যৌতুক না পেয়ে বরিশালের উজিরপুর উপজেলায় মধ্যযুগীয় কায়দায় শারীরিক নির্যাতনের পর লিপি আক্তার (১৯) নামে এক কিশোরী গৃহবধূর মুখে বিষ ঢেলে হত্যার চেষ্টা করেছে তার স্বামী ও শ্বাশুরী।
নির্যাতনের শিকার উপজেলার ধামুড়া গ্রামের বাবুল হাওলাদারের কন্যা ওই কিশোরীবধূ উজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আশংকাজনক অবস্থায় গত তিন দিন ধরে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
গত শুক্রবার সকালে উপজেলার ওটরা ইউনিয়নের মশাং গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নির্যাতনের শিকার হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীণ ওই গৃহবধূ বলেন, তার বয়স এখন মাত্র ঊনিশ। গত পাঁচ বছর আগে একই উপজেলার ওটরা ইউনিয়নের মশাং গ্রামের মৃত: ফজলু মোল্লার ছেলে বেল্লাল মোল্লার সঙ্গে পারিবারিকভাবে তাকে বাল্যবিয়ে দেওয়া হয়।
বিয়ের পর থেকেই তার স্বামী বেল্লাল ও সৎ শ্বাশুড়ি যৌতুকের জন্য প্রায়ই বেধরক মারধর করে আসছিল। এরই মধ্যে তাদের দাম্পত্য জীবনে ইমাম হাসান ও ইমাম হোসেইন নামে দুটি পুত্র সন্তান জন্ম নেয়।
এরই ধারাবাহিকতায় গত শুক্রবার (৫ জানুয়ারী) সকালে পুন:রায় যৌতুকের বিভিন্ন মালপত্রের (টিভি ও ফ্রিজ) জন্য গৃহবধূ লিপিকে তার স্বামী ও সৎ শ্বাশুড়ি চাপ প্রয়োগ করে।
দাবিকৃত যৌতুকের মালপত্র এনে দিতে অস্বীকার করলে দুই সন্তানের জননী লিপি আক্তারকে প্রথমে তার স্বামী ও সৎ শ্বাশুড়ি মধ্যযুগীয় কায়দায় অমানুষিক শারীরিক নিযার্তন চালায়।
পরে গৃহবধূ লিপিকে তার স্বামী বাড়ি সংলগ্ন একটি খালের পানিতে চুবিয়ে নির্মম নির্যাতন চালালে একপর্যায়ে সে জ্ঞান হারিয়ে ফেললে মৃত ভেবে তার মুখে বিষ ঢেলে দেয় স্বামী বেল্লাল।
এ সময় ওই গৃহবধূর ভাসুর শরীফ মোল্লা স্থানীয়দের সহযোগীতায় তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় উজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
এ ঘটনায় নির্যাতিতা গৃহবধূ বাদী হয়ে তার স্বামী ও সতি শ্বাশুড়িকে আসামি করে উজিরপুর মডেল থানায় মামলা দায়ের করবেন বলে তিনি জানিয়েছেন।
বরিশালের খবর