ঘণ্টা আগের আপডেট রাত ১:২৩ ; রবিবার ; অক্টোবর ১, ২০২৩
EN Download App
Youtube google+ twitter facebook
×

কেন এত আতঙ্কিত উত্তর প্রদেশের মুসলিমরা?

বরিশালটাইমস রিপোর্ট
১:৩৬ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১, ২০২০

বার্তা পরিবেশক, অনলাইন::: বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধন আইনের বিরুদ্ধে ভারত জুড়ে চলছে আন্দোলন-বিক্ষোভ। তবে বিক্ষোভে সবচাইতে বেশি উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে উত্তর প্রদেশ রাজ্যে। গত ২০ ডিসেম্বর এই বিক্ষোভ শুরু হবার পর থেকে সেখানে কমপক্ষে ১৯ জন নিহত হয়েছেন। কিন্তু ভারতের এই রাজ্যটিতেই এমন পরিস্থিতি তৈরি হলো কেন? এর কারণ খতিয়ে দেখার চেষ্টা করেছে বিবিসি প্রতিনিধি।

কানপুর শহরের বাবুপুরা এলাকায় বাসিন্দা মোহাম্মদ শরিফ। জায়গাটা খুবই ঘিঞ্জি, সরু সরু গলি দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। টিনের চালা-দেয়া ছোট বাড়ি। একটিই মাত্র ঘর, যার একটা অংশে দিনের বেলায় রান্নাবান্না হয়, রাতে পুরোটাই হয়ে যায় শোয়ার ঘর। ঘরের সামনেই বসে ছিলেন ছিলেন মোহাম্মদ শরিফ। তিনি বিবিসি প্রতিনিধিকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন। বলেন, ‘আমি সব হারিয়েছি। আমার আর বাঁচার ইচ্ছে নেই। আমার ছেলে কি দোষ করেছিল, কেন পুলিশ তাকে গুলি করলো?’

তার ছেলে মোহাম্মদ রইস মারা গেছেন ২৩শে ডিসেম্বর। ত্রিশ বছরের রইসের পেটে গুলি লেগেছিল। তিন দিন পর তিনি মারা যান।

‘আমার ছেলে তো কোনও বিক্ষোভও করছিল না। সে রাস্তায় বসে জিনিসপত্র বিক্রি করতো। যেখানে বিক্ষোভ হচ্ছিল – ঘটনাচক্রে সে সেখানে ছিল। কিন্তু যদি বা সে বিক্ষোভ করেও থাকে, তাহলেও কি পুলিশ তাকে মেরে ফেলতে পারে? আমরা মুসলিম বলেই কি তাকে মরতে হলো? আমরা কি এ দেশের নাগরিক নই?’ প্রশ্ন শরিফের। যদিও এই প্রশ্নের কোনো উত্তর নেই। তবে উত্তর থাক বা না থাক শরিফ জানান, ‘আমি মৃত্যুর আগে পর্যন্ত এ প্রশ্ন করেই যাবো!’

ভারতের বর্তমান পরিস্থিতিতে সেখানে সবচেয়ে বেশি কঠিন সময় অতিক্রম করছে সংখ্যালঘু মুসলিমরা। আর উত্তরপ্রদেশে চরমপন্থী হিন্দু শসকেদের হাতে তারাই সবেচেয়ে বেশি নির্যাতীত হচ্ছেন।

ভারতের দরিদ্র রাজ্যগুলোর অন্যতম এই উত্তর প্রদেশ। এখানে বিক্ষোভকারীদের ওপর মাত্রাতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগের অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। নাগরিক অধিকার গোষ্ঠীগুলো বলছে, নাগরিকত্ব সংশোধন আইনটি পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান থেকে আসা অ-মুসলিম অভিবাসীদের নাগরিকত্ব দেবার সুযোগ দিচ্ছে এবং তা মুসলিমদের বিরুদ্ধে বৈষম্যসূচক।

যদিও ভারতের বিজেপি সরকার এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জোর দিয়ে বলেছেন, এই আইন মুসলিমদের বিরুদ্ধে নয়।

কিন্তু উত্তর প্রদেশ, যেখানে ৪ কোটি মুসলিম বাস করে সেখানে বিক্ষোভের অজুহাতে চলছে মুসলিম বিরোধী তৎপরতা।

উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বলেছেন, যারা সরকারি সম্পত্তি ধ্বংস করেছে তাদের বিরুদ্ধে ‘প্রতিশোধ’নেয়া হবে এবং ‘সরকারি সম্পত্তির ক্ষতি পুষিয়ে নিতে তাদের বাড়িঘর বাজেয়াপ্ত করা হবে।’

পুলিশ তার নির্দেশ পালন করেছে। তারা ‘ফেরারি লোকদের চিহ্নিত করেছে – যাদের অধিকাংশই মুসলিম এবং কানপুর জুড়ে দেয়ালে দেয়ালে তাদের পোস্টার সেঁটে দিয়েছে। এর ফলে সেখানকার মুসলিম জনগোষ্ঠীর মধ্যে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক।

বাবুপুরওয়ায় আমার সাথে বেশ কয়েকজন মহিলার কথা হয়, যারা বলেছেন যে তাদের স্বামী-পুত্রেরা গ্রেফতার-নির্যাতনের ভয়ে অন্য শহরে পালিয়ে যাবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর মধ্যে ১০ বছরের ছেলেও আছে।

এই ভয় আরো বেড়েছে জাতীয় নাগরিকপঞ্জী বা এনআরসির কারণে। ‘এনআরসির কারণে মানুষকে এখন প্রমাণ করতে হবে যে সে ভারতের নাগরিক’- বলছিলেন কানপুরের মুসলিম সম্প্রদায়ের একজন নেতা এবং রাজনীতিবিদ নাসিরুদ্দিন।

তিনি আরো বলেন, ‘কল্পনা করুন, একটি মুসলিম পরিবার এবং আরেকটি হিন্দু পরিবার – উভয়েই নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে ব্যর্থ হলো। কিন্তু নাগরিকত্ব সংশোধন আইন বা সিএএ হবার পর এখন হিন্দু পরিবারটি সেই আইন ব্যবহার করে নাগরিকত্ব দাবি করতে পারবে, আর মুসলিম পরিবারটি তার নাগরিকত্ব হারাবে।’

নাসিরুদ্দিন আরো বলছেন, এই রাজ্যের মুসলিমরা আরো ভয়ে আছেন, কারণ তারা ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টিকে (বিজেপি) বিশ্বাস করেন না।

‘আমাদের কী দোষ? আমরা গণতান্ত্রিক দেশ, এখানে কোনও ব্যাপারে আমরা একমত না হলে তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানোর অধিকার আমাদের আছে। কিন্তু আমাদের রক্ষকই এখন ভক্ষক হয়ে গেছে। আমরা এখন কোথায় যাবো’ – বলছিলেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মহিলা।

আরেকজন মহিলা, তিনিও প্রকাশ করতে চাননি, নিজে থেকেই বললেন, “পুলিশ রাতে আমাদের এলাকায় এসেছিল। বলেছে, তারা সব পুরুষদের গ্রেফতার করবে। তারা আমাদেরকে বলেছে, আমরা যেন বিক্ষোভকারীদের চিনিয়ে দিই।”

মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের করা আগেকার কিছু মুসলিম-বিরোধী মন্তব্য মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে আতঙ্ক আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। অতীতে তিনি ডোনাল্ড ট্রাম্প স্টাইলে ভারতের মুসলিমদের ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা বলেছেন, মুসলিম পুরুষদের বিরুদ্ধে হিন্দু মেয়েদের জোর করে ধর্মান্তরিত করার অভিযোগ এনেছেন, বলিউড তারকা শাহরুখ খানের সাথে পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গী হাফিজ সাঈদের তুলনা করেছেন।

অনেকেই বিশ্বাস করেন, প্রধানমন্ত্রী মোদি যে ‘জোরদার হিন্দু জাতীয়তাবাদের’কথা বলছেন, ঠিক সেটাই অনুসরণ করছেন উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী।

নাসিরুদ্দিনের কথায়, ‘উত্তর প্রদেশ এখন মোদির আদর্শের প্রধান পরীক্ষাগারে পরিণত হয়েছে।’

গত কয়েকদিনে উত্তর প্রদেশ রাজ্যে হাজার হাজার লোক আটক হয়েছেন যাদের অধিকাংশই মুসলিম। দিনের পর দিন বন্ধ রাখা হয়েছে ইন্টারনেট সেবা, বহু নেতৃস্থানীয় অধিকার কর্মী আটক হয়েছেন – যার মধ্যে আছেন একজন সাবেক শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তাও।

পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে তারা মুসলিমদের ভীতি প্রদর্শন করছে। কানপুর থেকে এমন ভিডিও ফুটেজ পাওয়া গেছে যাতে দেখা যাচ্ছে, পুলিশই গভীর রাতে মুসলিম প্রধান এলাকাগুলোর বাড়িতে বাড়িতে ভাঙচুর চালাচ্ছে।

বিবিসির সংবাদদাতা ইয়োগিতা লিমায়েকে বলা হয়েছে, কানপুর থেকে ৩৬০ মাইল দূরের মুজাফফরনগরে বেশ কিছু জায়গায় মুসলিমদের বাড়িঘরে ভাঙচুর চালিয়েছে পুলিশ। অভিযোগ উঠেছে, একটি বাড়িতে পুলিশ টিভি, ফ্রিজ ও রান্নার হাঁড়িপাতিল সহ সব জিনিসপত্র একেবারে ধ্বংস করে দিয়েছে।

তিনি খবর দেন, তার সাথে এমন পুরুষ ও বালকদের কথা হয়েছে যারা বলেছে পুলিশ তাদের মারধর করেছে, আটক করেছে।

বিবিসি হিন্দির সংবাদদাতা জুবায়ের আহমেদও রিপোর্ট করেছেন মীরাট ও বিজনোরের মতো উত্তর প্রদেশের অন্য শহরগুলোতে পুলিশি বর্বরতার অভিযোগের ওপর।

এই এলাকাগুলোতে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয় কমপক্ষে আটজন। তাদের পরিবারের লোকের বলছে, পুলিশই তাদের গুলি করেছে। কিন্তু পুলিশ এ অভিযোগ অস্বীকার করে।

এসব বিবরণ শুনলে মনে হয়, যেন ঘটনার একটা ছক দাঁড়িয়ে গেছে। লোকজনকে আটক করা, তার পর রাতের বেলা মুসলিম-অধ্যুষিত এলাকায় গাড়ি ও বাড়িঘর ভাঙচুর-তছনছ করা।

কিন্তু রাজ্যের শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তা – যিনি আইন-শৃঙখলা রক্ষার দায়িত্বপ্রাপ্ত – তিনি এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন। পিভি রামাশাস্ত্রী বিবিসিকে বলেন, সরকারি সম্পত্তি ধ্বংসের জন্য যারা দায়ী তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে এবং ‘ডিজিটাল তথ্যপ্রমাণের’ভিত্তিতে তাদেরকে চিহ্নিত করা হচ্ছে।

পুলিশ কারো বাড়িঘরে ভাঙচুর চালিয়েছে এমন অভিযোগও অস্বীকার করলেন তিনি। যখন আমি তাকে কথিত ঘটনাগুলোর ভিডিও ফুটেজ দেখালাম, তখন তিনি বললেন, ‘কেউ কোথাও একটা ভিডিও পোস্ট করলেই কি হয়ে গেল? তা তো নয়। তাকে সেই লোকালয়টা চিহ্নিত করতে হবে, পটভূমি দিতে হবে। কোন একটা ভিডিওর ভিত্তিতে কোন সুনির্দিষ্ট জবাব দেয়া যায় না।’

উত্তর প্রদেশ রাজ্যে বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে যে ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে তাতে পুলিশের কোনোভাবে জড়িত থাকার কথাও অস্বীকার করলেন রামাশাস্ত্রী। বললেন, তদন্ত চলছে। কিন্তু সমাজকর্মী সুমাইয়া রানা বলছেন, পুলিশকে এর দায় নিতে হবে।

তিনি বলেন, ‘সহিংসতা দিয়ে কোনকিছুর সমাধান হয় না, কিন্তু এ কথা উভয় পক্ষের বেলাতেই প্রযোজ্য। সহিংসতায় জড়িতদের বিরুদ্ধে পুলিশের ব্যবস্থা নেয়া উচিত, কিন্তু বিক্ষোভকারীদের গুলি করাটাই কি একমাত্র উপায়?’

