বরিশালের উজিরপুর উপজেলার শিকারপুর বন্দরের ব্যবসায়ী হুমায়ুন কবির কালু মুন্সী হত্যার ৬ মাস ১৩ দিন অতিবাহিত হলেও এখনও পর্যন্ত কোন রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি পুলিশ।
ফলে প্রকৃত খুনিদের গ্রেফতার করতে না পারায় উৎকণ্ঠায় ভুগছেন এ হত্যা মামলার বাদী ও স্বজনরা। হত্যার রহস্য উদঘাটনে কাজ করলেও আজ পর্যন্ত কোনও মোটিভ খুঁজে পায়নি পুলিশ। এক প্রকার ধাঁমাচাঁপা পরে গেছে আলোচিত এ খুনের ঘটনা।
তবে পুলিশ মূল রহস্য উদঘাটন করতে না পারলেও হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত সন্দেহে উপজেলার মুন্ডপাশা গ্রামের মো: দেলোয়ার শরীফ (৪৫), ফরিদ মল্লিক (৩৫) ও নাসির তালুকদার (৪০) নামে তিন জনকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরন করেছিলো। বর্তমানে আদালত থেকে তারা সকলেই জামিনে মুক্ত রয়েছেন।
এদিকে ব্যবসায়ী হুমায়ুনের হত্যার পরে প্রকৃত হত্যাকারীদের চিহ্নিত করে দ্রুত গ্রেফতারের দাবীতে স্থানীয় ব্যবসায়ী-বাসিন্দারা বেশ কয়েকবার মানববন্ধন ও সমাবেশ করলেও তদন্ত কাজে পুলিশের কোনো অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না।
এছাড়া প্রায় ৬ মাস আগে এ হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উজিরপুর মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) মো. হেলাল উদ্দিন জানিয়েছিলেন, ব্যবসায়ী হুমায়ুন হত্যার রহস্য উদঘাটনে পুলিশের অনুসন্ধান অব্যাহত রয়েছে ও বিভিন্নভাবে তদন্ত চলছে। খুনের রহস্য উদঘাটনে অগ্রগতিও হয়েছে। খুব শীঘ্রই এ হত্যাকান্ডের রহস্য বের করে প্রকৃত অপরাধীদের প্রেপ্তার করা হবে।
এরই মধ্যে হঠাৎ অজ্ঞাত কারনে মামলার তদন্ত কাজ স্থবির হয়ে পড়ে। এতে ধাঁপাচাঁপা পড়ে যায় নানা রহস্যঘেরা হুমায়ুন হত্যাকান্ড। কিন্তু দীর্ঘ ৬ মাস পরেও মামলার তদন্তকারী ওই পুলিশ কর্মকর্তা একইভাবে এই প্রতিবেদককে জানান, ব্যবসায়ী হুমায়ুন হত্যার রহস্য উদঘাটনে পুলিশের অনুসন্ধান অব্যাহত রয়েছে।
স্থানীয় একাধিক ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করে জানান, চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকান্ডের প্রায় ৬ মাস অতিবাহিত হওয়ার পরও পুলিশ কোনো কুল কিনারা পাচ্ছে না। ব্যবসায়ী হুমায়ুনের খুনিদের ধরতে না পারা খুবই দু:খজনক বিষয়। এ হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটনে পুলিশের ভ‚মিকা নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
নিহত ব্যবসায়ী হুমায়ুন কবির মুন্সীর সেঝো ভাই ও মামলার বাদী মো. হেমায়েত হোসেন মুন্সী বলেন, ঘটনার এতোগুলো দিনেও হত্যাকারীদের শনাক্ত বা গ্রেফতার করতে না পারায় আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। হুমায়ুনের হত্যাকান্ডের ঘটনা নিয়ে পুলিশের মধ্যে এক প্রকার উদাসীনতা দেখা যাচ্ছে। তাই নিহতর স্বজনরা দ্রুত খুনিদের সনাক্ত করে গ্রেফতার পূর্বক আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের গত ৯ মে দুপুর দেড়টার দিকে উপজেলার শিকারপুর বন্দরের উত্তরে পূর্ব জয়শ্রী গ্রামের পেশকার বাড়ী সংলগ্ন সন্ধ্যা নদীর তীর থেকে ব্যবসায়ী হুমায়ুনের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই ঘটনায় পরেরদিন দুপুরে নিহত হুমায়ুনের সেঝো ভাই শিকারপুর বন্দর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. হেমায়েত মুন্সী বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামী করে উজিরপুর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
শিরোনামবরিশালের খবর