অপার সম্ভাবনাময় পর্যটন এলাকা গড়ে উঠেছে বরগুনার তালতলী উপজেলার নলবুনিয়া চর। তালতলীর ইউএনও’র বদরুদ্দোজা শুভ’র নামানুসারে এ চরের নাম রাখা হয় শুভ সন্ধ্যা সমুদ্রসৈকত পিকনিক স্পট। প্রতিদিন হাজার হাজার পর্যটকদের আগমনে মুখরিত থাকে এ পর্যটন এলাকা।
বনবিভাগ সূত্রে জানা গেছে- বরগুনার তালতলী উপকূলীয় বনবিভাগের আওতায় সিআরপিএআরপি প্রকল্পের নন ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল নৈসর্গিক প্রাকৃতিক সৌন্দয্যের লীলাভুমি নলবুনিয়ার চর। ২০০৬ সালে সিআরপিএআরপি প্রকল্পের অর্থায়নে ৫৮ হেক্টর জমিতে নন ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল গড়ে তোলে বন বিভাগ। এ বনে ঝাউগাছ, আকাশমনি, অর্জুন, খইয়্যা বাবলা, মাউন্ট, কালি বাবলা, বাদাম, কড়াই ও খয়েরসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ রয়েছে।’
বঙ্গোপসাগরের কোল ঘেষা দশ কিলোমিটার নলবুনিয়া বনাঞ্চল প্রাকৃতিক সৌন্দর্যর অপরূপ লীলাভূমি। এ বনাঞ্চলের সাগর প্রান্তে দাড়িয়ে সূর্যোদ্বয় ও সূর্য্যাস্তের অপরূপ ও মনোরম দৃশ্য উপভোগ করা যায়।
সাগরপাড়ে সবুজের সমারোহ, বন্যপ্রাণীর অবাধ বিচরণ ও পাখির কলতান মুখরিত বনাঞ্চল নলবুনিয়ার চর। গভীর অরণ্যের বুকচিরে এসব নৈসর্গিক দৃশ্য দেখতে দেখতে চোখে পড়বে সাগরের বিশালতা। বন বিভাগের বাহারী গাছের সমাহারে প্রকৃতি লীলাভূমি পর্যটকদের আকৃষ্ট করে। প্রতিদিন হাজার হাজার পর্যটক এখানে এসে প্রকৃতির অপার দৃশ্য উপভোগ করে।
বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন পায়রা নদীর মোহনায় চার কিলোমিটার এলাকাজুড়ে রয়েছে বিশাল ঝাউবন। এ ঝাউবনের পাশে সাগরের চরে গড়ে তোলা হয়েছে শুভ সন্ধ্যা সমুদ্রসৈকত পিকনিক স্পট। এই দৃশ্য দেখতে ও ঘুরতে ঘুরতে পর্যটকদের মন হারিয়ে যায় আশার চরের শুটকি পল্লীতে। এ পল্লীতে হাজার হাজার পরিবার শুটকি শুকানোর কাজে ব্যস্ত।
এ স্থানে দূর-দূরান্ত থেকে পর্যটকরা নৌ ও স্থল পথে আসছে। পর্যটকদের জন্য সুন্দর ও মনোরম পরিবেশে যাবতীয় সু-ব্যবস্থা রয়েছে এখানে। ঘুরতে ঘুরতে অপরূপ সৌন্দের্য্যরে প্রকৃতির মাঝে হারিয়ে যায় দর্শনার্থীরা। এমন সুন্দর হৃদয় ছোয়া বনভূমি ও সাগরের অলৌকিক মহিমাময় দৃশ্য যেন মনের গহীন হৃদয়কে আকৃষ্ট করে।
সরেজিমনে ঘুরে দেখা গেছে- চার কিলোমিটার ঝাউ বনের মধ্যে প্রকৃতি যেন আপন নিরিখে তৈরি। ঝাউ বনের লু-হাওয়া উত্তপ্ত হৃদয়কে শীতল করে দেয়। সাগর পাড়ের বালুকনা যেন পর্যটকদের পাদুকার অলঙ্কার। আশার চরের শুঁটকি পল্লীর গন্ধ যেন পর্যটকদের নাশিকার অলঙ্কার।
আমতলী থেকে আসা আঁচল ইন্টারন্যালনাল আইডিয়াল স্কুল, বন্দর মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও একে হাই সংলগ্ন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের শিক্ষা সফর ও বনভোজনে আসা ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবক ও সুধীজনের পদচারণায় মুখরিত নলবুনিয়ার শুভ সন্ধ্যা পিকনিক স্পট।’
শিক্ষার্থী কাজী মাঈশা, জিসাদ, আতিক, ওমর, নাজোয়া ও নাবিলা জানান, নলবুনিয়ার চরের অপরূপ সৌন্দর্য আমাদের মুগ্ধ করেছে আমাদের।
পর্যটক মো. সিদ্দিকুর রহমান স্বপন, মো. জিয়াউল হাসান সোহেল, আবদুল হক মাস্টার ও প্রভাষক মো. বশির উদ্দিন জানান শুভ সন্ধ্যা পিকনিক স্পট সৌন্দর্যের লীলাভূমির অপর নাম।
ঢাকার খিলগাঁও গোরান থেকে আসা পর্যটক ব্যাংকার আবদুল মালেক ও তার মেয়ে প্রভা বরিশালটাইমসকে জানান, সাগর সংলগ্ন বনভূমি চমৎকার। তারা যোগাযোগ ব্যবস্থার আরও উন্নতির দাবি জানান।
বনবিভাগের কর্মকর্তা মো. মোতালেব মিয়া জানান, প্রতিদিন এখানে হাজার হাজার পর্যটক আসে। পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য বনবিভাগ সার্বক্ষণিক নিয়োজিত থাকে।
ভ্রমণে আসা পর্যটক রেজাউল করিম শাহজাদা আকন বরিশালটাইমসকে বলেন, প্রকৃতিক সৌন্দর্যর লীলাভূমি নলবুনিয়ার চর। এখানে দাড়িয়ে পর্যটকরা সূর্যোদ্বয় ও সূর্য্যাস্ত দেখতে পারে। এ পর্যটক এলাকায় আরও আধুনিকায়নের প্রয়োজন।’
এ বিষয়ে আমতলী পৌর মেয়র মতিয়ার রহমান বরিশালটাইমসকে বলেন, নলবুনিয়ার শুভ সন্ধ্যা সমুদ্র সৈকত পিকনিক স্পট অতুলনীয়। একটু সরকারি পৃষ্টপোষকতা পেলে এ পর্যটন এলাকা আরো সমৃদ্ধ হবে। তিনি আরও বলেন, অপার সম্ভাবনাময় পর্যটন এলাকা নলবুনিয়ার চর দিন দিন প্রসারিত হচ্ছে।
নলবুনিয়ার চর পর্যটন এলাকা হিসেবে ঘোষণর সরকারের কাছে দাবি সকলের।’
শিরোনামবরগুনা