এসব হত্যার ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেছেন মানবাধিকার কর্মীরা।

রাজ্যের ক্ষমতাসীন বিজেপি বলছে, বিরোধীদলগুলো মুসলিম যুবকদের বিভ্রান্ত করার জন্যই বিক্ষোভ সহিংস হয়ে ওঠে।

বিজেপির রাজ্য প্রধান স্বতন্ত্র দেব সিং বিবিসিকে বলেন, ‘আমরা তিন বছর আগে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা বজায় রেখেছি। কিন্তু এবার রাজনীতির কারণেই সহিংসতা ঘটেছে। সমাজবাদী পার্টি এবং বহুজন সমাজ পার্টি সিএএ’র ব্যাপারে মানুষকে বিভ্রান্ত করেছে। তারা এসব বিক্ষোভের পরিকল্পনা করেছে এবং উস্কানি দিয়েছে।’

সমাজবাদী পার্টির নেতা এবং সাবেক মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তার সাফ কথা, ‘সরকারকে জবাব দিতে হবে যে কারা এই লোকদের গুলি করেছে। কেন পুলিশ কোনও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিল না?’

অখিলেশ যাদব বলেন, ‘অভিযোগ করা সহজ। এই বিক্ষোভে দেখা গেল রাজ্যে শান্তি বজায় রাখতে বিজেপি কীভাবে ব্যর্থ হয়েছে। তারা নাগরিকত্ব সংশোধন আইনকে ব্যবহার করছে অর্থনৈতিক মন্দা আর কর্মসংস্থানের অভাব থেকে অন্যদিকে দৃষ্টি সরিয়ে দেবার জন্য। তারা ধর্মের ভিত্তিতে রাজ্যকে বিভক্ত করতে চাইছে।”

তিনি আরো বলেন, ‘এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী আর তার হিন্দুত্ব এজেন্ডাই এ পরিস্থিতির জন্য দায়ী। পুলিশ যে আচরণ করেছে তা সবার জন্যই এক সতর্কবাণী। আসলে এটা আর রাজনীতির ব্যাপার নয়, এখানে মৌলিক মানবাধিকার লংঘিত হচ্ছে যা রাজ্য এবং দেশের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক।’

Other

আপনার ত লিখুন :

 
ভারপ্রাপ্ত-সম্পাদকঃ শাকিব বিপ্লব
© কপিরাইট বরিশালটাইমস ২০১২-২০১৮ | বরিশালটাইমস.কম
বরিশালটাইমস মিডিয়া লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান।
ইসরাফিল ভিলা (তৃতীয় তলা), ফলপট্টি রোড, বরিশাল ৮২০০।
ফোন: +৮৮০২৪৭৮৮৩০৫৪৫, মোবাইল: ০১৮৭৬৮৩৪৭৫৪
ই-মেইল: barishaltimes@gmail.com, bslhasib@gmail.com
© কপিরাইট বরিশালটাইমস ২০১২-২০১৮
টপ
  বরিশালসহ ৫ বিভাগে ভারী বৃষ্টিপাতের আভাস  চতুর্থ শ্রেণি সরকারী কর্মচারী সমিতির প্রতিষ্ঠাতা আব্দুল আজিজের মৃত্যুবার্ষিকী পালিত  মুক্তিযুদ্ধের দোহাই দিয়ে শোষণ করছে সরকার: রেজাউল করীম  বিএম কলেজ ছাত্রাবাসে শিক্ষার্থীদের ঝুঁকি নিয়ে বসবাস: পলেস্তারা খসে ৪ শিক্ষার্থী আহত  কাউখালীতে জাতীয় কন্যা দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা   কলাপাড়ায় গ্রামীণ কিশোরীদের সেলাই প্রশিক্ষণ  ভোলায় জেলেদের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ  সুন্দরবন থেকে জেলের বিচ্ছিন্ন মাথা উদ্ধার: চারপাশে বাঘের পায়ের ছাপ  গণমাধ্যমে ভিসা নীতি নিয়ে পিটার হাসের বক্তব্য : ১৯০ বিশিষ্ট নাগরিকের নিন্দা  গণমাধ্যমের স্বাধীনতার প্রতি সমর্থন অব্যাহত থাকবে: পিটার হাস