২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার

নলছিটিতে শিক্ষকদের সহায়তায় চলছে নকল উৎসব!

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৫:৫০ অপরাহ্ণ, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

ঝালকাঠির নলছিটিতে এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষায় শিক্ষকদের সহায়তায় প্রকাশ্যে নকলের মহোৎসব চলছে। নকলে সহায়তার দায়ে শনিবার উপজেলার গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্র থেকে দুই শিক্ষককে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।

অব্যাহতিপ্রাপ্ত শিক্ষকরা হলেন-নলছিটি গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের ধর্মীয় শিক্ষক মাওলানা মো. ফেরদাউস ও পাওতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আবু হানিফ। এছাড়া বিজি ইউনিয়ন একাডেমি কেন্দ্র থেকে নকল করার অপরাধে মো. রিপন জোমাদ্দার নামে এক পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

জানা গেছে, ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. বশির আহমেদ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নলছিটি গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ পরীক্ষাকেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে গণিত পরীক্ষায় নকলে সহায়তা ও দায়িত্ব অবহেলার কারণে ওই দুইজন শিক্ষক কক্ষ পরিদর্শক থেকে অব্যাহতি প্রদান করেন। ওই কেন্দ্রের সচিব মো. রেজাউল ইসলাম অব্যাহতি প্রদানের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

অপরদিকে বিজি ইউনিয়ন একাডেমি কেন্দ্র থেকে নকল করার অপরাধে মো. রিপন জোমাদ্দার নামে এক পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার করেছেন ওই কেন্দ্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মারুফ আহমেদ মিনার। বহিষ্কৃত রিপন জোমাদ্দার বিজি ইউনিয়ন একাডেমির ছাত্র বলে নিশ্চিত করেছেন ওই কেন্দ্রের সচিব মো. আলী হায়দার।

সরেজমিনে উপজেলার বিজি ইউনিয়ন কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, কয়েকজন শিক্ষক তাদের নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরীক্ষার্থীদের কাছে নকলের কাগজ তুলে দিচ্ছেন। এক রকম ঢাক-ঢোল পিটিয়েই কেন্দ্রে দায়িত্বে থাকা সবার সামনে তারা তাদের পরীক্ষার্থীদের হাতে তুলে দিচ্ছেন নকল। এসময় সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে পরীক্ষাকেন্দ্র সংলগ্ন একটি ফটোকপির দোকান থেকে দুই শিক্ষক পালিয়ে যায়। এর কিছুক্ষণ পরীক্ষার্থীদের হাতে নকল (ফটোকপি করা উত্তরপত্র)  দিতে গেলে মো. লিটন খান নামে স্থানীয় একজনকে ধাওয়া করে পুলিশ ও স্থানীয়রা।

এছাড়াও নলছিটি মার্চেন্টস স্কুল অ্যান্ড কলেজ, নলছিটি গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ, নলছিটি সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসা, মোল্লারহাট জেড.এ ভূট্টো ডিগ্রী কলেজ ও দপদপিয়া ইউনিয়ন ডিগ্রী কেন্দ্রে নকলের চিত্র একই দেখা গেছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক অভিভাবক জানান, পরীক্ষায় নকল করার সুযোগ করে দেওয়ার কথা বলে স্কুলের শিক্ষক ও অফিস সহকারীরা প্রত্যেক পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে ৫০০ টাকা করে নিয়েছেন। কয়েকজন শিক্ষক পরীক্ষা শুরুর আগে মুঠোফোনে নৈর্ব্যক্তিক ও রচনামূলক প্রশ্নপত্রের ছবি তুলে তা বাইরে নিয়ে যান। পরে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের শিক্ষকেরা সঠিক উত্তর লিখে তা পরীক্ষার হলে শিক্ষার্থীদের সরবরাহ করেন।

নলছিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আশ্রাফুল ইসলাম বলেন, নকলের বিষয়টি কঠোর নজরদারিতে রাখা হয়েছে। এরপরও যদি কেউ এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

1 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন