বরগুনা: বরগুনায় পুরোহিতকে হত্যার হুমকি দিয়ে চিঠি পাঠানো ব্যক্তিরা কিলিং মিশনে সেখানে অবস্থান করছেন বলে দাবি করেছেন। তারা চিঠিতে উল্লেখ করেছেন, ‘আমরা এখন কিলিং মিশনে আছি বরগুনায়’।
তবে এই ‘আমরা’টা কে? আদৌ তারা কিলিং মিশনে বরগুনায় অবস্থান করছেন কিনা সেটা কিন্তু নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ। তাদের পরিচয়ও শনাক্ত করার কোনো সূত্র খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
শনিবার সকালে বরগুনার সার্বজনীন কালিবাড়ি মন্দিরের পুরোহিত সঞ্জয় চক্রবর্তী মন্দিরে পূজো দিতে যান। এসময় মন্দিরের মেঝেতে লাল কালিতে লেখা একটা কাগজ পড়ে থাকতে দেখেন। সেটা হাতে তুলে নিয়ে দেখতে পান হুমকি দিয়ে কিছু লেখা রয়েছে।
কাগজটিতে লেখা হয়েছে, ‘তোর মাথা নিয়ে যাবো- এই আমাদের ইচ্ছা। আমরা এখন কিলিং মিশনে আছি বরগুনায়’। শুধুই এইটুকই নয়, বিভিন্ন হুমকিমূলক আরো কথাও লেখা হয়েছে। চিঠির প্রেরক হিসেবে লেখা হয়েছে- পুরোহিত হত্যা সংগঠন।
সকালেই মন্দির কর্তৃপক্ষ পুরোহিতকে হত্যার হুমকির বিষয়টি গণমাধ্যম কর্মীসহ পুলিশকে অবহিত করে। একই সঙ্গে বরগুনা সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন সঞ্জয় চক্রবর্তী।
সন্ধ্যা ৬টার দিকে বরগুনার পুলিশ সুপার বিজয় বসাক কালিবাড়ি মন্দির পরিদর্শন করেন। তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও মন্দির কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেন। বাংলামেইলকে জানান, খবর পাওয়ার পর থেকে গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে বিষয়টি। পাশাপাশি মন্দিরে নিরাপত্তা বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
প্রশ্ন উঠছে, হুমকিদাতারা জঙ্গি গোষ্ঠীর সদস্য কিনা? যদি তাই হয়, তাহলে বরগুনায় তাদের টার্গেট কারা, সেটা জানা জরুরি। সেই মোতাবেক আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর তাৎপরতা বাড়ানো প্রয়োজন বলে মনে করছেন অনেকেই।
পুরোহিত সঞ্জয় চক্রবর্তী বলেন, সকালে মন্দিরে পূজো দিতে গিয়ে কাগজটি পড়ে থাকতে দেখি। লাল কালিতে কাগজে লেখা ছিল, ‘তোর মাথা নিয়ে যাবো- এই আমাদের ইচ্ছা। আমরা এখন কিলিং মিশনে আছি বরগুনায়’। আরো হুমকিমূলক কথাবার্তাও লেখা ছিল।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি ঢাকার রামকৃষ্ণ মিশনের ধর্মগুরুকে উড়ো চিঠি পাঠিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দেয়া হয়। এর কদিন পর একই ভাবে হত্যার হুমকি দেয়া হয় রাজধানীর সবুজবাগের বাসাবো বৌদ্ধ মন্দিরের পুরোহিতকে। এর জের কাটতে না কাটতেই শুক্রবার দিনগত রাতে ঢাকার গুলশানের হলি আর্টিসান রেস্টুরেন্টে রক্তাক্ত সন্ত্রাসী হামলায় স্তব্ধ আর হতবাক হয়ে পড়ে দেশ। আর এই স্তব্ধতার মধ্যেই বরগুনায় পুরোহিতকে হত্যার হুমকি দিয়ে চিঠি পাঠানো হলো।
টাইমস স্পেশাল, বরগুনা