নারায়ণগঞ্জের সাত খুন মামলার রায় ঘোষণার পর থেকে চিন্তিত ও বিমর্ষ অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন কাশিমপুর কারাগারের কনডেম সেলে বন্দি নূর হোসেন ও তারেক সাঈদসহ পাঁচ আসামি। কখনও বসে, কখনও পায়চারি বা ধর্মীয় রীতিনীতি পালন করে বেশির ভাগ সময় পার করেছেন তারা। চোখে মুখে রয়েছে হতাশার ছাপ।
সোমবার রায় ঘোষণার পর বিকালে তাদেরকে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের কনডেম সেলে রাখা হয়। সাধারণ পোশাক খুলে কয়েদির পোশাক পরানো হয়।
কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ এর কনডেম সেলে আছেন র্যাব-১১ এর সাবেক অধিনায়ক (বরখাস্ত) লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর নূর হোসেন, ল্যান্স নায়েক (বরখাস্ত) বেলাল হোসেন।
কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-১ এর কনডেম সেলে আছেন র্যাবের ক্যাম্প কমান্ডার (বরখাস্ত) মেজর আরিফ হোসেন এবং (বরখাস্ত) লে. কমান্ডার মাসুদ রানা।
কাশিমপুর কারাগার পার্ট-২ এর জেলার নাশির আহমেদ জানান, নিয়ম অনুযায়ী ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত পাঁচ আসামিকে কারাগারে পৌঁছানোর পরপরই সাদা-লাল ডোরাকাটা কয়েদির পোশাক পরিয়ে ফাঁসির সেলে পাঠানো হয়। স্বাভাবিক কারণেই তাদেরকে মঙ্গল ও বুধবার বিষন্ন দেখা গেছে। কারাবিধি অনুযায়ী দিনে কয়েক দফা তাদের খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে।
কাশিমপুর কারাগার পার্ট-১ এর সিনিয়র জেল সুপার সুব্রত কুমার বালা জানান, ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত পাঁচ আসামি কনডেম সেলে বিষন্ন ও চিন্তিত অবস্থায় রয়েছেন। চোখে মুখে রয়েছে হতাশার ছাপ। তবে কারাগারের চিকিৎসক নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে জানিয়েছেন তারা সুস্থ আছেন। রায় ঘোষণার পর দণ্ডপ্রাপ্তদের সঙ্গে স্বজনদের কেউ কেউ সাক্ষাত করেছেন। বুধবার মেজর আরিফের স্বজনরা সাক্ষাত করেছেন।
তিনি আরও জানান,ফাঁসির দণ্ড পাওয়ার আগে তারা কারাগারে ডিভিশনপ্রাপ্ত বন্দির মর্যাদা ভোগ করতেন। কারাবিধি অনুযায়ী সেলে খাট, মশারি, পড়ার টেবিল, সেবক ও পছন্দ অনুযায়ী খাবার পেতেন। এখন কনডেম সেলে শুধু কম্বল ও বালিশ সরবরাহ করা হয়েছে। খাবার হিসেবে দেওয়া হচ্ছে কয়েদিদের সাধারণ খাবার।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম ও আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজনকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ শীতলক্ষ্যা নদীতে ডুবিয়ে দেওয়া হয়। প্রথমে গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুরের গজারি বনে নজরুল ইসলামের প্রাইভেটকার উদ্ধার হয়। পরে নদী থেকে উদ্ধার করা হয় সাতজনের লাশ।
এ মামলায় গত ১৬ জানুয়ারি ৩৫ আসামির মধ্যে নূর হোসেনসহ ২৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও ৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আসামিদের মধ্যে ১২ জন এখনও পলাতক।
খবর বিজ্ঞপ্তি, জাতীয় খবর, টাইমস স্পেশাল