কলাপাড়া: পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় কাঁচা সুপারির কদর দিন দিন বেড়ে চলেছে। পৌরশহরের মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কার্যালয়ের সামনে প্রতি মংগলবার বসে কাঁচা সুপারির হাট। এ হাটে আসে বিভিন্ন স্থানের পাইকার ও মহাজনরা। এরা হাটের আগের দিন নৌকা বোঝাই করে কিংবা ট্রাক বোঝাই করে নিয়ে আসেন কাচাঁ সুপারি। এ হাটটি উপজেলার সর্ব বৃহৎ হাট বিধায় পৌরশহরের সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা ছাড়াও উপজেলার ১২ টি ইউনিয়নের ছোট-বড় সকল ধরনের ব্যবসায়ীরা সুপারি ক্রয় করেন ওই হাট থেকে। সুপারি গাছে সাধারনত চৈত্র -বৈশাখ মাসে ফল ধরতে শুরু করে, পরিপক্ক হয় প্রায় ভাদ্র মাসে।
ফলে ভাদ্র মাস থেকে শুরু হয় কাচাঁ সুপারির মৌসুম,চলে মাঘ মাস পর্যন্ত। তবে কার্তিক মাসে ব্যাপক ভাবে আমদানি হয় এ সুপারি। পরবর্তীতে ক্রমান্বয়ে কমতে থাকে। পান প্রিয়রা পানের সাথে সুপারি খায় বিধায় এর কদর সব সময় আছে এবং থাকবে। তবে এ বছর ফলন তেমন ভাল না হওয়ায় বাজারে আমদানি বিগত বছর গুলোর তুলনায় অনেকটা কমেছে। ফলন কম বিধায় এ মৌসুমে ব্যবসায়ীরা লাভ করেছেন বেশী। বর্তমানে বিভিন্ন দামে সুপারি বিক্রি হচ্ছে। সুপারি ব্যবসায়ীদের হিসেব মতে এক কুড়ি সুপারিতে ২২০ পিস এবং এক ঘা-তে ১০টি সুপারি হিসেবে বিক্রি করা হয়। এর বর্তমান মূল্য প্রতি কুড়ি ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা আবার একটু নিম্মমানের সুপারির কুড়ি ২৮০ থেকে ২৫০ টাকা।
এছাড়া প্রতি ঘা বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ১৫ টাকা দরে। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, সুপারিতে কোন উপকার নেই, তবুও এর চাহিদারও কোন কমতি নেই। এ বছর এর চাহিদা অন্যান্য বছরের তুলনায় বেশী। কাঁচা সুপারি যারা পছন্দ করেন,তারা এটি দীর্ঘস্থায়ী করতে পানিতে ভিজিয়ে রাখেন কিংবা পলিথিন ভরে মাটিতে পুঁতে রাখেন। এ পদ্ধতিতে অন্তত ছয় মাস রাখা যায়। তবে দিন দিন অন্য পেশাজীবি লোকজন সুপারির ব্যবসায় নিজেদের সম্পৃক্ত করছেন।
এ ব্যাপারে বরগুনার চান্দুখালী গ্রামের পাইকারী সুপারি বিক্রেতা মো.হানিফ সর্দার বলেন, তিনি এর আগে মিষ্টি পানের ব্যবসা করতেন। এতে পরিবারের খরচ পোষানো মুশকিল হয়ে পড়েছে। পরে চার বছর ধরে বিভিন্ন হাটে সুপারি বিক্রি করছেন। বর্তমানে সুপারি বিক্রি করে ভাল আছেন বলে তিনি উল্লেখ করেন।
একই এলাকার অপর এক ব্যবসায়ী মো.বাবুল তালুকদার বলেন, এক সময় পুরাতন কাপড় চোপড় বিভিন্ন এলাকার হাটে -হাটে বিক্রি করতেন। এ গুলোতে আগের মত ব্যবসা না থাকায় সে সুপারির ব্যবসা শুরু করেন। এ ব্যবসায় বর্তমানে প্রতি হাটে খরচ বাদে তিনি অন্তত ১ হাজার টাকা লাভ করতে পারছেন।
এদিকে,কলাপাড়া পৌর এলাকার ব্যবসায়ী মো.জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, বর্তমানে নেশার বিরুদ্ধে বিভিন্ন গনমাধ্যমে প্রচার-প্রচারনা থাকায় মানুষের সচেতনতা বেড়েছে। এতে ধূমপায়ীর সংখ্যা কমে গেলেও পান খাওয়া কিংবা সুপারি খাওয়ার সংখ্যা কমেনি। তিনি মনে করেন কালের গতিতে অনেক কিছু হারিয়ে গেলেও হাড়াবে না সুপারি এবং এর কদর আগেও ছিল ভবিষ্যতেও থাকবে।