পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটার সৈকতে দেশী বিদেশী পর্যটকদের ঢল নেমেছে। স্বাধীনতা দিবসের টানা তিনদিনের ছুটির প্রথম দিন শুক্রবার ধারন ক্ষমতার বাইরে পর্যটকদের সমাগমের ভীড় সামাল দিতে হিমশিম খেতে হয়েছে ব্যবসায়ীদের।
গত বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে শুক্রবার রাত পর্যন্ত পর্যটকবাহীবাস, মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকারও মোটরবাইকেযোগে কয়েক হাজার পর্যটক কুয়াকাটায় পৌঁছেছে। আবাসিক হোটেলে ঠাঁই না পেয়ে পর্যটকরা বাসা বাড়িতে আশ্রয় নেয়।’
এমনকি চার কিলোমিটার দূরত্বে মৎস্য বন্দর আলীপুরে আবাসিক হোটেলে অবস্থান নিয়েছে। আগাম বুকিং দিয়ে না আসা পর্যটকরা আটোভ্যান নিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা এ হোটেল থেকে একাধিক আবাসিক হোটেলে রুমের জন্য হন্যে হয়ে ঘুরছেন।’’
এসব তথ্য আবাসিক হোটেল মোটেল মালিক সমিতি, ট্যুরিজম ব্যবসায়ী ও প্রশাসনের সাথে কথা বললে নিশ্চিত হওয়া গেছে।’’
স্থনীয় ব্যবসায়ীদের সূত্রে জানা গেছে, মৌসুমের শেষভাগে কুয়াকাটার সৈকতে দেশী বিদেশী পর্যটকদের ঢল নেমেছে। তিন দিনের সরকারি ছুটির প্রথম দিনে শুক্রবার দূরদূরান্ত থেকে ছুটে আসা শিশু, কিশোর, যুবক যুবতীসহ নানা বয়সী ভ্রমণপিপাসু পর্যটকদের উম্মাদনায় পুরো সৈকতজুড়ে আনন্দময় পরিবেশ বিরাজ করছে।’’
কোথাও তিল ঠাঁই নাই অবস্থা। পর্যটকদের আগমনে রাখাইন মার্কেট, ঝিনুকের দোকান, খাবারঘর, চটপটির দোকানসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে কেনাকাটার ধুম পড়েছে। ওখানকার হোটেল মোটেলগুলো বুকিং রয়েছে। পর্যটক ও দর্শনার্থীদের নিরাপত্তায় ট্যুরিষ্ট পুলিশের পাশাপাশি মহিপুর থানা পুলিশও পর্যটক জোনগুলোতে রয়েছে।’’
শুক্রবার ঘুরে দেখা গেছে, সৈকত লাগোয়া নারিকেল বাগান, ইকোপার্ক, ইলিশপার্ক, জাতীয় উদ্যান, শ্রীমঙ্গল বৌদ্ধ বিহার, সীমা বৌদ্ধ বিহার, সুন্দরবনের পূর্বাঞ্চল খ্যাত ফাতরার বনাঞ্চল, ফকির হাট, গঙ্গামতি, কাউয়ার চর, লেম্বুর চর, শুটকি পল্লী ও কুয়াকাটার জিরো পয়েন্টে নানা বয়সী পর্যটকদের পদচারণায় এখন মুখরিত হয়ে উঠেছে।’’
বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে ওইসব পর্যটকরা বাস, মাইক্রো, প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেলে সয়লাব পিকনিক স্পটগুলো। আগাম বুকিং ছিল ওখানকার অভিজাত আবাসিক হোটেল ও সরকারি বাংলো এবং মোটেলগুলো।’’
নওগাঁ থেকে পর্যটক দম্পতি বায়জিদ আহম্মেদ জানান- বিয়ের পর এই প্রথমবার স্ত্রীকে নিয়ে কুয়াকাটায় আসলাম। অপরূপ দৃশ্য দেখে অসাধারণ লেগেছে।
অপর এক শিক্ষার্থী ইশিতা জানান- বছর দুইএক আগে আব্বু আম্মুর সাথে এখানে এসেছিলাম। তখন ঢাকা থেকে আসার পথে বেস কয়েটি ফেরী পারাপার হতে হয়েছে। এবার শুধু মাত্র দু’টি ফরী পার হলাম। কুয়াকাটায় আসার জন্য যোগাযোগ খুবই ভাল হয়েছে বলে ওই শিক্ষার্থী জানিয়েছেন।’’
কুয়াকাটা গ্রীণ ট্যুরিজম সেন্টারের পরিচালক আবুল হোসেন রাজু জানান, প্রচুর সংখ্যক পর্যটকদের আগমন ঘটেছে। বেশির ভাগ পর্যটক ছিলো শিক্ষা সফরসহ সরকারি চাকুরীজীবি।’
আমরাও এখানে আসা পর্যটকদের সোব দিয়ে থাকি। এ অবস্থা মার্চ মাস পর্যন্ত থাকবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
কুয়াকাটা সড়ক পথের আন্দারমানিক নদীর উপর শেখ কামাল সেতুর টেল কাউন্টারে পরিচালক নিখিল বিশ^াস জানান, বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে পর্যটকবাহী পরিবহন এ সেতুটি পার হয়েছে।’
এছাড়া মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার, মোটরসাইকেলসহ আসংখ ছোট খাটো পরিবাহ পার হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
কুয়াকাটায় হোটেল বীচ হ্যাভেন’র হাউজ ইনর্চাজ মো. বায়েজীদ মাল্লিক জানান, আমাদের হোটেলে কোন রুম খালি নাই।’
কুয়াকাটার অভিজাত হোটেল শিকদার রিসোর্ড এন্ড ভিলাস’র আপারেসন ম্যানেজান আল-আমিন খান আপন জানান, হোটের সব রুমই বুকিং রয়েছে। পর্যটকরা রুমের জন্য যোগাযোগ করছে।’
ট্যুরিষ্ট পুলিশ কুয়াকাটা জেনের সহকারী পুলিশ সুপার আ.করিম জানান, ব্যাপক পর্যটকদের চাপ রায়েছে। নিরাপত্তা দিতে আমাদের পুলিশ বিভিন্ন দর্শনীয় স্পটে টহল রয়েছে বলে তিনি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।’’
শিরোনামপটুয়াখালি