ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা: বাজারে বেড়েছে মুরগির দাম!
নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: বাজারে ইলিশ সংকটের অজুহাতে মুরগির দাম বাড়িয়েছেন ব্যবসায়ীরা। রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে মুরগির দাম। এছাড়া ডিম, পেঁয়াজ, আটা ও পামওয়েল তেলের দামও সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, এতোদিন সবাই ইলিশ মাছ কেনায় মুরগির বিক্রি কম ছিল। তাই খামারিরা উৎপাদন কমিয়ে দেয়। এখন ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা থাকায় বাজারে ইলিশ নেই। মুরগি বিক্রি বেড়ে গেছে।
তবে চাহিদা মতো সরবরাহ না থাকায় বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। তাই বেশি দামে বিক্রি করছি। এ বিষয়ে কারওয়ানবাজারের ব্রাদার্স চিকেন ব্রয়লার হাউজের ব্যবসায়ী আবদুল মোতালেব বলেন, বাজারে ইলিশ মাছ না থাকায় ক্রেতারা মুরগি বেশি কিনছেন। মুরগির চাহিদা বাড়লেও যোগান কম।
তাই দাম বেড়ে গেছে। নিষেধাজ্ঞা শেষ হলে বাজারে যখন ইলিশ আসা শুরু হবে তখন ধীরে ধীরে মুরগির দাম কমে যাবে। রাজধানীর বাজারে প্রতি কেজি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা পর্যন্ত। এক সপ্তাহ আগে বিক্রি হয়েছে ১৬৫ থেকে ১৮০ টাকায়।
শুধু মুরগির দাম নয় একই সঙ্গে বেড়েছে ডিমের দামও। ফার্মের লাল ডিম পাইকারিতে প্রতি ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৪৩ থেকে ১৪৫ এবং খুচরায় ১৫০ টাকায়। হাঁসের ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৯০ থেকে ১৯৫ টাকা এবং দেশি মুরগির ডিমের ডজন ২১০ থেকে ২২০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।
কেজিতে ৫টাকা বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। এক সপ্তাহ আগে ৪০ টাকায় বিক্রি হওয়া দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকায়। আর আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়। কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে ২২০ টাকার আদা বিক্রি হচ্ছে ২৪০ টাকায়।
ব্যবসায়ীদের দাবি মুখে চলতি মাসের ৬ অক্টোবর চিনির দাম বেঁধে দেয় সরকার। এতে প্রতি কেজি খোলা চিনির দাম নির্ধারণ করা হয় ৯০ টাকা ও প্যাকেটজাত খোলা চিনির দাম হয় ৯৫ টাকা । এটি এখনো বাজারে কার্যকর হয়নি। আদৌ কার্যকর হবে কিনা তা নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়। ব্যবসায়ীরা সেই পুরনো অজুহাত দিচ্ছেন এখনো। তারা বলছেন সরকার দাম বৃদ্ধির আগে থেকেই আমরা ৯০ টাকায় চিনি বিক্রি করি।
এখন দাম বাড়ানোর পর পাইকারিতে দাম বেড়েছে । বেশি দামে কিনতে হচ্ছে তাই ৯৫ টাকায় বিক্রি করছি। বাজারে খোলা চিনি কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৯৫ টাকায় এবং প্যাকেট চিনি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা।
আগে প্যাকেট চিনি কেজি ছিল ৯৫ টাকায়। আর লাল চিনির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০৫ টাকায়। সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে খোলা আটার দাম কেজিতে ৩ টাকা বেড়েছে। প্রতি কেজি খোলা আটা বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৫৮ টাকা। গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ৫২ থেকে ৫৫ টাকা।
এক সপ্তাহ আগে ৫৫ টাকায় বিক্রি হওয়া প্যাকেট আটা ৫৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে । এছাড়া দেশি মসুরের ডাল কেজি ১৪০ টাকা। ইন্ডিয়ান মসুরের ডালের কেজি ১০০ টাকা কেজি দরে। রাজধানীর বাড্ডা এলাকার একাধিক বাজার ঘুরে দেখা যায়, ছোট সাইজের রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩২০ টাকা কেজি। যা গত মাসেও বিক্রি হয়েছে ২৮০ থেকে ২৯০ টাকায়। আকার ভেদে পাবদা মাছ সাড়ে ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
বেলে মাছ সাড়ে ৭০০ টাকা কেজি। টেংরা মাছ ৭০০ টাকা । এছাড়া চিংড়ি ৪০০ থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় অপরিবর্তিত রয়েছে সবজির দাম। বাজারে প্রতি কেজি টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা, বেগুন ৬০ টাকা, করলা বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা, ছোট এক টুকরো মিষ্টি কুমড়োর দাম ৬০ টাকা, কাঁচামরিচ ১২০ টাকা কেজি, আলু ৩০ টাকা।
সপ্তাহের ছুটির দিনে শিম বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা কেজিতে। ১৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে গাঁজর। এছাড়া, লতি ৭০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৭০ থেকে ৮০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, পটল ৫৫ টাকা ও মুলা ৫০ টাকায় কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে পুঁইশাক ২৫ থেকে ৩০ টাকা আটি, পালং ১৫ টাকা, লাউ শাক ৩০ টাকা, কলমি ও লাল শাক ২০ টাকায় আটি বিক্রি হচ্ছে। বাজারে আকারভেদে বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। শসা কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়। লম্বা বেগুনের কেজি ৮০, গোল বেগুন ১২০, করলা ৮০ টাকা, প্রতি পিস লাউ আকারভেদে বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়, ধুন্দলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়।
শিরোনামজাতীয় খবর