২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

স্বামী মুসলিম, মহিলার শ্রাদ্ধই করল না দিল্লির মন্দির

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১২:০০ অপরাহ্ণ, ১০ আগস্ট ২০১৮

ভালোবেসেই বিয়ে করেছিলেন এক ইসলাম ধর্মাবলম্বী যুবককে। কিন্তু, ধর্ম কখনই প্রাধান্য পায়নি দীর্ঘ কুড়ি বছরের দাম্পত্য জীবনে। ধর্ম বিশ্বাসে তিনি সবসময়েই ছিলেন একজন হিন্দু। তাই শেষ ইচ্ছেও ছিল, অন্তেষ্ট্যি এবং শেষকৃত্য যেন হিন্দু রীতি মেনেই হয়। স্ত্রী-র এই বিশ্বাসকে সবসময়ে সম্মান দিয়ে এসেছেন তাঁর স্বামী। শেষ ইচ্ছে পূরণ করতে গিয়েই দিল্লিতে এক অপ্রত্যাশিত বাধার মুখে পড়েছেন কলকাতার ইমতিয়াজুর রহমান। শেষ পর্যন্ত দিল্লির অন্য একটি সংস্থা তাঁদের সাহায্যের আশ্বাস দিলেও, ঘটনার আকস্মিকতার ঘোর কাটেনি ওই পরিবারের। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।

রাজ্য সরকারের বাণিজ্যিক কর দফতরের সহকারি কমিশনার ইমতিয়াজু্র। দীর্ঘ অসুস্থতার পর দিল্লির একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁর স্ত্রী নিবেদিতা ঘটক রহমানের সম্প্রতি মৃত্যু হয়। স্ত্রীর ইচ্ছেকে সম্মান জানিয়েই হিন্দু মতে দিল্লির নিগম বোধ ঘাটে দাহ করা হয় নিবাদিতার দেহ।

রীতি মেনে ঠিক ১১ দিনের মাথায় শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের জন্য ইমতিয়াজুর বেছে নেন দক্ষিণ দিল্লির চিত্তরঞ্জন পার্ক কালী মন্দিরকে। আর সেখান থেকেই অপ্রত্যাশিতভাবে বাধাটা আসে। নিবেদিতা অসুস্থ থাকাকালীন তাঁর লিভার প্রতিস্থাপনের প্রয়োজন পড়ে। সেই সময় নিবেদিতাকে নিজের লিভারের অংশ দিয়েছিলেন তাঁর বোন কৃত্তিকা। এখনও তাঁর চিকিৎসা চলছে দিল্লিতে। গোটা ঘটনার সাক্ষী তিনি। বৃহস্পতিবার দিল্লি থেকে কৃত্তিকা বলেন, সোমবার সন্ধ্যায় দুলাভাই সি আর পার্ক কালীমন্দিরে গিয়েছিলেন শ্রাদ্ধের জন্য জায়গা বুকিং করতে। মন্দির কর্তৃপক্ষ আগামী রবিবারের জন্য বুকিংওনেন। তার জন্য নির্দিষ্ট ১ হাজার ৩০০ টাকা নিয়ে তাঁরা রশিদ দিয়েছিলেন।

কিন্তু সমস্যা শুরু হয় তার ঘন্টাখানেক পর থেকে। ইমতিয়াজ বলেন, আমার মোবাইলে মন্দির কর্তৃপক্ষ হঠাৎই ফোন করেন। তাঁরা বার বার আমার নাম জিজ্ঞাসা করেন। তখনই আমার সন্দেহ হয়। কৃত্তিকাও সেই সময় সামনেই ছিলেন। তিনি বলেন, এর পর আবার ওঁরা ফোন করে জানতে চান, নিবেদিতা ঘটকের কে হয় দুলাভাই? প্রথমে ওঁদের ধারণা ছিল, সম্পর্কটা শ্বাশুড়ি-জামাইয়ের। কিন্তু দুলাভাই পরিষ্কার জানান যে, তাঁর স্ত্রীর শ্রাদ্ধানুষ্ঠান হবে। আর সেই কাজ করবে তাঁদের একমাত্র মেয়ে ইহিনি আমব্রিন।

তারপরেই মন্দিরের অফিস থেকে জানিয়ে দেওয়া হয় যে তাঁরা ওই বুকিং দিতে পারবেন না। ইমতিয়াজুর বলেন, ওঁরা সরাসরি কোনও কারণ দেখাননি। খালি বলেছিলেন, তাঁদের নাকি আগে থেকে কোনও বুকিং রয়েছে। আর সেই কারণেই তাঁরা বুকিং ক্যানসেল করতে বাধ্য হচ্ছেন। তখন আমি বলি, আমরা তো যখন গিয়েছিলাম, তখন তো আপনারা কোনও বুকিং নেই দেখেই আমাকে বুক করতে দিয়েছিলেন। তারপরেও কেন ক্যানসেল?প্রশ্ন করায় ফোনের ওপার থেকে জবাবা আসে, আপনি যা বোঝার বুঝে নিন।

1 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন