বরিশাল টাইমস রিপোর্ট
প্রকাশিত: ০৬:১০ অপরাহ্ণ, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬
র্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে হাজারো পর্যটকের ঢল নেমেছে। দেশি-বিদেশি নানা বয়সের মানুষের আগমনে দীর্ঘ ১৮ কিলোমিটার সৈকতে এখন উৎসব মুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। ঈদের দিন থেকে শুরু হয়েছে ভীড়। বৃহস্পতিবার দিনও সেই একই অবস্থা। দিনভর সৈকতে তিল ধরনের ঠাঁই নেই। সমুদ্রের ঢেউয়ের সাথে উম্মাদনায় মেতেছে যেন হাজার হাজার পর্যটক।
আগত পর্যটকদের অনেকেই ঈদের লম্বা ছুটিতে পরিবার-পরিজনদের নিয়ে আনন্দ উপভোগ করতে ৩-৪ দিনের প্রস্তুতি নিয়ে এসেছেন। আবাসিক হোটেল মোটেল, খাবার ঘর ও শপিংমলসহ পর্যটনমুখী ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতেও ফিরে এসেছে প্রাণ চাঞ্চল্য। এদিকে আগত পর্যটকদের সবোর্চ্চ নিরাপত্তা দিতে পর্যটন স্পটগুলোতে টহল জোরদার করা হয়েছে।
স্থানীয়দের সূত্রে জানা গেছে, রাখাইন মার্কেট, ঝিনুকের দোকান, খাবারঘর, চটপটির দোকানসহ বিভিন্ন দোকানে এখন কেনাকাটা আর খাওয়া দাওয়ার ধুম। মঙ্গলবার সকাল থেকে বাস, টেম্পু, প্রাইভেটকার, মাইক্রো যোগে দলে দলে পর্যটকরা আসতে শুরু করে।
ঘুরে দেখা গেছে, সৈকতের বালিয়াড়িতে পাতা বেঞ্চ ও ছাতার নিচেসহ বিভিন্ন পয়েন্টে নানা বয়সের মানুষ গল্প, গান আর আড্ডায় মেতে রয়েছে। নানা ঢংয়ের সেলফি তুলে সাথে সাথে পোস্ট করছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে।
কেউ কেউ সৈকতে ফুটবল ও হাডুডু খেলায় মেতেছেন। এছাড়া সৈকত লাঘোয়া নারিকেল বাগান, ইকোপার্ক, জাতীয় উদ্যান, শ্রীমঙ্গল বৌদ্ধ বিহার, সীমা বৌদ্ধ বিহার, সুন্দরবনের পূর্বাঞ্চল খ্যাত ফাতরার বনাঞ্চল, গঙ্গামতি, কাউয়ার চর, লেম্বুর চর, শুটকি পল্লী, লাল কাকড়ার চর, সৈকতের জিরো পয়েন্ট ও ইলিশ পার্ক নানা বয়সী পর্যটকদের পদচারনায় এখন মুখর।
গৃহিনী এলিজাবেদ সহ-পরিবারে খুলনা থেকে কুয়াকাটায় এসেছেন। তাদের সাথে সৈকতে বসে কথা হয়। তিনি বলেন, এখানে আরো বেশ কয়েকবার এসেছি। এখানকার সবকিছুই দারুণ লাগে আমার। এখন কুয়ায়াকাটায় আসার জন্য যোগাযোগ আরো উন্নত হয়েছে। কিন্তু বিভিন্ন দর্শনীয় স্পটে যাওয়ার অভ্যান্তরীণ সড়কগুলো ততটা ভালো নয়। এগুলোর জরুরি ভিক্তিতে মেরামত প্রযোজন। এছাড়া সৈকত আরো পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকা উচিত।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমবিবিএর ছাত্রী ও চাকুরীজীবী মোনালিসা প্রথমবারের মতো কুয়াকটায় এসেছেন। তিনি বলেন, প্রাকৃতিক নৈসর্গিক দৃশ্য দেখে আমি বিমোহিত। তবে রাতে সৈকতে আলোর ব্যবস্থা থাকলো আরো ভালো হতো।
কুয়াকাটা হোটেল মোটেল ওনার্স এ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো.মোতালেব শরিফ জানান, পর্যটকদের আগমনে এখানকার হোটেল মোটেলগুলোতে কর্মচাঞ্চল্য ফিরে পেয়েছে। ঈদের ছুটি উপলক্ষে আগামী ২০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অধিকাংশ হোটেল মোটেলগুলোতে আগাম বুকিং রয়েছে।
মহিপুর থানার ওসি এস এম মাসুদুর রহমান জানান, এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। আশা করি আগত পর্যটকরা সুষ্ঠ ও সুন্দরভাবে নির্বিগ্নে বিভিন্ন দর্শনীয় স্পট ঘুরতে পারবে। এজন্য জেলা পুলিশ, মহিপুর থানা পুলিশ ও ট্যুরিষ্ট পুলিশ একসাথে কাজ করছে।
ট্যুরিষ্ট পুলিশ কুয়াকাটা জোনের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মীর ফসিউর রহমান বলেন, পর্যটকদের নিরাপত্তা দিতে ট্যুরিষ্ট পুলিশ দর্শনীয় স্থানগুলোতে টহল দিচ্ছে। এছাড়া সাথে গোয়েন্দা সদস্যদের একটি দল মাঠে কাজ করছে। তবে পর্যটকদের সাগরে নামার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ বি এম সাদেকুর রহমান জানান, পর্যটকদের যাতে কোনো প্রকার অসুবিধা না হয় এজন্য সৈকতে ট্যুরিষ্ট পুলিশ, নৌ-পুলিশ ও মহিপুর থানা পুলিশ নিয়োজিত রয়েছেন।