বরিশালের উজিরপুর উপজেলার শিকারপুর ও বামরাইল ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন (এসডিএফ) পরিচালিত সামাজিক উন্নয়ন কর্মসূচি এখন অনিয়ম-দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে।
ওই দুই ইউনিয়নে সংস্থাটির গঠিত গ্রাম সমিতির সভাপতি ও সেক্রেটারিসহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, হতদরিদ্রদের ভাগ্য উন্নয়নের অর্থ ভুয়া নামে উত্তোলন, কমিটি প্রধানের অন্যায় সুবিধা অর্জন, আত্মসাৎ ও স্বজনপ্রীতির অন্তহীন অভিযোগ রয়েছে।
ওই সংস্থার বামরাইল ইউনিয়নের মোড়াকাঠি গ্রামের সমিতির সভাপতি আম্বিয়া বেগমের বিরুদ্ধে সদস্যদের নামে ঋন উত্তোলণ করে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। অনুসন্ধানে সত্যতাও মিলেছে।
ওই সমিতির একজন সদস্য স্থানীয় গোলাম কিবরিয়া ফরাজীর স্ত্রী। তার নামে ২০ হাজার টাকা ঋণ উত্তোলন করে অবৈধভাবে আরেক সদস্যকে নিয়ে আত্মসাত করেছেন সভাপতি আম্বিয়া বেগম।
অবৈধভাবে ঋন উত্তোলনের কথা আম্বিয়া বেগম সাংবাদিকদের কাছে অকপটে স্বীকার করে বলেন, উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিষয়টি জানেন। এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে এটা করেছি।
এদিকে শিকারপুর ইউনিয়নের পূর্ব শিকারপুর সমিতির সভাপতি সাহিনা বেগম ওই ইউনিয়নের দায়িত্বে থাকা এসডিএফ’র কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সহায়তায় নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি করে আসছেন।
গ্রামের হতদরিদ্র শ্রেণীর লোকজনদের সমিতির সদস্য করে নেয়ার কথা থাকলেও তিনি (সাহিনা) বেআইনীভাবে তার ইচ্ছানুযায়ী সদস্য করে নিয়েছেন। তার মনোনীত পছন্দ ব্যক্তি সদস্যদের ইচ্ছামত বেশী করে ঋণ প্রদান, সদস্যদের জমাকৃত টাকা ব্যাংকে এবং আদায়কৃত সঞ্চয়ের টাকা ব্যাংকে জমা না করে নিজ হাতে রাখা, নিয়মিত কমিটির সভা না দেয়া, খাতাপত্রে সদস্যদের স্বাক্ষর না নিয়ে নানা দুর্নীতি করে আসছে।
এছাড়া ওই সমিতির সদস্য হতদরিদ্র বিধবা বকুল বেগমের নামে ১০ হাজার টাকা ঋণ উত্তোলন করে অবৈধভাবে অন্য সদস্যকে দিয়েছেন ও কহিনুর বেগম নামে আরেক দরিদ্র সদস্যের নামে ৫ হাজার টাকা ঋণ উত্তোলন করে সভাপতি সাহিনা বেগম নিজেই আত্মসাত করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বিষয়টি অভিযুক্ত সমিতির সভাপতি সাহিনা বেগম স্বীকার করে এই প্রতিবেদককে বলেন, এটা সম্পূর্ন অবৈধ তবুও করেছি। এ ধরনের কাজ ভবিষ্যতে হবে না।
উপজেলার শিকারপুর ও বামরাইল ইউনিয়নের এ সকল বিষয়ে তদারকির দায়িত্বরত সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের (এসডিএফ) ক্লাস্টার অফিসার মো. রফিকুল ইসলাম জানান, ২০১৬ সালে উপজেলার শিকারপুর ও বামরাইল ইউনিয়নে সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন (এসডিএফ) নামের এ বেসরকারি সংস্থাটি তাদের কার্যক্রম শুরু করে। বর্তমানে ওই দুই ইউনিয়নে সংস্থাটির ৩০টি সমিতিতে মোট ৫ হাজার ৭১ জন সদস্য রয়েছে। সমিতির সদস্যদের মধ্য থেকে সভাপতি, সেক্রেটারী ও কোষাধ্যক্ষ নির্বাচন করা হয়। তারাই সঞ্চয় ও কিস্তির টাকা উত্তোলন করে ব্যাংকে জমা করে। এ ব্যাপারে আমরা তাদের শুধু সহযোগীতা করে থাকি।
সংস্থাটির বরিশাল জেলা ব্যবস্থাপক আনোয়ারুল করিম জিকু বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
শিরোনামবরিশালের খবর