বরিশাল টাইমস রিপোর্ট
প্রকাশিত: ০৭:০৫ অপরাহ্ণ, ২৯ ডিসেম্বর ২০১৯
বার্তা পরিবেশক, উজিরপুর:: বরিশালের উজিরপুরের গুঠিয়া ইউনিয়নে একটি বিরোধপূর্ণ সম্পত্তি জবরদখল করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রতিপক্ষ মেহেদী হাসানের সহযোগিতায় গত কয়েকদিন যাবত ওই জমিতে ভবন নির্মাণ ও পাকা সড়ক তৈরিসহ নানা ছকে আয়ত্বে নেওয়া হচ্ছে। ভুমি মালিক আনোয়ার হোসেন প্রবাসে থাকার সুযোগ নিয়ে জমি দখল প্রক্রিয়ায় গতি আরও বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। দখল কার্যক্রমে প্রবাসীর স্বজন মো. দুলাল হাওলাদার বাঁধা দেওয়ায় তাকে প্রতিপক্ষরা খুন জখমের হুমকি দিয়ে আসছে। এই বিষয়টি প্রবাসীর পরিবার থানা পুলিশকে একাধিকবার অভিযোগ আকারে অবহিত করেও সুফল পাচ্ছে না। পুলিশ দেখি দেখছি করে দখল কার্যক্রম বন্ধে কোন ভুমিকা না রাখায় দুবাই প্রবাসীর প্রায় অর্ধকোটি টাকা মুল্যের ১৩ শতাংশ জমি পুরোপুরি হাতছাড়া হওয়ার পথে। অথচ এই জমি নিয়ে প্রবাসীর পরিবার ও প্রতিবেশী মেহেদী হাসানের বিরোধকে কেন্দ্র করে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। এমনকি জমিতে যেকোন ধরণের স্থাপনা নির্মাণসহ সকল কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশ রয়েছে আদালতের। সেই নির্দেশনা উপেক্ষা করে কীভাবে জবরদখল চলছে এমন প্রশ্ন স্থানীয়দেরও ভাবিয়ে তুলেছে। থানা পুলিশে সহযোগিতা না পেয়ে সর্বশেষ এই দখল সন্ত্রাসের বিষয়টি বন্ধে প্রবাসীর পরিবার বরিশাল পুলিশ সুপারের সহযোগিতা চেয়েছে।
রোববার সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে- বিরোধপূর্ণ ওই সম্পত্তিতে প্রবাসীর প্রতিবেশী সেলিম হাওলাদার, মো. তোফাজ্জেল হোসেন হাওলাদার ও শফিকুল ইসলাম দখল প্রক্রিয়া শেষে ভবন এবং সড়ক নির্মাণ করছেন। এই কাজে সহযোগিতা করছেন মেহেদী হাসান নামের ওই ব্যক্তি।
তাদের দাবি- গুঠিয়া ৯ নম্বর মৌজার জেলএল ৮৭ নম্বরের এই জমিটি মেহেদীর বাবা মৃত কেএম শহীদের কাছ থেকে তৎসময়ে তারা ক্রয় করেছেন। যদিও তারা জমি ক্রয় সংক্রান্ত কাগজপত্র দেখাতে ব্যর্থ হয়েছেন।
প্রবাসীর বোন জামাতা দুলাল অভিযোগ করেন- ৪৩৪/৪৩৭ সহ ৯টি দাগের ৫৯ শতাংশ জমি থেকে ওয়ারিশ সূত্রে ১৩ শতক প্রাপ্ত প্রবাসী আনোয়ার হোসেন দীর্ঘদিন যাবত ভোগ করে আসছিলেন। তৎসময়ে এই জমিতে অংশ রয়েছে এবং তা তার বাবা একেএম শহীদ সেলিম হাওলাদার, তোফাজ্জেল হাওলাদার ও শফিকুল ইসলামসহ বেশ কয়েক জনের কাছে বিক্রি করে গেছেন দাবি করেন। এবং দখলে নিয়ে তাদের বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে প্রবাসী বরিশাল আদালতে একটি মামলা করেন। সেই মামলা চলমান এবং আদালত জমিতে কোন স্থাপনা নির্মাণ বা কার্যক্রম বন্ধ রাখতে নির্দেশ দেন। এমনকি আদেশটি বাস্তবায়ন করতে সংশ্লিষ্ট উজিরপুর থানা পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু প্রতিপক্ষরা আদালতের নির্দেশ উপেক্ষা করে দীর্ঘদিন ধরে জমিটি দখলে নেওয়ার পায়তারা করে আসছিল এবং সর্বশেষ গত কয়েক দিন ধরে সেখানে স্থাপনা নির্মাণ কাজ চালিয়ে আসছে। ২৭ ডিসেম্বর কাজের শুরুতে প্রবাসীর বোন জামাতা স্থাপনা তুলতে বাঁধা দিলে তাকে গালিগালজসহ খুন জখমের হুমকি দেওয়া হয়। এই বিষয়টি তিনি সাধারণ ডায়েরি অভিযোগ আকারে থানায় নিয়ে গেলে পুলিশ তাও গ্রহণ করেনি।
অবশ্য থানা পুলিশের ওসি জিয়াউল আহসান বরিশালটাইমসের এ প্রতিবেদকের কাছে বলছেন- অভিযোগটি সম্পর্কে তিনি অবগত নন। নতুন করে অভিযোগ নিয়ে গেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
এদিকে প্রবাসী আনোয়ার হোসেন এ প্রতিবেদককে মুঠোফোনে জানান, মেহেদীর বাবা একটি ভুয়া দলিল তৈরি করে জমিটি বিক্রি করে টাকা হাতিয়েছেন। সেই ঘটনায় একটি মামলা করলে সেটি বিচারাধীন রয়েছে। যে বিষয়টি এখন উচ্চআদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে। কিন্তু আদালতের নির্দেশনা শর্তেও জমিটি দখলে মেহেদী সন্ত্রাস চালিয়ে যাচ্ছে। বিষয়টি থানা পুলিশকে একাধিকবার অবহিত করেও কোন সুফল না আসায় এখন পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে। অবশ্য পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলামও অবৈধভাবে স্থাপনা নির্মাণ বন্ধে থানা পুলিশকে নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানান প্রবাসী।