বরিশালটাইমস, ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৭:৫৪ অপরাহ্ণ, ১১ ডিসেম্বর ২০২৩
আদালতে বিচারককে জুতা নিক্ষেপ করলেন নারী
নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: পঞ্চগড় আদালতে একটি হত্যা মামলার আসামিদের জামিন মঞ্জুর করায় ক্ষিপ্ত হয়ে বিচারকের প্রতি জুতা নিক্ষেপ করেছেন মামলার বাদী। আজ সোমবার (১১ ডিসেম্বর) দুপুরে পঞ্চগড় সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত পঞ্চগড়-১ এ এই ঘটনা ঘটে। বিচারককে জুতা নিক্ষেপকারী মিনারা আক্তার (২৫) নামের ওই নারীকে আদালতেই আটক করে পুলিশ।
আইনজীবী ও বাদীর স্বজনরা জানান, গত ৫ ডিসেম্বর পঞ্চগড় সদর উপজেলার সাতমেরা ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া গ্রামে জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে ছোট ভাই আব্দুল মমিনের (৬৫) কিলঘুষিতে বড় ভাই ইয়াকুব আলী (৮৩) মারা যান। এ ঘটনায় ওই দিন রাতেই নিহত ইয়াকুব আলীর মেয়ে মিনারা আক্তার বাদী হয়ে পঞ্চগড় সদর থানায় ১৯ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় সোমবার দুপুরে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত পঞ্চগড়-১ এ ১৯ জন আসামির মধ্যে ১৬ জনকে আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন।
আদালতের বিচারক অলরাম কার্জি শুনানি শেষে সকল আসামিকে অন্তবর্তীকালীন জামিনের আদেশ দিলে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন বাদী। এ ঘটনায় আদালতে হট্টগোল শুরু হয়। এ সময় বাদী মিনারা আক্তার ক্ষিপ্ত হয়ে বিচারকের উদ্দেশ্যে জুতা নিক্ষেপ করেন। তাৎক্ষনিক পুলিশ আদালত থেকে মিনারা বেগমকে আটক করে হেফাজতে নেন। পরিবেশ থমথমে হয়ে উঠলে আদালতের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় দুই ঘণ্টার পর আবার আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়।
মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী হাবিবুল ইসলাম হাবিব বলেন, গত কয়েক দিন আগে বাদীর বাবা মারা গেছেন। আজ (সোমবার) তাদের বাড়িতে কুলখানি হচ্ছে। এ অবস্থায় একটি হত্যা মামলায় জামিনের জন্য আবেদন করা সব আসামিকে জামিন দেয়া কোনোভাবে কাম্য নয়।
বিচারকের এমন আদেশে আমরা আদালত ত্যাগ করে চলে এসেছি। ৩০২ ধারার অজামিন যোগ্য একটি হত্যা মামলার আসামিদের কীভাবে কেন জামিন দিল? এটা বোঝা যাচ্ছে না। হত্যাকান্ডের ৭ দিনের মাথায় আসামিরা জামিন পায় আইনজীবী হিসেবে এটা আমরা কখনো দেখি নাই।
এদিকে আসামি পক্ষের আইনজীবী রাকিবুত তারেক বলেন, আসামিদেরকে আগামী ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত অন্তবর্তীকালীন জামিন দিয়েছেন আদালত। আর মামলার যারা মূল আসামি তারা আত্মসমর্পণ করেননি। যারা আত্মসমর্পণ করেছে তাদের অধিকাংশই ছিল নারী। এছাড়া আসামিদের বক্তব্য ছিল ওই ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়নি, তিনি হার্ট অ্যাটাকে মারা গেছেন। আর যেহেতু মামলার জব্দ তালিকায় এবং সুরতহাল রিপোর্টের নথিতে এই তথ্য নেই তাই হয়তো সার্বিক বিবেচনা করে আদালত তাদের জামিন দিয়েছেন।
এ বিষয়ে জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুল বারী বলেন, আদালতে চলাকালীন একটি অনাকাঙ্খিত ঘটনার খবর শুনেছি। এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে কেউ এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ করেনি। যার কারণে সমিতির পক্ষ থেকে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। আদালতের পরিদর্শক মো. জামাল হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মিনারা আক্তার এখন আদালত পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। আদালতের সিদ্ধান্ত পেলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে। সর্বশেষ সন্ধা ছয়টা পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত জানা যায়নি।