৯ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বুধবার

এই আর্তনাদের শান্তনা কি ?

বরিশাল টাইমস রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১২:৩২ পূর্বাহ্ণ, ১৫ মে ২০১৬

আজ এ প্লাস দিয়ে কি হবে? আমার ছেলেকে ফিরিয়ে দিন। আমার ছেলে এ প্লাস পেয়েছে এ খবর আজ শুনতে চাই না। এ খবর শুনে আমার খোকা কি ফিরে আসবে। এসে বলবে মা আমায় টাকা দাও বন্ধুদের মিষ্টি খাওয়াব। আমি এ প্লাস পেয়েছি ভাল কলেজে ভর্তি হব। এ সুসংবাদ কি আমার কোল জুড়াবে। আমার সন্তান কোথায়? তাকে ফিরিয়ে দিন। তার এ প্লাস পাওয়ার খবর আমি তার মুখ থেকে শুনতে চাই।

 

এভাবে আর্তনাদ করে কান্নায় ভেঙে পড়ে পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ার খবর শুনে আত্মহত্যা করা সবজিৎ ঘোষের মা শিলা ঘোষ। গতকাল তার ছেলের অকৃতকার্যর স্থলে পাশ সহ অকৃতকার্য হওয়া বিষয়ে এ প্লাস পাওয়ার খবর শুনে বিলাপ করে কান্না জুড়ে দেন তিনি। তার কান্নায় নিস্তব্ধ হয়ে যায় পরিবেশ। সন্তান হারা মায়ের আর্তনাদে মন মুচড়ে ওঠে সাংবাদিক মহলের।

 

তার কান্না শুনে নির্বাক হয়ে যায় আশপাশের মানুষ। পাস করেও ফেল করার কলংক সইতে না পেরে আত্মহত্যা করা সবজিতের মাকে সান্তনা দেয়ার ভাষা কারো জানা নেই। সকলেই জানে সবজিতকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব না। বরিশাল শিক্ষাবোর্ড কর্তৃপক্ষের ভুলের কারনেই আত্মহত্যার পথ বেচে নিতে বাধ্য হয় সবজিৎ ঘোষ সিজান ওরফে হৃদয়। বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক খ সেটের পরিবর্তে প্রশ্নে হিন্দুধর্মে গ সেটের উত্তর মালা দেয়।

 

এতে ভাল ছাত্ররা হিন্দু ধর্মে অকৃতকার্য হয়। উদয়ন স্কুল থেকে পরিক্ষা দেয়া ভাল ছাত্র সবজিৎ ঘোষ এ কলংক মেনে নিতে পারেনি। তার বিশ্বাস ছিলো সে অবশ্যই পাস করবে। ফলাফল ঘোষণার সময় বোর্ডের ভুল ধরা পড়েনি। হিন্দু ধর্মে অকৃতকার্য হওয়ার বিষয় মেনে নিে না পেরে সরজিৎ ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করে। বেশির ভাগ শিক্ষার্থী হিন্দু ধর্মে ফেল করার বিষয়টি সন্দেহের চোখে দেখে সচেতনরা।

 

 

ফেইসবুকের মাধ্যমে জেলা প্রশাসকের কাছে সুনির্দিষ্ট কান যাচাইয়ের দাবি জানানো হয়। জেলা প্রশাসক ড. গাজী মো. সাইফুজ্জামান শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষকে কারন খতিয়ে দেখার অনুরোধ জানায়। বোর্ড কর্তৃপক্ষ ভুল খুজে পেয়ে দেখে সবজিৎ সহ অনেক ছাত্রই পাস করেছে। সবজিৎ হিন্দু ধর্মে এ প্লাস পেয়েছে। এ খবর শুনেই পুত্র শোকে তার মা জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক বলেন, মানুষ ভুলের উর্ধ্বে নয়। আত্মহত্যাও কারো কাম্য নয়। ছেলেটি রেজাল্ট খারাপ হওয়ার খবর শুনেই নিয়ন্ত্রন হারিয়ে ফেলে। সে ধৈর্য্য ধারন করে প্রটেক্ট করতে পারতো। এ কারনে কর্তৃপক্ষকে পূর্নরুপে দায়ী করা যায়না। যেহেতু তারা ইচ্ছাকৃত ভুল করেনি। ভুল হওয়ার পর তা সংশোধন করে নিয়েছে।

29 বার নিউজটি শেয়ার হয়েছে
  • ফেইসবুক শেয়ার করুন