বছর দুয়েক আগে এই দিনে স্বপ্নের পদ্মা সেতুর মূল কাজের উদ্বোধন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ইতিমধ্যে প্রমত্তা পদ্মার বুকে দুই বছরে মূল সেতুর প্রায় অর্ধেক কাজ শেষ হয়েছে।
সার্বিক প্রকল্পের কাজও প্রায় অর্ধেক সমাপ্ত। গত ৩০শে সেপ্টেম্বর প্রথম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হয় বরিশাল তথা গোটা দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের স্বপ্নের এই সেতুর।
চলতি ডিসেম্বর মাসেই আরও দুটি স্প্যান বসানোর প্রক্রিয়া চলছে। এ দুটি স্প্যান ছাড়া আরো কয়েকটি স্প্যান সংযুক্ত করা হয়েছে। খুঁটি প্রস্তুত হলেই এই স্প্যানগুলো একে একে স্থাপন করা হবে।
পদ্মা সেতু প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, নির্ধারিত সময়েই কাজ শেষ হবে বলে তারা আশা করছেন। এজন্য কাজও এগিয়ে চলছে। পদ্মা সেতুর অগ্রগতি সংক্রান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৩০শে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পদ্মা সেতুর মূল প্রকল্পে ৬ হাজার ৬৬ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে।
মূল সেতুর চুক্তিমূল্য ১২ হাজার ১৩৩ কোটি টাকা। পুরো প্রকল্পে ব্যয় হবে প্রায় ২৮ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকা। এ পর্যন্ত মূল সেতুর কাজের ৫০ ভাগের বেশি অগ্রগতি হয়েছে। সার্বিক অগ্রগতিও প্রায় ৫০ ভাগ।
সেতু সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, সেতুর জাজিরা প্রান্তের ৩৭ ও ৩৮ নম্বর খুঁটির ওপর বসানো হয়েছে প্রথম স্প্যানটি। এরপর পাশাপাশি আরো দুটি স্প্যান যুক্ত করার খুঁটির নির্মাণ কাজ শেষ। এ দুটি স্প্যান যুক্ত হলে তিনটি স্প্যান মিলে অনেকখানি দৃশ্যমান হবে সেতু।
পাশাপাশি আরও কয়েকটি খুঁটির কাজও শেষ হয়ে এসেছে। নির্মাণ কাজ শেষ হলে একের পর এক যুক্ত হবে স্প্যান। এদিকে পদ্মাপাড়ের ইয়ার্ডে চলছে নতুন স্প্যান যুক্ত করার প্রক্রিয়া। রাত দিন কাজ করছেন শ্রমিকরা।
সম্প্রতি সেতু এলাকা ঘুরে দেখা গেছে- মাওয়া প্রান্তের ৪০ নম্বর পিলারের চূড়ান্ত ধাপের কংক্রিটিং ঢালাই শেষ হয়েছে। ৩৯ নম্বর পিলারের সাটারিং খোলা হয়েছে। ৩৮ ও ৩৯ নম্বর পিলারের ওপর ডিসেম্বরেই স্প্যান বসবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।
৩৮ নম্বর পিলারটি আগে থেকেই প্রস্তুত। সর্বশেষ পরীক্ষা-নিরীক্ষা হচ্ছে। ৪১ নম্বর পিলারের পাইল পোরশনের কাজও চলছে। ৪২ নম্বর পিলারের পাইল ক্যাপ ঢালাই শেষ ও পিলারের রড বাঁধাইয়ের কাজ শুরু হবে শিগগিরই। এর পরে পিয়ার কলামের প্রথম ধাপের ঢালাই শুরু হবে।
৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সেতুতে ৪২ পিলারের ওপর বসবে ৪১টি স্প্যান। পদ্মা বহুমুখী সেতুর কাঠামো কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে। সেতুর মোট পিলারের সংখ্যা ৪২টি। সেতুর প্রস্থ হবে ৭২ ফুট।
সেতুর ওপরে থাকবে চারলেনের সড়ক। নিচে থাকবে রেল লাইন। ২০১৫ সালের ১২ই ডিসেম্বর পদ্মা সেতুর মূল অবকাঠামো নির্মাণকাজ শুরু হয়।’
শিরোনামবরিশালের খবর