২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার

৮ ফেব্রুয়ারি অঘোষিত ১৪৪ ধারা জারি!

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১২:০২ অপরাহ্ণ, ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

চলতি মাসের ৮ই ফ্রেব্রুয়ারি বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মামলার রায় নিয়ে উত্ত্বপ্ত রাজনৈতিক মহল। রায়-সংক্রান্ত বিষয় এবং রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে আন্তর্জাতিক মহল।

একাধিক কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে- আন্তর্জাতিক মহল মনে করছে- ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলার রায় হবে বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটা টার্নিং পয়েন্ট। এ কারণে রায় কী হয় এবং রায়কে ঘিরে পরিস্থিতি কী দাঁড়ায় তা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলের ব্যাপক আগ্রহ তৈরি হয়েছে।

বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় ঘোষণার দিন ৮ ফেব্রুয়ারিতে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে বাস, রেল, লঞ্চসহ সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়া হবে।

রাজধানী ঢাকায় আসার প্রবেশপথ নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর-টঙ্গী, সাভার-আশুলিয়া ও কেরানীগঞ্জের রাস্তায় যানবাহন চলাচল বন্ধের জন্য বসানো হবে পুলিশের চেকপোস্ট। পরিবহন ও লঞ্চ মালিক-সমিতিও ওই দিন তাদের যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখবে এমন কথা জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাদের।

দৈনিক জনকণ্ঠ পত্রিকার প্রথম পাতায় প্রকাশিত খবরে শংকর কুমার দে’র প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এমন তথ্য। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়- রায়ের দিন বেগম খালেদা জিয়ার আদালতে যাতায়াতের সময় একমাত্র আইনজীবী ছাড়া অন্য কাউকেই গাড়িবহর কিংবা কোথাও বিএনপি ও তাদের জোটের নেতাকর্মীদের জমায়েত হতে দেয়া হবে না।

এছাড়াও ঐ প্রতিবেদনে ঐদিন অঘোষিত ১৪৪ ধারা জারি থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে। পুলিশ সদর দফতর সূত্রের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করা হয়, বিএনপি ও তার ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীদের রাজপথে দাঁড়াতেই দেবে না-এমন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে পুলিশ।

পুলিশ সদর দফতর সূত্রের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে আরো লিখেছে, বেগম খালেদা জিয়ার রায় ঘোষণার দিন ৮ ফেব্রুয়ারীতে রাজধানী ঢাকাসহ দেশব্যাপী নাশকতা, নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে পারে এমন আশঙ্কার তথ্যের ভিত্তিতে নজিরবিহীন নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে যাচ্ছে পুলিশ প্রশাসন। রায়কে ঘিরে কোন ধরনের নাশকতা ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করার আশঙ্কায় সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রাখা হবে পুলিশ, র‌্যাব, ডিবি, দাঙ্গা পুলিশ, গোয়েন্দা সংস্থাসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

রাজধানী ঢাকাসহ দেশব্যাপী পরিকল্পিতভাবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর আগেই কর্তব্যরত আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ডাইরেক্ট এ্যাকশনে যাওয়ার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ জন্য রাজধানী ঢাকার রাস্তায় রাস্তায় ব্যাপক চেকপোস্ট, টহল বৃদ্ধি, বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হবে। জটলাবেঁধে বিএনপি ও তার ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীদের দাঁড়াতে দেখলেই কঠোর এ্যাকশনে যাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

পুলিশ সদর দফতর সূত্রে জানা গেছে- বেগম খালেদা জিয়ার মামলার রায়ের দিন রাজধানী ঢাকাসহ সকল দেশের সকল মেট্রোপলিটন এলাকা, জেলা শহর, থানা পর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রাখার জন্য কৌশলগত পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। কোন ধরনের নাশকতা, নৈরাজ্য ও বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করার আগেই এ্যাকশনে যাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার আদালত থেকে ফেরার পথে অন্তত অর্ধডজন বার সহিংস সন্ত্রাসী কর্মকা-ে জড়িয়েছে বিএনপির নেতাকর্মীরা। সর্বশেষ হাইকোর্ট এলাকায় পুলিশের প্রিজনভ্যানে আক্রমণ করে বিএনপির কর্মী আসামি ছিনতাই, পুলিশ সদস্যদের বেধড়ক পিটুনি, পুলিশের আগ্নেয়াস্ত্র ছিনতাই করে ভাংচুর, গাড়ি ভাংচুর ও সন্ত্রাসের তা-বলীলা চালানো হয়েছে। এর আগে গত নবেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে এই ধরনের সহিংস সন্ত্রাসী কর্মকা-ে জড়িয়ে গাড়ি ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ,পুলিশের সঙ্গে মারামারি, নাশকতা ও নৈরাজ্য সৃষ্টির মাধ্যমে সহিংস সন্ত্রাসের তা-বলীলা চালিয়েছে। বেগম খালেদা জিয়া আদালত থেকে ফেরার পথে যেহেতু সহিংস সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটা অব্যাহত আছে সেহেতু রায় ঘোষণার দিন সহিংস সন্ত্রাসের ঘটনা যে ঘটবে না সেই নিশ্চয়তা নেই।

পরিবহন মালিক-শ্রমিক সংগঠনের একাধিক নেতার সঙ্গে আলাপ হলে তারা জানান, বেগম খালেদা জিয়ার রায় ঘোষণার দিনে যেভাবে বিএনপি ও তার ২০ দলীয় জোট অঘোষিত যুদ্ধের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে তাতে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি পরিবহনে আর যাতে অগ্নিকা- ও ভাংচুর করতে না পারে সেজন্য ওই দিন যানবাহন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে। এ ছাড়া পরিবহনের চালক, হেলপারের জীবনের নিরাপত্তার প্রশ্নটিও জড়িত। এমন পরিস্থিতিতে যানবাহন রাস্তায় নামানো নিরাপদ মনে করছেন না পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা। পুলিশ প্রশাসন কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দের আলাপ- আলোচনা অব্যাহত আছে বলে জানা গেছে।

পুলিশের আইজি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী দায়িত্ব গ্রহণের পরদিন পুলিশ সদর দফতরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেছেন, আমরা দৃঢ়তার সঙ্গে বলতে চাই বাংলাদেশ পুলিশ আইনের মধ্যে থেকে মানুষের নিরাপত্তা বিধানের জন্য, জানমালের নিরাপত্তা বিধানের জন্য আইনের মধ্য থেকে সর্বোচ্চ কঠোর অবস্থানে থাকবে।

4 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন