বরিশাল: চালুর পূর্বেই বরিশাল নগরবাসীর জন্য ২৮ কোটি টাকা ব্যয়ে কীর্তনখেলা নদীর তীরে নির্মিত পানি শোধনাগারটি (ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট) বিলীন হুমকিতে রয়েছে। পাশাপাশি বরিশালের সম্ভাবনায় জাহাজ নির্মাণ শিল্পের ব্যক্তি মালিকানাধীন ডকইয়ার্ডও ভাঙনের মুখে।’
গত বৃহস্পতিবার রাতে কীর্তনখোলা নদীর বেলতলা এলাকায় নির্মিত পানি শোধনাগার কেন্দ্র ও ব্যক্তি মালিকানাধীন কীর্তনখোলা লঞ্চ ডকইয়ার্ডের মাঝখানে খালি জমির একটি বড় অংশ নদীগর্ভে চলে গেছে।’
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে- দুই স্থাপনার মাঝের খালি জমির প্রায় ২০ শতাংশ জমি মুহূর্তের মধ্যে নদীতে বিলীন হয়েছে। সেই সঙ্গে আরও বড় বড় ফাটল ধরেছে। পানি শোধনাগারের দূরত্ব নদী ভাঙনটির ৩০ থেকে ৫০ মিটার ।
যেভাবে ভাঙনের তীব্রতা দেখা দিয়েছে তাতে অল্প সময়ে ভাঙন পানি শোধনাগার পর্যন্ত পৌঁছে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ভাঙনের কবলে ডকইয়ার্ডে নির্মাণাধীন কীর্তনখোলা লঞ্চ সরিয়ে ফেলতে হবে।’
এর আগে কীর্তনখোলা নদীর ভয়াবহ ভাঙনে পানি শোধনাগারের কেমিক্যাল গাইড ওয়াল নদীতে বিলীন হয়েছে। কীর্তনখোলার ভাঙনে পুরো প্রকল্পটিও হুমকির মুখে পড়েছে।’
পানি শোধনাগারের সংশ্লিষ্ট কর্মচারীরা জানান, বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় এখনও পানি শোধনের কাজ শুরু হয়নি। তাই এর দায়িত্ব হস্তান্তর করা সম্ভব হয়নি।’
বরিশাল সিটি কর্পোরেশন সূত্র জানিয়েছে, ২০০৯ সালের পর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেঘনা ট্রেডার্স শোধনাগারটি নির্মাণ কাজ শুরু করে। নির্মাণ কার্যক্রমের তত্ত্বাবধান করছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর।’
শনিবার সরেজমিন বেলতলা এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, যে কোনো মুহূর্তে শোধনাগারটি নদীতে চলে যাবে। কিছুদিন পূর্বে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের পানি শাখার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী কাজী মনিরুল ইসলাম স্বপন জানিয়েছিলেন, ‘ভাঙন প্রতিরোধে কোনো ব্যবস্থা না নিলে পুরো কেমিক্যাল বিল্ডিং নদীতে বিলীন হয়ে যাবে।’
পানি শাখার স্থায়ী কমিটির সভাপতি ওয়ার্ড কাউন্সিলর আক্তারুজ্জামান হিরু বলেন, ‘প্রায় ২ বছর আগে এ নদী ভাঙন ঠেকাতে কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান কার্যালয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে। এরপর বহুবার তাগাদাও দিয়েছি আমরা। কিন্তু তারা কোনো কার্যকর পদক্ষেপ না নেয়ায় শোধনাগারটি হুমকির মুখে পড়েছে।’
পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী রমজান আলী প্রামাণিক জানিয়েছিলেন, ভাঙনের হাত থেকে বাঁচাতে ৬ হাজার জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে। আরও ৬ হাজার জিও ব্যাগ ফেলার সিদ্ধান্ত রয়েছে।’
নদী ভাঙন ঠেকাতে ৪ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি প্রটেকশন প্রকল্প পাঠানো হয়েছে ঢাকায়। ১৯১ কোটি টাকা ব্যয় সাপেক্ষ ওই প্রকল্পটি বর্তমানে একনেকে রয়েছে অনুমোদনের অপেক্ষায়। প্রকল্পটি পাস হলেই কাজ শুরু হবে।’
বরিশালের খবর