চাইলে একাধিক মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, এমপি সাংবাদিকদের নাম না প্রকাশের শর্তে জানান, বিষয়টি স্পর্শকাতর। রদবদলের বিষয়টি একান্তই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার। তিনি আমাদের অভিভাবক, আমাদের সবার আমলনামাই তার গভীরভাবে জানা রয়েছে। নেতারা আরও বলেছেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা চাইলে আমরা দ্বায়িত্ব নেবো। তেমনি মন্ত্রিসভায় না রাখলে দলের যে দ্বায়িত্ব প্রধানমন্ত্রী দেবেন, সেই দ্বায়িত্ব নিষ্ঠার সঙ্গে তারা পালন করবেন।”