বরিশালের উজিরপুরের দক্ষিণ হারতা এলাকায় নিজ বসতঘরে জাকিয়া পারভীন (৪৫) নামে এক বিধবা নারীকে হত্যার ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের। এ ঘটনায় ওই বিধবা নারীর বড় মেয়ে জামাতা মো. হিদুজ্জামান বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি করে শনিবার রাতে উজিরপুর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করলে রবিবার থানা পুলিশ ওই এলাকার থেকে চার জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে। স্থানীয় ও থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নিহত জাকিয়া পারভিন দক্ষিণ হারতা গ্রামের মৃত মানিক মাঝির বিধবা স্ত্রী ও তিন সন্তানের জননী।
দুই মেয়েকে বিবাহ দেয়ার পর ছোট ছেলে একাদশ শ্রেণির ছাত্র মো. শাহেদুজ্জামান নাইম (১৭) বড় বোন বীণা বেগমের সাথে স্বরুপকাঠীতে থেকে লেখাপড়া করে। যার কারণে তিনি একাই তার স্বামীর বসতঘরে বসবাস করতেন। ওই বসতঘরটি একটি নির্জন বাগান সংলগ্ন এবং আশেপাশে আর কোন মানুষের বসবাস নেই। স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, ওই বিধবা নারী দেখতে খুব সুশ্রী থাকায় এলাকার বেশ কিছু নারী লোভী বখাটেরা তাকে প্রায়ই উত্ত্যক্ত করতো এবং তারাই এ হত্যাকাণ্ড ঘটাতে পারে বলে ধারণা।
আরেকটি সূত্রের দাবি, খুন হওয়া ওই বিধবা নারীর অনেক টাকা এলাকার বিভিন্ন মানুষের কাছে সুদে দেয়া ছিল। এদের মধ্যে বেশ কয়েকজন তার ওই পাওনা টাকা নিয়ে বেশ তালবাহানা করেছিল। সে জন্য ঋনগ্রস্থরাও ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে হত্যা করতে পারে।
প্রসঙ্গত, শনিবার রাত ৯টার দিকে জাকিয়া পারভীন নামে ওই বিধবা নারীকে রক্তাক্ত অবস্থায় তার বসতঘরের মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় জাকির মাঝি (৩৫) থানা পুলিশকে সংবাদ দেয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বিধবা নারীর মরদেহটি উদ্ধার ও সুরতাহাল করে ময়না তদন্ত শেষে রবিবার তার পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করে।
অপরদিকে সন্ধ্যা রাতে ঘরে ঢুকে হত্যা আর পুলিশের গ্রেফতারি আতঙ্কে এক ভীতিকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে গোটা হারতা এলাকায়। বিশেষ করে দক্ষিণ হারতা গ্রামটি একেবারে পুরুষ শূন্য হয়ে পড়েছে। নারীর মরদেহটি উদ্ধারকারী ও দায়েরকৃত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উজিরপুর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. জসিম উদ্দিন খান জানিয়েছেন, ছেলে ঘরে না থাকার সুযোগেই শনিবার সন্ধ্যার পরে কে বা কাহারা বসতঘরে ঢুকে ওই নারীকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে।
ময়না তদন্তকারী চিকিৎসকের বরাত দিয়ে তিনি আরও জানান, ওই নারীকে হত্যার পূর্বে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে এবং তার মাথায় ও ডান পায়ে বড় ধরনের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে নিহত’র মাথা ও পায়ে হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় ওই এলাকা থেকে দুই সহোদর জাকির মাঝি, লিটন মাঝিসহ হুমায়ন ও ইব্রাহিম নামে মোট চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।
সেই সাথে খোঁজ নেয়া হচ্ছে নিহত’র সাথে কারও কোন শত্র“তা কিংবা প্রেমঘটিত সম্পর্ক ছিল কি না। উজিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. গোলাম সরোয়ার বলেন, হত্যারহস্য উদঘটনে পুলিশের তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। খুব দ্রুতই রহস্য উদঘটন করে দোুিষদের ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
শিরোনামখবর বিজ্ঞপ্তি, টাইমস স্পেশাল, বরিশালের খবর