২৫ মিনিট আগের আপডেট রাত ৯:২০ ; রবিবার ; মার্চ ২৬, ২০২৩
EN Download App
Youtube google+ twitter facebook
×

আরাভ খানের ৬ বিয়ে, হঠাৎ উত্থানে বিস্মিত চাচাতো ভাই

বরিশালটাইমস, ডেস্ক
১:৪১ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ১৭, ২০২৩

আরাভ খানের ৬ বিয়ে, হঠাৎ উত্থানে বিস্মিত চাচাতো ভাই

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: দুবাইয়ে স্বর্ণের দোকান উদ্বোধন করে সারা দেশে আলোচনায় আরাভ খান। একজন পুলিশ কর্মকর্তা খুনের মামলার অন্যতম আসামি তিনি। তাঁর দোকান উদ্বোধন করেছেন তারকা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে বা দূর থেকে শুভেচ্ছা জানিয়ে ভিডিও বার্তা দিয়েছেন দেশের অনেক তারকা।

তবে এই আরাভ খানের—যেটি তাঁর আসল নামও নয়—হঠাৎ এত অর্থবিত্তের মালিক হওয়া নিয়ে বিস্মিত খোদ এলাকাবাসী ও আত্মীয়স্বজন। একজন দরিদ্র ফেরিওয়ালার সন্তান, পড়াশোনার দৌড় এসএসসি পাস। তিনি কী করে দুবাইয়ের মতো জায়গায় কোটি কোটি টাকার ব্যবসায় নামলেন, সে হিসাব কেউ মেলাতে পারছেন না।

হত্যা মামলার আসামি আরাভ খান আজ বৃহস্পতিবার ফেসবুক লাইভে এসে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিষয়ে কথা বলেছেন। আরাভ খান বলেছেন, ‘মামলা হয়েছে এ কথা সত্য।

তবে আমি কোনো হত্যাকাণ্ডে জড়িত নই। পুলিশ আমাকে অস্ত্র মামলায় জেলে দিয়েছে। এ কথা সত্য। তবে আমি দোষী না। আমি অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গিয়ে বিভিন্ন সময় জেলে গিয়েছি। আবার জামিনে বেরিয়ে এসেছি। আদালত যদি আমাকে সাজা দেয়, তাহলে আমি সে সাজা মাথা পেতে নেব।’

অনেক যুদ্ধ করে আজ এই অবস্থানে এসেছেন উল্লেখ করে আরাভ খান বলেন, ‘আমি একজন দিনমজুরের ছেলে। আমি ঢাকায় এসে অনেক কষ্ট করেছি। হোটেলে কাজ করেছি। অনেক কষ্ট করে আমি আজ এ অবস্থানে এসেছি। আল্লাহ যদি আমাকে সুস্থ রাখে তাহলে শিগগিরই দেশের ৬৪টি জেলায় মসজিদ নির্মাণ করব।’

অনেক আলোচনা-সমালোচনার পরও সাকিব আল হাসান তাঁর স্বর্ণের দোকান উদ্বোধন করতে দুবাই যাওয়ার জন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন আরাভ খান।

আরাভ খানের বাড়ি গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার আশুনিয়া গ্রামে। ওই গ্রামের দিনমজুর মতিয়ার রহমান মোল্লার ছেলে তিনি। স্থানীয় ও আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মতিয়ার রহমান মোল্লা একসময় বাগেরহাট জেলার চিতলমারী উপজেলায় ফেরি করে অ্যালুমিনিয়ামের হাঁড়ি-পাতিল বিক্রি করতেন। সেখানেই ১৯৮৮ সালে আরাভ খানের জন্ম। মা-বাবা নাম রেখেছিলেন সোহাগ মোল্লা। ২০০৫ সালে চিতলমারী সদরের একটি বিদ্যালয় থেকে তিনি এসএসসি পাস করেন।

দারিদ্র্যে কারণে আর লেখাপড়া হয়নি। চিতলমারী থেকে ২০০৮ সালে ভাগ্যের অন্বেষণে ঢাকায় চলে আসেন। নাম পরিবর্তন করে রাখেন মোল্লা আপন। ঢাকায় পুলিশ হত্যাসহ বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাণ্ডের অভিযোগে বিভিন্ন থানায় তাঁর বিরুদ্ধে ডজনখানেক মামলা হয়।

খুনের ঘটনার পর তিনি পলাতক থাকেন। বারবার নাম পরিবর্তন করেন—সোহাগ মোল্লা, মোল্লা আপন, রবিউল ইসলাম রবি, শেখ হৃদি এরপর আরাভ খান। পুলিশ হত্যা মামলার পর ভারতের কলকাতায় পালিয়ে যান। সেখান থেকে যান দুবাই।

স্থানীয়রা জানান, সোহাগ মোল্লা আগে মাঝেমধ্যে এলাকায় আসতেন। দামি গাড়ি, মোটরসাইকেল ব্যবহার করতেন। নানা নামে এলাকায় পোস্টারিং করতেন। ২০০৯ সালে আপন মোল্লা নামে দক্ষিণ ছাত্রলীগের সহসভাপতি পরিচয়ে পোস্টারিং করেন। বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয় ছাত্রলীগ আপত্তি জানায়। এরপর তিনি এলাকা ছেড়ে চলে যান।

সোহাগ মোল্লার চাচাতো ভাই ফেরদৌস মোল্লার সঙ্গে কথা হয় এ প্রতিবেদকের। ফেরদৌস বলেন, সোহাগ মোল্লা মাঝেমধ্যে তাঁদের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করতেন। বলতেন, বড় ব্যবসা করছেন। এলাকার লোকজনকে টাকাপয়সা দিয়ে সাহায্য করেন। প্রতিবার পাঁচ-ছয়টি গরু কোরবানি করে এলাকার মানুষকে খাওয়ান।

সোহাগ মোল্লা অল্প দিনে এত টাকার মালিক হওয়ায় বিস্ময় প্রকাশ করেন ফেরদৌস মোল্লা। ফেরদৌস জানান, সোহাগ মোল্লা ছয়টি বিয়ে করেছেন। সর্বশেষ বিয়ে ভারতে। সেই স্ত্রীকে নিয়ে এখন দুবাইয়ে থাকেন। কয়েক দিন আগে তাঁর মা-বাবা ও দুই বোন এলাকা ছেড়েছেন। তাঁরা বলে গেছেন, দুবাই যাচ্ছেন।

ফেরদৌস মোল্লার বাবা ডাক্তার আতিয়ার মোল্লা একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। ফেরদৌস বিদেশে ছিলেন। এখন কৃষিকাজ করে সংসারে বেশ সচ্ছলতা এনেছেন। তবে সোহাগ মোল্লার বাবার আর্থিক অবস্থা কখনোই ভালো ছিল না।

এ ব্যাপার জানতে চাইলে হিরণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাজাহারুল আলম পান্না বলেন, ‘সোহাগ মোল্লা ওরফে আরাভ খান একই ব্যক্তি। আমার গ্রামেই তার বাড়ি। সে একটি দরিদ্র পরিবারের সন্তান। পাঁচ-সাত বছর ধরে সে এলাকায় আসে না। হঠাৎ করে সে কীভাবে এত টাকার মালিক হলো—এটা আমাদের বোধগম্য নয়।’

সোহাগ মোল্লা ওরফে আরাভ খানের বিরুদ্ধে মামলার খোঁজ নিতে গেলে কোটালীপাড়া থানার ওসি মো. জিল্লুর রহমান বলেন, ‘তাঁর নামে এ পর্যন্ত ৯টি ওয়ারেন্ট আমার থানায় এসেছে। আমি ওয়ারেন্টগুলো তামিল করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু তাঁর কোনো হদিস আমরা পাইনি।’

এদিকে আজ ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিএমপি ডিবি) প্রধান হারুন অর রশীদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘ (আরাভ খান) আমাদের একজন মেধাবী পুলিশ কর্মকর্তাকে খুন করেছে। কেবল খুনই করেনি, লাশ গুম করার জন্য পুড়িয়েছে। সেই ঘটনাটি আমরা জেনেছি, সেই ব্যক্তি অপরাধী তা গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। তারপরও তার অনুষ্ঠানে সাকিব আল হাসানসহ কয়েকজনের অংশগ্রহণ দুঃখজনক।’

সাকিব আল হাসানসহ সবাইকে জানানো হয়েছে। এরপরও তাঁরা কেন খুনির অনুষ্ঠানে গেলেন, তা তাঁরা বুঝতে পারছেন না উল্লেখ করে ডিবির প্রধান বলেন, ‘তদন্তের স্বার্থে প্রয়োজন মনে করলে তাঁদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। যারা সেখানে গিয়েছেন, যাদের নাম আসছে, সেই বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখব।’

২০১৮ সালের ৮ জুলাই বনানীতে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন মামুন ইমরান খান। পরদিন তাঁর মরদেহ গাজীপুরের উলুখোলার একটি জঙ্গলে নিয়ে পেট্রল ঢেলে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। ওই মামলার আসামি রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ খান সম্প্রতি আলোচনায় আসেন দুবাইয়ে ‘আরাভ জুয়েলার্স’ নামে একটি গয়নার দোকান উদ্বোধন করে।

দোকানটির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ছিলেন সাকিব আল হাসান, ইউটিউবার হিরো আলম, নির্মাতা দেবাশীষ বিশ্বাস, গায়ক ইসরাত জাহান জুঁই, আরফিন আকাশ, মাইনুল আহসান নোবেল, জাহেদ পারভেজ পাবেল, বেলাল খান ও রুবেল খন্দকার।

২০১৯ সালের ৮ এপ্রিল মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক শেখ মাহবুবুর রহমান সিএমএম আদালতে পুলিশ মামুন ইমরান খান হত্যা মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

জাতীয় খবর

আপনার মমত লিখুন :

 
ভারপ্রাপ্ত-সম্পাদকঃ শাকিব বিপ্লব
© কপিরাইট বরিশালটাইমস ২০১২-২০১৮ | বরিশালটাইমস.কম
বরিশালটাইমস মিডিয়া লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান।
ইসরাফিল ভিলা (তৃতীয় তলা), ফলপট্টি রোড, বরিশাল ৮২০০।
ফোন: +৮৮০২৪৭৮৮৩০৫৪৫, মোবাইল: ০১৮৭৬৮৩৪৭৫৪
ই-মেইল: [email protected], [email protected]
© কপিরাইট বরিশালটাইমস ২০১২-২০১৮
টপ
  কঠোর সৌদি সরকার: সপ্তাহে ১৭ হাজার প্রবাসী গ্রেপ্তার  রোজার নিয়ত বাংলা উচ্চারণ ও অর্থসহ  সুস্থ থাকতে প্রচুর ভালোবাসতে হবে : জায়েদ খান  চলন্ত মোটরসাইকেলে ফণা তুলে বসলো বিষধর সাপ  হিজলায় ভিজিডির চাল আত্মসাৎ: ইউএনও’র কাছে অভিযোগ  রাজাপুরে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানে ইফতার মাহফিল  বরিশালে এমপির সামনে আ.লীগ নেতাকে মারধর: তিনজনকে সাময়িক বহিষ্কার  দুর্দশায় আফগানরা, চা-বিস্কুট খেয়ে রাখছেন রোজা  কোমরে পিস্তল গুঁজে ছবি পোস্ট করা সেই ছাত্রলীগ নেতা আটক  বাউফল আওয়ামী লীগ নেতাকে কোপানোর ছবি ভাইরাল!