বরিশাল টাইমস রিপোর্ট
প্রকাশিত: ১২:৫১ পূর্বাহ্ণ, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭
গাজীপুরের জয়দেবপুরে দোকানে চিপস কিনতে গিয়ে নিখোঁজ মেহেদী হাসানকে (৪) ফিরে পেয়েছে তার পরিবার। মঙ্গলবার রাতেই মেহেদীর বাবা কাওছার মিয়ার কাছে ফোন করে শিশু মেহেদীর মুক্তিপণ বাবদ দুই লাখ টাকা দাবি করে অজ্ঞাত অপহরণকারী।
মুক্তিপণের টাকা পাঠাতে বলে বিকাশ নম্বরে। সবশেষ গত বুধবার বেলা ১২টার দিকেও অজ্ঞাত ওই দুষ্কৃতকারী ফের তার (কাওছার) কাছে ফোন করে মুক্তিপণের দুই লাখ টাকা দাবি করে।
টাকা না দিলে শিশু মেহেদীকে হত্যা করা হবে বলেও মুঠোফোনে তাকে হুমকি দেয়া হয়। বিষয়টি কাওছার মিয়া জয়দেবপুর থানা পুলিশকে অবহিত করে।
গত বুধবার বিকেলে বরিশাল নদী বন্দরের টার্মিনালে এক শিশুকে একা কাঁদতে দেখে জিজ্ঞাসাবাদ করেন নদী বন্দরের ট্রাফিক পরিদর্শক মো. রিয়াদ হোসেন। জিজ্ঞাসাবাদে শিশুটি তার নাম মেহেদী, বাবার নাম কাওছার, মায়ের নাম শাহিদা এবং বোনের নাম মাহিনুর ঠিকানা কখনো গাজীপুর বড়বাড়ি, আবার কখনো টঙ্গী বড় বাড়ি বলে তাদের জানায়।
তবে সে কিভাবে বরিশাল নদী বন্দরে এসেছে সে ব্যাপারে কিছু বলতে পারেনি। বন্দর কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদে শিশুটি বলেছে, তার এক চাচা তাকে চিপস কিনে দেয়ার কথা বলে নিয়ে এসেছে।
নদী বন্দরের ট্রাফিক পরিদর্শক মো. রিয়াদ হোসেন জানান, শিশুটি তাকে বলেছে, তার চাচা (অপহরণকারী) তাকে সেখানে বসিয়ে রেখে ফোন করতে গেছে। কিন্তু দীর্ঘক্ষণেও তার সঙ্গে থাকা লোকের উপস্থিতি না দেখে তারা বুঝতে পারেন শিশুটি দুষ্কৃতকারীদের খপ্পড়ে পড়েছে। এরপর বুধবার রাতেই তারা তাকে কোতয়ালী থানা পুলিশে সোপর্দ করেন।
অন্যদিকে, বিভিন্ন গণমাধ্যম ও ফেসবুকের কল্যাণে নিখোঁজ শিশুর সন্ধান জানতে পারে মেহেদীর বাবা। একই সঙ্গে জয়দেবপুর থানা থেকেও শিশু মেহেদী নিখোঁজের সাধারণ ডায়রির কথা জানানো হয় বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানা পুলিশকে।
বরিশাল মহানগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (এসি-কোতয়ালী) মো. আসাদুজ্জামান জানান, জয়দেবপুর থানা পুলিশের খবরের ভিত্তিতে এবং বিভিন্ন গণমাধ্যম ও ফেসবুকের কল্যাণে নিখোঁজ শিশুর খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার সকালে কোতয়ালী থানায় আসে মেহেদীর বাবা-মা। তাদের পরিচয় যাচাইয়ের পর শিশুটিকে দুপুরে তার বাবা-মায়ের কাছে বুঝিয়ে দেয়া হয়।
শিশুটির মুক্তিপণ বাবদ দুই লাখ টাকা দাবির বিষয়টি কোতয়ালী মডেল থানা পুলিশের কাছে গোপন রাখেন মেহেদীর বাবা-মা। আইনী ঝামেলা এড়াতে তারা বিষয়টি কোতয়ালী পুলিশের কাছে গোপন রেখেছে বলে নদী বন্দর পরিদর্শক মো. রিয়াদ হোসেনকে জানিয়েছে।
কাওছার মিয়া জানান, মঙ্গলবার রাতেই তার কাছে ফোন করে শিশু মেহেদীর মুক্তিপণ বাবদ দুই লাখ টাকা দাবি করে অজ্ঞাত অপহরণকারী। মুক্তিপণের টাকা পাঠাতে বলে বিকাশ নম্বরে। সবশেষ বুধবার বেলা ১২টার দিকেও অজ্ঞাত ওই দুষ্কৃতকারী ফের তার (কাওছার) কাছে ফোন করে মুক্তিপণের দুই লাখ টাকা দাবি করে। টাকা না দিলে শিশু মেহেদীকে হত্যা করা হবে বলেও মুঠোফোনে তাকে হুমকি দেয় অপহরণকারী। বিষয়টি কাওছার মিয়া জয়দেবপুর থানা পুলিশকে অবহিত করে।
শিশুটিকে ফিরে পেয়ে নদী বন্দর কর্মকর্তা, পুলিশ এবং গণমাধ্যমের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন তার বাবা কাওছার মিয়া ও মা শাহিদা বেগম। হারানো সন্তানকে ফিরে পেয়ে আনন্দে আত্মহারা তারা।