বার্তা পরিবেশক, অনলাইন::: ‘এখন অনেক ছবি নির্মাণ হচ্ছে, রিলিজও হচ্ছে। তার মধ্যে কিছু সিনেমা দর্শকরা পছন্দ করছেন। তবে ব্যবসাসফল ছবির সংখ্যা কমে গেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সিনেমা হিট হলেও প্রযোজকরা টাকা ফেরত পাচ্ছে না।’ বর্তমান সিনেমার অবস্থা নিয়ে কথাগুলো বলছিলেন ঢাকাই সিনেমার নন্দিত চিত্রনায়িকা পূর্ণিমা।
নবম শ্রেণীতে পড়ার সময় চলচ্চিত্রে আগমন ঘটে পূর্ণিমার। জাকির হোসেন রাজু পরিচালিত ‘এ জীবন তোমার আমার’ সিনেমা দিয়ে ১৯৯৭ সালে তার চলচ্চিত্রে অভিষেক। এরপর ২০০৩ সালে মুক্তি পায় তার সব থেকে সফল ছবি মতিউর রহমান পানু পরিচালিত মনের মাঝে তুমি। বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ প্রযোজনায় বাংলাদেশের সব থেকে সফল ছবির মধ্যে অন্যতম পূর্ণিমা অভিনীত এই ছবিটি। এই ছবিতে তার বিপরীতে ছিলেন চিত্রনায়ক রিয়াজ। এই জুটি একসাথে ২৫টিরও বেশি সিনেমা করেছেন। মাঝে চলচ্চিত্র থেকে দূরে থাকলেও আবারো নিয়মিত কাজ করছেন পূর্ণিমা।
জুটিপ্রথা নিয়ে চিত্রনায়িকা পূর্ণিমা বলেন, এখন চলচ্চিত্রে জুটির অভাব রয়েছে। আগে একটা নতুন জুটি হিট সিনেমা দিলে তাদেরকে ঘিরে নতুন নতুন সিনেমা নির্মাণ হতো। কিন্তু এখন সেটা একদমই চোখে পড়ছে না।
তিনি আরও বলেন, এখন তো সবকিছুই ফেসবুক নির্ভর দেখা যায়। ফেসবুকে দেখা যায় যে, দর্শক সিনেমা হলে গিয়ে বলছে ওমুক ছবি দেখে আসো। এই হয়েছে, সেই হয়েছে। ফেসবুকে এসব ঝড় উঠলে প্রকৃতপক্ষে প্রযোজক কতটুকু লাভবান হচ্ছেন?
তাছাড়া এখন সিনেমার কোন গানই মনে ধরছে না। এখন কি কোনো ছবির গান দেখে বা শুনে দর্শক ওই ছবির গান গুনগুন করে গাইছে বা মনে রাখছে? অথচ একটা সময় এটা ছিল। ছবি দেখার পর সেই ছবির গানগুলো গুনগুন করে গাইতো সবাই। গানের মাধ্যমে ছবির প্রচার ছড়িয়ে যেত সবখানে। সিনেমার গানও একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এখন তো তার কিছুই দেখি না। সর্বশেষ ‘মনপুরা’, ‘আয়নাবাজি’, ‘পোড়ামন টু’ ছবির বেশকিছু গান দর্শকরা পছন্দ করেছেন। সেগুলো অনেকের মুখে শুনেছি এবং দেখেছিও। এরপর আর তেমন কোন ভালো গানও পাইনি মনে রাখার মত।
যোগ করে তিনি আরও বলেন, দর্শক সিনেমা হলে গিয়ে টাকা খরচ করে স্বচ্ছ ও ভালো মানের ছবি দেখতে চায়। দর্শককে হলমুখী করতে হলে ভালো মানের ছবির বিকল্প নেই এখন। সেক্ষেত্রে হলের পরিবেশও বেশ জরুরি। আমার মনে হয় জেলা পর্যায়ে শপিং মলের পাশাপাশি যদি সিনেপ্লেক্স তৈরি হয় তাহলে দর্শকরা অবশ্যই সিনেমা দেখতে যাবেন। কারণ শপিং মল সব সময় জমজমাট থাকে। আর সিনেমা মুক্তির সময় যদি ঠিকমতো প্রচারণা করে সকলকে জানানো যায় যে, একটি ভালো সিনেমা এসেছে তখন অনেক দর্শকই সিনেমাটি দেখতে আসবেন।
প্রসঙ্গত, পূর্ণিমা এই মূহুর্তে ব্যস্ত রয়েছেন নঈম ইমতিয়াজ নেয়ামূলের ‘জ্যাম’ ও ‘গাঙচিল’ সিনেমা নিয়ে। ‘জ্যাম’ ছবিতে আরিফিন শুভর বিপরীতে এবং ‘গাঙচিল’ সিনেমায় ফেরদৌসের বিপরীতে অভিনয় করছেন পূর্ণিমা।
২০১০ সালে কাজী হায়াত পরিচালিত ‘ওরা আমাকে ভালো হতে দিল না’ ছবির জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে পূর্ণিমা পান জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। ‘নিঃশ্বাসে তুমি বিশ্বাসে তুমি’, ‘মেঘলা আকাশ’, ‘মনের মাঝে তুমি’, ‘মেঘের পরে মেঘ’, ‘শাস্তি’, ‘টাকা’, ‘পিতামাতার আমানত’, ‘লাল দরিয়া’, ‘বল না ভালবাসি’, ‘বাধা’, ‘সুভা’, ‘হৃদয়ের কথা’, ‘আকাশ ছোঁয়া ভালোবাসা’, ‘মাটির ঠিকানা’সহ অসংখ্য জনপ্রিয় বাংলা সিনেমায় অভিনয় করে তিনি পান দর্শকপ্রিয়তা।
বিনোদনের খবর