২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার

সাংবাদিক নির্যাতন : বরিশাল ডিবির সেই ৮ সদস্য সাময়িক বরখাস্ত

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৬:১১ অপরাহ্ণ, ১৯ মার্চ ২০১৮

ডিবিসি টেলিভিশনের ক্যামেরাপারসন সুমন হাসানকে হাতকড়া পরিয়ে নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্ত মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের আরও ৫ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ নিয়ে অভিযুক্ত ৮ পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। সেই সাথে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলারও আশ্বাস দেওয়া হয়।

তাছাড়া ডিবির উপ-পুলিশ কমিশনার উত্তম কুমার পালকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।

বরখাস্তকৃতরা হলেন- মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের এসআই আবুল বাশার, এএসআই স্বপন ও আক্তার এবং কনস্টেবল মাসুদুল হক, পারভেজ রাসেল, হাসান, রহিম ও সাইফুল।

সোমবার (১৯ মার্চ) বিকেলে মহানগর পুলিশ কমিশনার এসএম রুহুল আমিন বিষয়টি নিশ্চিত করে বরিশালটাইমসকে জানান, ডিবিসি টেলিভিশনের ক্যামেরা পারসন সুমন হাসানকে নির্যাতনের ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে ৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। দোষী হওয়ায় ৮ পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। আর প্রশাসনিক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে উপ-পুলিশ কমিশনার উত্তম কুমার পালকে তার অতিরিক্ত দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে সদ্য যোগদানকৃত উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন ভূঞাকে ডিবি পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার পদে পদায়ন করা হয়েছে। উত্তম কুমার পাল বর্তমানে ট্রাফিক পুলিশের ডিসি পদে দায়িত্ব পালন করছেন।

তদন্ত কমিটির সদস্য মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের সহকারী কমিশনার (এসি) নাসির উদ্দিন মল্লিক বরিশালটাইমসকে জানান, ডিবিসি টেলিভিশনের ক্যামেরারপারসন সুমন হাসান, অভিযুক্ত ৮ পুুলিশ সদস্য, প্রতক্ষদর্শীসহ ২০ জনের সাক্ষ্য নেয়া হয়। তদন্তে ৮ পুুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে সুমন হাসানকে মারধরের প্রমাণ মিলেছে। প্রতিবেদনে ৮ পুুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করার সুপারিশ করা হয়। এর প্রেক্ষিতে ৮ পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত ও বিভাগীয় মামলা করা হয়েছে।

বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ডিবিসির নির্যাতিত ক্যামেরাপারসন সুমন হাসান বরিশালটাইমসকে জানান, গত মঙ্গলবার বেলা ২টার দিকে অফিস থেকে বাসায় যাওয়ার পথে এক নিকটাত্মীয়কে গোয়েন্দা পুলিশে আটকের খবর পেয়ে তিনি নগরীর বিউটি রোডের ঘটনাস্থলে যান এবং পুলিশের কাছে পুরো বিষয়টি জানতে চান।

এ সময় যাদের আটক করা হয়েছে তাদের সঙ্গে তার বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে গোয়েন্দা পুলিশ তার পরিচয় জানতে চায়। সাংবাদিক পরিচয় পেয়েই তার ওপর চড়াও হয় গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা।

পরে প্রকাশ্যে তার পরনে থাকা টি-শার্ট টেনেহিঁচড়ে এবং পেটাতে পেটাতে তাকে গোয়েন্দা পুলিশের গাড়িতে তোলা হয়। পথিমধ্যে তার অন্ডকোষ চেপে ধরাসহ অমানুষিক নির্যাতন করা হয়। এছাড়া সাংবাদিক ও তাদের পরিবার নিয়েও নানা অশ্রাব্য ভাষায় গালাগাল করা হয়।

খবর পেয়ে তার সহকর্মীরা নগরীর পলিটেকনিক রোডে নগর গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে যায়। সেখানে নির্যাতিত সাংবাদিক সুমনকে হাতকড়া পরিহিত অবস্থায় কাঁদতে দেখে ক্ষোভে ফেটে পড়েন অন্যান্য সাংবাদিকরা।

এ সময় সাংবাদিক সুমনকে নির্যাতনকারী প্রধান অভিযুক্ত কনস্টেবল মাসুদুল হক একজন সাংবাদিককে লাথি দেয়। এতে সাংবাদিকরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। সাংবাদিকরা প্রতিবাদ মুখর হলে মহানগর পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ওই দলে থাকা গোয়েন্দা পুলিশের ৮ সদস্যকে তাৎক্ষণিক পুলিশ লাইনে প্রত্যাহার করা হয়। ঘটনা তদন্তে গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার রুনা লায়লার নেতৃত্বে ৩ সদস্যের একটি কমিটি করা হয়।’

3 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন