১০ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, মঙ্গলবার

উজিরপুরে টাকার কাছে মানবতার বিপর্যয়, দুগ্ধশিশু বিক্রি!

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১০:০৬ অপরাহ্ণ, ২০ ডিসেম্বর ২০১৯

সাইদুল ইসলাম, বরিশাল:: বরিশাল জেলার উজিরপুরে দুগ্ধ এক শিশুকে বিক্রির জন্য দরাদরির প্রাক্কালে স্থানীয় থানা পুলিশ উদ্ধার করে। শুক্রবার বিকেলে স্থানীয় দত্তেশ্বর গ্রামের মুকুলি বেগম শিশুটি বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তার দাবি মাসখানেক পুর্বে নবজাতক (পুত্র সন্তান) শিশুকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতাল থেকে লালনপালনের জন্য নিয়ে আসা হয়। ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার মগড় ইউনিয়নের জামালের এই নবজাতক পুত্রকে কীভাবে দিল এবং শেষান্তে বিক্রির উদ্দেশ কী সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে উজিরপুর থানা পুলিশ।

পুলিশ ও স্থানীয়দের ভাষ্য- মুকুলি বেগমের বাড়িতে ওই শিশুটি নিয়ে আসার পর থেকেই তাকে দেখতে প্রায়ই মানুষের ভিড় দেখা যায়। মুকুলি বেগম মায়ের ¯েœহে তাকে বড় করে তুলছিলেন। বিভিন্ন জনের প্রশ্নের উত্তরে শিশুটির পরিচয় ছিল নলছিটির এক ব্যক্তি জন্মের পরপরই তাকে দত্তক হিসেবে মুকুলির নিকট আত্মীয় পার্শ্ববর্তী জনৈক ফারুক হোসেন নিয়ে আসেন। হঠাৎ করে গত কয়েকদিন যাবত নিসন্তান একাধিক দম্পতি তাদের কাছ থেকে শিশুটিকে পুনরায় দত্তক নেওয়ার প্রস্তাব দেয়। বিপরিতে মুকুলির পরিবার মোটা অংকের টাকা দাবি করে। শিশু নিয়ে আর্থিক লেনদেনের মানবিক বিপর্যয়ের ঘটনা স্থানীয়দের বিবেক তাড়িত করে এবং এক কান দুই কান হয়ে এ খবর সংশ্লিষ্ট শোলক ইউনিয়নে ছড়িয়ে পড়ে। শুক্রবার শিশুটিকে কোন এক পরিবারের কাছে ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে তুলে দেওয়ার কথা চুড়ান্ত ছিল। বিধিবাম। স্থানীয় থানা পুলিশ খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক দত্তেশ্বর গ্রামে উপস্থিত হয়ে আলোচিত শিশুটিকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে আসে। মুকুলি বেগমকেও জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত রাখা হয়। মুকুলি বেগমের বক্তব্য তিনিও দত্তক হিসেবে শিশুটিকে নিয়ে আসলেও এখন লালনপালনের সক্ষমতা নেই। নিকট আত্মীয় ফারুক কীভাবে নলছিটি জামালের কাছ থেকে শিশুটি সংগ্রহ করে এনেছিল সে তথ্য নিশ্চিত করতে পারছে না।

উজিরপুর থানার ওসি জিয়াউল আহসান বরিশালটাইমসকে জানান, মুকুলি বেগমের বক্তব্য অনুযায়ী জামালের সন্ধান নিশ্চিত হয়েছেন। কিন্তু সে চট্টগ্রামে থাকায় তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। জামালের তিন স্ত্রী রয়েছে। পুলিশের ধারণা জামাল সম্ভবত শিশুটি বিক্রি করেছিলেন অথবা ভুমিষ্ঠ হওয়ার পর তাকে না রাখার সিদ্ধান্তে গোপনে সরিয়ে দেয়। পাশাপাশি শেবাচিম থেকে শিশু চুরির সাথে এই ঘটনার কোন যোগসুত্র রয়েছে কী না তাও খতিয়ে দেখতে এখন জামালকে খুঁজে বের করে ফারুকের মুখোমুখি করা হতে পারে। বর্তমানে শিশুটি পুলিশি হেফাজতে রয়েছে।’

8 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন