২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

১০০ টাকা চুরির অপবাদে শিশুকে অমানুষিক নির্যাতন

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৬:৩৬ অপরাহ্ণ, ১১ আগস্ট ২০১৭

১শ’ টাকা চুরির অপবাদ দিয়ে মাদ্রাসার তৃতীয় শ্রেণির (তৃতীয় জামাতের) শিশু ছাত্রীর (৮) মুখে গামছা বেঁধে অমানুষিক নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুক্রবার (১১ আগস্ট) সকালে মাদ্রাসার আবাসিক হল থেকে গুরুতর অবস্থায় নির্যাতিতা শিশুটিকে তার মা উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছেন।

নির্যাতিতা ওই শিশু ছাত্রীর উপজেলার পশ্চিম শাওড়া গ্রামের সৌদি প্রবাসী মো. কামাল হোসেন বেপারীর মেয়ে। গৌরনদী উপজেলা সদরের খাদিজাতুল কোবরা (রা:) মহিলা কওমী মাদ্রাসার আবাসিক হলে থেকে পড়াশুনা করতো।

শিশুটির মা রেনু বেগম সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, প্রায় সাড়ে তিনবছর পূর্বে তার একমাত্র শিশু কন্যা কামরুন নাহার সুমাইয়াকে ওই মাদ্রাসায় ভর্তি করা হয়। এরপর থেকেই তাকে (সুমাইয়া) মাসিক তিন হাজার টাকা চুক্তিতে মাদ্রাসার আবাসিক হলে রাখা হয়।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, শুক্রবার (১১ আগস্ট) সকালে মাদ্রাসার এক ছাত্রী গোপনে তাকে ফোন করে জানায় মাদ্রাসার তিন নারী শিক্ষক সুমাইয়াকে রাতে অমানুষিক নির্যাতন করেছেন। খবর পেয়ে তিনি সকাল ১০টার দিকে মাদ্রাসার আবাসিক হল থেকে গুরুতর আহত অবস্থায় তার শিশু কন্যা সুমাইয়াকে উদ্ধার করেন।

এসময় মাদ্রাসার বড় খালামনি (সুপার) তাকে জানায়, অপর এক ছাত্রীর ১০০ টাকা চুরির ঘটনায় সুমাইয়াকে শাসন করা হয়েছে। তবে কোন ছাত্রীর টাকা চুরি হয়েছে তা তিনি (সুপার) বলতে পারেননি।

নির্যাতিতা শিশু ছাত্রী সুমাইয়ার বরাত দিয়ে তার মা রেনু বেগম আরও অভিযোগ করেন, গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে একশ’ টাকা চুরির অপবাদ দিয়ে মাদ্রাসার সুপার (বড় খালামনি হিসেবে পরিচিত) ও মেঝ খালামনি এবং বাংলা খালামনি তার মেয়ে সুমাইয়ার মুখে গামছা বেঁধে অমানুষিকভাবে নির্যাতন করেন।

কান্না জড়িত কন্ঠে রেনু বেগম বলেন, বড় খালামনির নির্দেশে মুখে গামছা বাঁধার পর মাদ্রাসার আবাসিক হলের মেঝ খালামনি গুনে গুনে তার মেয়েকে ৬০টি ও বাংলা খালামনি ১০০টি বেত্রাঘাত করেছেন। এতে তার মেয়ে গুরুতর অসুস্থ্য হওয়ার পরেও তাকে (সুমাইয়া) রাতের খাবার দেয়া হয়নি।

খবর পেয়ে তিনি সকাল ১০টার দিকে মাদ্রাসার আবাসিক হলে উপস্থিত হয়ে গুরুতর অবস্থায় তার শিশু কন্যা সুমাইয়াকে উদ্ধার করে গৌরনদী হাসপাতালে ভর্তি করেন। এই ঘটনায় তিনি একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিয়েছেন।

বিষয়টি সত্যতা স্বীকার করে মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা জাহিদুল ইসলাম বলেন, এই ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষককে বহিস্কার করা হয়েছে। সেই ওই শিশুটিকে সুস্থ্য করে তোলার ক্ষেত্রে সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে।’

গৌরনদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় এখনও কেউ থানায় অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।”

1 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন