বরিশাল টাইমস রিপোর্ট
প্রকাশিত: ০৭:২৬ অপরাহ্ণ, ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৬
খিলাফত প্রতিষ্ঠার জন্য আনসারুল্লাহর টার্গেট ১০ লাখ লোক। এছাড়া কারাগার থেকে আদালতে আনা-নেওয়ার পথে হামলা চালিয়ে দলের শীর্ষ নেতা জসিম উদ্দিন রাহমানীসহ বন্দি নেতাদের মুক্ত করার পরিকল্পনা করেছিল সংগঠনটির সদস্যরা। আনসারুল্লাহর গাজীপুর জেলার প্রধান সমন্বয়কারী রাশেদুল ইসলাম শাওনসহ তিন জন গ্রেফতার হওয়ার পর র্যাবকে এ তথ্য জানায় তারা।
শনিবার দুপুরে উত্তরার র্যাব-১ এর ব্যাটালিয়ন সদর দফতরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লেফটেন্যান্ট কর্ণেল তুহিন মোহাম্মদ মাসুদ জানান, ‘আনসারুল্লার গাজীপুর জেলার প্রধান সমন্বয়কারী রাশেদুল ইসলাম স্বপন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, ২০১৪ সালের মার্চ মাসে মুফতি জসিমউদ্দিন রাহমানীর একটি বক্তৃতা ইন্টারনেটে শোনার পর সে তার ভক্ত হয়ে ওঠে। পরে একটি গার্মেন্টসে চাকরি করার সময় আব্দুল কুদ্দুস নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে তার পরিচয় হয়। এই কুদ্দুসের মাধ্যমে সে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। আব্দুল কুদ্দুস তাকে আরও বেশি করে সাংগঠনিক বই পড়ার জন্য উদ্ধুদ্ধ করে।’
লেফটেন্যান্ট কর্ণেল তুহিন মোহাম্মদ মাসুদ জানান, ‘কিছুদিন পর আব্বাস নামের আরেক ব্যক্তির সঙ্গে রাশেদুলকে পরিচয় করিয়ে দেয় কুদ্দুস।পরে রাশেদুল জানতে পারে, আব্বাস আনসারুল্লাহর ঢাকা বিভাগের অন্যতম সমন্বয়ক। টার্গেট কিলিংয়ের জন্য সে বিভিন্ন স্লিপার সেলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতো। ২০১৫ সালের কোনও এক সময় স্বপন ও আরও কয়েকজন এই আব্বাসের মাধ্যমে আল-কায়দার আইমান আল জাওয়াহিরির নামে বায়াত নেয়। ধীরে ধীরে স্বপন গাজীপুর এবং আশে পাশের এলাকা থেকে কর্মী সংগ্রহ শুরু করে এবং পরে সে এই এলাকার সমন্বয়কের দায়িত্ব পায়। রাশেদের সহযোগী বিপ্লব হোসেন ওরফে হুজাইফাকে গ্রেফতার সম্ভব হয়। তবে মানিক ওরফে জুয়েলসহ আরও কয়েকজন সহযোগীকে তারা গ্রেফতারের খুঁজছেন।’
সংবাদ সম্মেলনে তুহিন মোহাম্মদ মাসুদ আরও জানান, ‘আনসারুল্লাহর সদস্যরা বিভক্ত হয়ে বিভিন্ন এলাকায় কাট আউট পদ্ধতিতে কাজ করতো। এক গ্রুপের সদস্যরা অন্য গ্রুপের সদস্যদের চিনতো না। নিরাপদ মাধ্যম হিসেবে তারা `TOR BROWSER Ges TOTANUTA’ মেইল ব্যবহার করতো। শুধু গ্রুপ প্রধানরাই অন্য গ্রুপের প্রধানদের চিনতো।ওই গ্রুপের সদস্যরা স্বপনকে অস্ত্র সংগ্রহের জন্য ১০ লাখ টাকা দিতে চেয়েছিল এবং ওই টাকা দিয়ে সে যশোর এলাকা থেকে অস্ত্র কেনার পরিকল্পনা করেছিল।‘
গ্রেফতার হওয়া রাশেদুল র্যাবকে আরও জানায়, তারা একিউআইএস (AQIS)
এর মতাদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে দেশে জঙ্গি কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তাদের অন্যতম লক্ষ্য ছিল কাশিমপুর কারাগারে হামলা করা। এজন্য তারা কাশিমপুর এলাকায় কয়েকটি গ্রুপের সঙ্গে সমন্বয় করে হামলার সুযোগের অপেক্ষায় ছিল। এছাড়া মুফতি রাহমানী ও অন্যান্য এবিটি নেতারা আদালতে হাজিরা দেওয়ার সময় রাস্তায় হামলা করে, তাদের ছিনিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনাও ছিল তাদের। তারা কয়েকজন নাস্তিক ব্লগার ও লেখককে হত্যার পরিকল্পনাও করেছিল।
র্যাব জানায়, মুফতি জসিম উদ্দিন রাহমানী ছাড়াও তাদের আরেক তাত্ত্বিক নেতার নাম জানা গেছে।তার নাম হচ্ছে তামিম আল-আদনানি। সে বর্তমানে মালয়েশিয়াতে অবস্থান করছে।