বরিশাল নগরীর বিসিক টেক্সটাইল এলাকায় বিসিসি ও এলাকাবাসীর সংঘর্ষের ঘটনায় কাউনিয়া থানা পুলিশ বাদি হয়ে ১৫০০ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছে। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ওই থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আশরাফুজ্জামান মামলাটি দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পরপরই থানা পুলিশ ওই এলাকায় হানা দিয়ে অন্তত ৯ জনকে গ্রেফতার করেছে। যাদের মধ্যে অনেকে রয়েছে নিরপরাধ, ছিলেন না সংঘর্ষের সময় এলাকায়। অথচ তাদের গ্রেফতার করায় রীতিমত এলাকাবাসীর মধ্যে ভীতি সৃষ্টি হয়েছে।
তাছাড়া এই মামলাটিকে পুজি হিসেবে নিয়ে আটক বাণিজ্যে মেতে উঠেছে কাউনিয়া থানা পুলিশ এমন একটি অভিযোগ এলাকাবাসীর। পুলিশের দায়ের করা ওই মামলায় নামধারী ২৬ জন রয়েছে। এছাড়া বাকি ১৩৭৪ জন অজ্ঞাত আসামি। স্থানীয় একাধিক বাসিন্দা শুক্রবার গণমাধ্যমকর্মীদের জানিয়েছেন, পুলিশের ভয়ে এলাকার যুব ও মাঝ বয়সী পুরুষ পালিয়ে বেড়াচ্ছে।
এমতাবস্থায় তারাও উদ্বেগ উৎকন্ঠার মধ্যে সময় পাড় করছেন। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছে, পুলিশ ঘটনার দিন রাতে অটো চালক মনির হোসেন এবং বেকারী শ্রমিক শুভ হাওলাদারকে তুলে নিয়ে যায়। এই দুই ব্যক্তি নিরপরাধ দাবি করে স্বজনরা বলছে, আকষ্মিক পুলিশ এলাকায় হানা দিয়ে তাদের নিয়ে যায়।
পরবর্তীতে পুলিশের সাথে যোগাযোগ করা হলে উৎকোচ দাবি করে। মুলত সেই টাকা না দিতেই পারায়ই তাদের পুলিশ আক্রান্ত মামলায় জড়িয়ে দেয়া হয়। শুভ’র স্ত্রী সাথি আক্তার জানিয়েছেন, সন্তানদের দুধ কেনার জন্য নুতন বাজার গেলে শশ্মানঘাট পুল এলাকা থেকে তার স্বামীকে নিয়ে যায় পুলিশ। অথচ তার স্বামী সংঘর্ষের সময় এলাকায় ছিলেন না। একই অভিযোগ রয়েছে অনেকের। যদিও এসব অভিযোগ সমুলে অস্বীকার করে সংশ্লিষ্ট কাউনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সেলিম রেজা বলছেন, কোন নিরপরাধ ব্যক্তিদের হয়রানির উদ্দেশ্য পুলিশের নেই। ঘটনার সাথে জড়িত এমন ব্যক্তিদের খুজে গ্রেফতারের আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে। উদাহরণ সরুপ দেলোয়ার, ওহেদুল, শাহ-আলম, আব্দুল খালেক ও শহিদুল ইসলাম নামে ৫ জনকে আটক করা হয়। পরে রাতে অভিযান চালিয়ে আরও আটক ৪ জনও এই ঘটনায় জড়িত বলে দাবি ওসির।
এদিকে গতকাল শুক্রবার ঘটনা সংশি¬ষ্ট এলাকা ঘুরে দেখা গেছে দোকানিরা যার যার দোকান স্বেচ্ছায় সড়িয়ে নিচ্ছেন। সাহেব আলী নামের এক দোকানি জানান, বিসিসি আকষ্মিক উচ্ছেদ অভিযানের সিদ্ধান্ত নিলেও লিখিত বা মৌখিকভাবে তাদের অবহিত করেনি। এজন্য তারা স্থাপনা সরিয়ে নিতে পারেননি। অবশ্য এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বিসিসির একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলছেন, এ যাবৎকাল পর্যন্ত ৩ বার স্থাপনা সরিয়ে নিতে নোটিশ দেয়া হয়েছিল। কিন্তু তাতে সাড়া না দিয়ে জমি দখল নিয়ে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছিল।
যে কারণে সর্বশেষ বৃহস্পতিবার পুলিশ নিয়ে উচ্ছেদ অভিযানে নামে বিসিসি। উল্লেখ্য ওই অভিযানে এলাকাবাসীর বাধা দিলে সেখানে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এতে বিসিসির ৪ কর্মকর্তা আহত হলে পুলিশ প্রতিরোধে পাল্টা পদক্ষেপ রাখে। ফলে সেখানে শুরু হয় পাল্টাপাল্টি সংঘর্ষ। এলাকাবাসীর ছোড়া ইট-পাটকেলে ৮ পুলিশসহ অন্তত ২০ জন আহত হন।’’
শিরোনামখবর বিজ্ঞপ্তি, টাইমস স্পেশাল, বরিশালের খবর