কোনো ব্যক্তিকে গ্রেফতার করতে হলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে নিজের পরিচয় দিতে হবে। এ ছাড়া গ্রেফতারের সময় গ্রেফতারকৃত ব্যক্তি অথবা উপস্থিত লোকজন দাবি করলে ওই কর্মকর্তাকে তাদের সামনে পরিচয়পত্রও দেখাতে হবে।
বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার ও রিমান্ড সংক্রান্ত ফৌজদারী কার্যবিধির ৫৪ ও ১৬৭ ধারা নিয়ে প্রকাশিত আপিলের রায়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে এমন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। রায়ে আইন প্রয়োগকারী বাহিনী ও বিচারককে গ্রেফতার দেখানো এবং রিমান্ড মঞ্জুরের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দিয়েছে আপিল বিভাগ।
এই রায়ের ৩৯৬ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) প্রকাশিত হয়েছে। এর আগে গত ২৪ মে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ এ সংক্রান্ত হাইকোর্টের রায় বহাল রাখেন। তবে রায় ঘোষণার সময় আপিল বিভাগ বলেছিলেন, রায়ে কিছু মোডিফিকেশন করা হবে।
সে অনুযায়ী হাইকোর্টের দেওয়া নির্দেশনাগুলোকে সুনির্দিষ্ট করে কতটুকু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দায়িত্ব ও কতটুকু বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্ব তা আলাদা করে বলে দেওয়া হয়েছে।
মামলার বিবরণীতে জানা যায়, ১৯৯৮ সালে ডিবি পুলিশ ঢাকার সিদ্ধেশ্বরী এলাকা থেকে ইনডিপেন্ডেন্ট ইউনির্ভাসিটির ছাত্র শামীম রেজা রুবেলকে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার করে। পরে পুলিশ হেফাজতে থাকা অবস্থায় রুবেল মারা যান।
পুলিশ হেফাজতে রুবেলের মৃত্যুর ঘটনায় কয়েকটি মানবাধিকার সংগঠনের দায়ের করা রিট মামলায় ২০০৩ সালের ৭ এপ্রিল হাইকোর্ট এক রায়ে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায় গ্রেফতার ও রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের প্রচলিত বিধান ৬ মাসের মধ্যে সংশোধন করতে সরকারকে নির্দেশ দেন। পাশাপাশি উক্ত ধারা সংশোধনের পূর্বে কয়েকদফা নির্দেশনা মেনে চলার জন্য সরকারকে বলা হয়।
এরপর হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে ২০০৪ সালে আপিল দায়ের করে তৎকালীন চারদলীয় জোট সরকার। তখন আপিল বিভাগ লিভ পিটিশন মঞ্জুর করলেও হাইকোর্টের নির্দেশনাসূমহ স্থগিত করেননি।
২০১০ সালের ১১ আগস্ট মামলাটি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় আসে। তখন আদালত হাইকোর্টের নির্দেশনাসূমহ বাস্তবায়নে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, সরকারকে তা জানাতে বলা হয়েছিল। কিন্তু দীর্ঘ ৬ বছর পেরিয়ে গেলেও জনগুরুত্বপূর্ণ মামলার ওই নির্দেশনাসূমহ বাস্তবায়নে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা আদালতকে জানাতে পারেনি সরকার।
জাতীয় খবর