বরিশাল: বিভাগীয় ট্রাকশ্রমিক ইউনিয়ন কার্যালয়ে সন্ত্রাসী মোল্লাবাহিনীর সশস্ত্র হামলার ঘটনায় ৩২ জনকে অভিযুক্ত করে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। শনিবার গভীর রাতে মেট্রোপলিটন কোতয়ালি মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্য ইস্তাফিজুর রহমান মুন্না। এই মামলায় জেলা কমিটির সভাপতি দাবিদার কথিত যুবলীগ নেতা কালাম মোল্লা (৪৫), আসাদুজ্জামান সালাম (৩৮), সরোয়ার বিশ্বাস, সাগর (৩৫), নয়ন শেখ (৩৫), বশির (৩০) এবং জয়নাল কাউন্সিলর’র ভাই আয়নালের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এদের মধ্যে ৩ জনকে মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে শনিবার জেল হাজতে প্রেরণ করেছে পুলিশ। কিন্তু মূল হামলাকারী কালাম মোল্লাকে পুলিশ গ্রেফতার করতে পারেনি। অভিযোগ উঠেছে কালাম মোল্লা কেন্দ্রীয় এক যুবলীগ নেতার আস্থাভাজন হওয়ায় পুলিশ তাকে দেখেও দেখছে না।
অবশ্য অভিযোগের সত্যতাও মিলেছে। কারণ শনিবার বিকেলেও তাকে গড়িয়ার পাড় এলাকায় একটি দোকানে বসে থাকতে দেখা গেছে। এমতাবস্থায় বিভাগীয় সংগঠনের নেতাকর্মীরা শনিবার দুপুরে ইউনিয়ন কার্যালয়ে জরুরি সভা করে আজ নগরীতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালনের উদ্যোগ নিয়েছে। তাদের দাবি অভিযুক্তদের গ্রেফতার পরবর্তী বিচারের আওতায় অতিশীঘ্রই নিয়ে না আসা পর্যন্ত কর্মসূচি চলবে। সেক্ষেত্রে গোটা দেশে ট্রাক চলাচল বন্ধ করে কর্মবিরতিও ঘোষণা করা হতে পারে। কারণ সন্ত্রাসী হামলা এবারই প্রথম নয়। এরআগেও কালাম মোল্লাবাহিনীর সন্ত্রাসী হামলায় বিভাগের নেতারা একাধিকবার আক্রান্ত হয়েছিলেন।
সেইসব ঘটনায় মামলা দায়ের করা হলেও পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে কার্যকরি কোন পদক্ষেপ নেয়নি। বরং পরক্ষভাবে তাদেরকে সেল্টার দিয়েছে। ঘটনায় প্রকাশ শুক্রবার সন্ধ্যায় বরিশাল নগরীর বান্দরোডস্থ বিভাগীয় ট্রাকশ্রমিক ইউনিয়নের কার্যালয়ে সভা চলাকালীন সন্ত্রাসের বরপুত্র কালাম মোল্লা তার বাহিনী নিয়ে সেখানে সশস্ত্র হামলা চালায়।
এক পর্যায়ে খোদ স্বাধীন বাংলার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি ভাঙচুর করে পদদলিত করা হয়। সেই সাথে অমর্যাদা করা হয় এ অঞ্চলের আ’লীগের কর্ণধর আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ এমপিকেও। মূলত এবিষয়টি কোনভাবেই নেতাকর্মীরা মেনে নিতে না পারায় এখন টানটান উত্তেজনা বিরাজমান। কারণ হামলার শিকার বিভাগীয় নেতারাও ক্ষমতাসীন আ’লীগ দলীয়। যে কারণে একে অপরকে ছাড় দিতে নারাজ। তবে বিভাগীয় সংগঠনের নেতারা দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেয়ায় তেমন কোন অপ্রীতিকর ঘটনার আলামত নেই। কিন্তু হামলা চালিয়েও থেমে নেই কালাম মোল্লা।
প্রতিদিনের ন্যায় শনিবারও নগরীর বিভিন্ন এলাকায় ট্রাক থেকে চাঁদা তুলতে সক্রিয় রয়েছেন। বরিশাল বিভাগীয় ট্রাকশ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মোহম্মদ আলী বাঘা হুশিয়ারি উচ্চারণ করে সোজাসাপটা জানিয়ে দিয়েছেন, এবারে ছাড় দেয়ার সুযোগ নেই। কারণ বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি পদদলিত করেছেন কালাম মোল্লা। সেই সাথে এ অঞ্চলের নেতা আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহকেও অমর্যাদা করেছেন। পাশাপাশি তাদের সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ইমান আলী শরিফ বাবুলসহ অন্তত ১০ জনকে রক্তাক্ত জখম করেছেন।’
খবর বিজ্ঞপ্তি, বরিশালের খবর