বরিশাল: গৌরনদী উপজেলার খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসিএলএসসি) মিনার কান্তি বৈদ্যর বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে দুই বছর মেয়াদী (২০১৫-১৬ সাল) দুস্থ মহিলা উন্নয়ন কর্মসূচির (ভিজিডি) আওতায় উপজেলার খাঞ্জাপুর ইউনিয়নে ৩৭৯ জন, বার্থী ইউনিয়নে ৩৫১ জন, চাঁদশী ইউনিয়নে ১৮১ জন, মাহিলাড়া ইউনিয়নে ২৪২ জন, নলচিড়া ইউনিয়নে ৩৩৩ জন, বাটাজোর ইউনিয়নে ৩০০ জন, শরিকল ইউনিয়নে ৩২৫ জন সুবিধাভোগী আছে।
প্রত্যেক ভিজিডি কার্ডের বিপরীতে প্রতি মাসে ৩০ কেজি করে ভিজিডির চাল বিতরণ করার কথা রয়েছে। উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের ২ হাজার ১১১টি ভিজিডি কার্ডের বিপরীতে ৬৩ মেট্রিক টন ৩৩০ কেজি ভিজিডির চাল দেওয়ার কথা রয়েছে। চাঁদশী ইউপি চেয়ারম্যান যুবলীগ নেতা সৈকত গুহ পিকলু তার ইউনিয়নে বরাদ্দকৃত ওই ভিজিডি কার্ডের চাল গতকাল রবিবার দুপুরে উত্তোলন করতে উপজেলা খাদ্য গুদামে যান।
এ বিষয়ে মাহিলাড়া ইউপি চেয়ারম্যান সৈকত গুহ পিকলু অভিযোগ করে বলেন, উপজেলা খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসিএলএসসি) মিনার বৈদ্য গুদামের লেবার সর্দার মো. আলমগীরসহ ৯ জন লেবারকে দিয়ে আগেই ভিজিডি’র ৩০ কেজি করে চাল বস্তাবন্দি করে রাখেন। আমি ২টি নসিমন নিয়ে ভিজিডির চাল উত্তোলন করতে রবিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে খাদ্য গুদামে যাই। ভিজিডির চাল নসিমনে তোলার আগে আমার সন্দেহ হলে গোডাউনের ২৫-৩০টি বস্তার চাল মেপে (ওজন দিয়ে) প্রতি বস্তায় ৩ কেজি করে চাল কম পেয়ে ইউএনও’কে বিষয়টি অবহিত করি। ইউএনও মো. মাহাবুব আলমের নির্দেশে ভারপ্রাপ্ত ইউএনও এসিল্যান্ড মো. আনিসুর রহমান উপজেলা খাদ্য গুদাম পরিদর্শন করে কয়েকটি বস্তা মেপে প্রতি বস্তায় ২/৩ কেজি করে চাল কম পান। তখন এসিল্যান্ড ঘাটতি চাল পূরণ করে প্রত্যেক বস্তায় ৩০ কেজি করে চাল বস্তাবন্দি করে বিতরণ করার নির্দেশ দেয়।
ইউপি চেয়ারম্যান পিকলু আরো অভিযোগ করেন, ওসিএলএসডি মিনার বৈদ্য গত ৬ মাস ধরে প্রতি (৩০ কেজি) বস্তায় ২/৩ কেজি করে চাল ওজনে কম দিয়ে আসছিল। প্রতিবারই গোডাউনের ৯ জন লেবার দিয়ে প্রতি বস্তায় ৩০ কেজি চালের স্থলে ২৭-২৮ কেজি করে চাল বস্তাবন্দি করে উপজেলার ৭ ইউনিয়নে সরবরাহ করার একাধিক অভিযোগ রয়েছে।
এদিকে এ অভিযোগ সম্পূর্ণ মিধ্যা ও ভিত্তিহীন দাবি করে উপজেলা খাদ্য গুদামের ওসিএলএসডি মিনার কান্তি বৈদ্য বলেন, লেবার সর্দারকে ঠিকমত ভিজিডির চাল মেপে দেওয়ার কথা বলে বরিশালে একটি মিটিংয়ে এসেছি। বস্তায় চাল ওজনে কম থাকার অভিযোগ সত্য হলে লেবার সর্দারেরর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা এসিল্যান্ড মোঃ আনিসুর রহমান বলেন, প্রতি বস্তায় ২/৩ কেজি করে চাল কম থাকার অভিযোগ পেয়ে উপজেলা খাদ্য গুদামে গিয়ে অভিযোগের সত্যতা পেয়েছি। ঘাটিতি চাল পূরণ করে প্রত্যেক বস্তায় ৩০ কেজি করে চাল বস্তাবন্দি করে বিতরণ করার নির্দেশ দিয়ে এসেছি। অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়টি সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হবে।
এ প্রসঙ্গে গৌরনদী মডেল থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মো. আফজাল হোসেন জানান, উপজেলা খাদ্য গুদামের ত্রুটিপূর্ণ মান্দাত্তা আমলের অ্যানালক পাল্লাটি থানায় সোপর্দ করেছেন ক্ষুব্ধ ইউপি চেয়ারম্যান সৈকত গুহ পিকলু ও স্থানীয় বিক্ষুব্ধ কয়েক ব্যক্তি।
খবর বিজ্ঞপ্তি, বরিশালের খবর