বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার কাজিরহাটে ঘর তল্লাশির নামে টাকা চুরি ও ক্রোসফায়ারের হুমকি দিয়ে চাঁদা দাবির অভিযোগে থানা পুলিশের ওসি, এসআই ও এএসআইয়ের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মঙ্গলবার ওই উপজেলার কাজীরহাট থানার আওতাধীন পূর্ব রতনপুর গ্রামের রশিদ খান বাদী হয়ে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি দায়ের করেন।
আদালতের বিচারক শাম্মী আকতার আগামী ৯ নভেম্বর মামলার শুনানির দিন ধার্য করেছেন।
এই মামলায় অভিযুক্তরা হলেন- কাজীরহাট থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাছুম তালুকদার, এসআই রতন কুমার হাওলাদার এবং এএসআই লুৎফর রহমান।
মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী শেখ আব্দুল্লাহ নাসির বরিশালটাইমসকে জানিয়েছেন, গত ২৪ অক্টোবর গভীর রাতে বাদীর বাড়িতে যায় পুলিশের একটি দল। প্রথমে তারা ঘরের দরজা ও জানালা ধাক্কাধাক্কি করে। এ সময় বাদী ও তার পরিবারের সদস্যরা ডাকাত-ডাকাত বলে ডাক চিৎকার দিলে তারা পুলিশ বলে পরিচয় দিয়ে দরজা খুলতে বলে।
দরজার খোলার সঙ্গে সঙ্গে ওসি মাছুম তালুকদারের নেতৃত্বে এসআই রতন ও এএসআই লুৎফরসহ পুলিশের দলটি ঘরে প্রবেশ করে। তারা ঘরের বিভিন্ন স্থানে তল্লাশি চালান। এ সময় খাটের তোষকের নিচে রাখা সুপারী বিক্রির ১২ হাজার টাকা এএসআই লুৎফর নিয়ে যান। এরপর ওসি বাদীকে আটক করেন। তাকে ছেড়ে দেয়ার জন্য ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন।
চাঁদা না দিলে মাদক মামলায় চালান দেয়ার হুমকি দেন ওসি। চাঁদা না দেয়ায় ওসি বাদীকে আটক করে থানায় নিয়ে যান। যাওয়ার সময় ওসি বাদীর দুই ছেলেকে হুমকি দিয়ে বলেন, ‘এমপি পংকজ নাথের বিরুদ্ধে কোন কাজ করলে অস্ত্র ও মাদক মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়ার সাথে সাথে প্রয়োজনে ক্রসফায়ারে দিয়ে লাশ নদীতে ভাসিয়ে দেব’।
এরপর এসআই রতন বাদী হয়ে রশিদ ও তার দুই ছেলের বিরুদ্ধে মিথ্যা মাদক মামলা দায়ের করেন। বাদীকে ওই মামলায় চালান দেয়া হয়। মামলা থেকে জামিনে বের হয়ে বাদী এ মামলাটি দায়ের করেন।
এর আগে গত ২৬ অক্টোবর উপজেলার কাদিরাবাদের বাসিন্দা মিজানুর রহমান ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি এবং মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযেগে ওসি মাছুম তালুকদার ও এসআই জহির হাওলাদারসহ ছয়জনকে আসামি করে চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করেন। ওসি ও এসআইসহ আসামিদের বিরুদ্ধে বাদীর ঘরের স্টিলের আলমারি ভেঙে এক লাখ ১০ হাজার টাকা মূল্যের স্বর্ণের গহনা এবং নগদ ৪০ হাজার টাকা লুট করারও অভিযোগ আনা হয় ওই মামলায়। একই আদালতের বিচারক শাম্মী আকতার মামলা আমলে নিয়ে এএসপি সার্কেলকে তদন্ত সাপেক্ষে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
তবে কাজীরহাট থানার ওসি মাসুম তালুকদার বলছেন, জমশেদ মাঝি হত্যা মামলার প্রধান আসামি মিজানুর রহমান । এছাড়া তার বিরুদ্ধে ডাকাতি, ছিনতাইসহ বহু অপরাধের অভিযোগ রয়েছে।
অপরদিকে রশিদ ও তার দুই ছেলে এলাকার চিহ্নিত মাদক বিক্রেতা। এ সকল অপরাধীরা নিজেদের কুকর্ম ঢাকতে মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছে।”
শিরোনামবরিশালের খবর